মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হওয়ার পর শ্রীলঙ্কার শরণার্থীরা ভারতের তামিলনাড়ুর ধনুষ্কড়িতে আসতে শুরু করেছেন। ভয়াবহ সমুদ্রযাত্রার কথা তাদের মুখে। ২২ বছরের মেরি ক্ল্যারিনের কোলে চার মাসের সন্তান। স্বামী গজেন্দ্রনের সঙ্গে মার্চের শেষ সপ্তাহে শ্রীলঙ্কা থেকে এই পরিবারটি রওনা দেয় ভারতের দিকে। রামেশ্বরম হয়ে ধনুষ্কড়িতে পৌঁছানোর পরিকল্পনা করেন তারা। সেই মতো এক মৎস্যজীবীর সঙ্গে কথাও বলেন। -ডি ডব্লিউ
মৎস্যজীবী জানান, ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে এই পুরো রাস্তা তিনি নিয়ে যাবেন ওই পরিবারকে উত্তাল সমুদ্রের মধ্য দিয়ে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কথা রাখেননি ওই মৎস্যজীবী। ধনুষ্কড়ির কোস্ট গার্ডের অফিসে বসে মেরি জানিয়েছেন, প্রথমেই ওই মৎস্যজীবী তাদের কাছ থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা নিয়ে নেন। এরপর মাঝ সমুদ্রে একটি ছোট্ট বালুর দ্বীপের উপর তাদের নামিয়ে দিয়ে ওই মৎস্যজীবী জানান, অন্য একটি নৌকা এসে তাদের ভারতে নিয়ে যাবে। মৎস্যজীবী ফিরে যান শ্রীলঙ্কার দিকে। কিন্তু ভারত থেকে আর কোনো নৌকা আসে না। খাবার নেই, জল নেই, দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে শিশুর জন্য রাখা সামান্য দুধ। জনমানবশূন্য ওই বালিয়ারির ওপর বসে তাদের মনে হয়েছিল, না খেতে পেয়ে সেখানেই মরে যেতে হবে।
এদিকে, ভারত-শ্রীলঙ্কা সমুদ্র-সীমান্তে তিনজন আটকে আছেন বলে খবর পায় ভারতের কোস্ট গার্ড। মৎস্যজীবীদের কাছ থেকেই সম্ভবত খবর মিলেছিল। এরপর দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ভারতের কোস্টগার্ড। ওই পরিবারটিকে তুলে নিয়ে আসা হয় ধনুষ্কড়িতে। জাফনা যুদ্ধ, এলটিটিইর সময় এই ধনুষ্কড়িতে প্রচুর শ্রীলঙ্কার শরণার্থী থেকেছেন। কিন্তু এখন আর সেখানে খুব বেশি শ্রীলঙ্কার শরণার্থী নেই। মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে ফের সেখানে শ্রীলঙ্কার শরণার্থী আসতে শুরু করেছেন। ভারতীয় কোস্ট গার্ড জানিয়েছে, মার্চের শেষ সপ্তাহে অন্তত ১৬ জন শ্রীলঙ্কার নাগরিক ধনুষ্কড়িতে পৌঁছেছেন। সকলেই মাছ ধরার নৌকা অথবা ফাইবারের তৈরি ভেলায় চড়ে ভারতে এসেছেন। আরও বহু মানুষ আসার চেষ্টা করছেন বলেও তারা জানিয়েছেন।
শরণার্থীদের বক্তব্য, গত কয়েক মাসে শ্রীলঙ্কায় জিনিসপত্রের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে জরুরি অবস্থা। জিনিসের দাম প্রতিদিন বাড়ছে। ফলে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের সামনে দাঁড়িয়েছে মধ্যবিত্ত। তাদের ধারণা পরিস্থিতি আরো সংকটজনক হবে। সে কারণেই তারা ভারতে আসতে শুরু করেছেন। তবে কোস্টগার্ডের বক্তব্য, শরণার্থীদের জায়গা দেওয়ার বিষয়ে সরকারি কোনো সিদ্ধান্ত তাদের হাতে এসে পৌঁছায়নি। ফলে শরণার্থীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে কোস্টগার্ডের হেফাজতেই রাখা হচ্ছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেছেন, শ্রীলঙ্কা থেকে বড় সংখ্যায় শরণার্থী ভারতে ঢুকতে শুরু করবেন বলে তারা মনে করছেন। তবে তাদের নিয়ে কী করা হবে, এখনও পর্যন্ত সে বিষয়ে সরকারি স্তরে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে ভারত শ্রীলঙ্কা পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখছে। ধনুষ্কড়ির স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, এখন পর্যন্ত যারা এসেছেন, তাদের অধিকাংশই জাফনার মানুষ। তবে দেশের অন্যপ্রান্ত থেকেও মানুষ পালানোর চেষ্টা করছেন বলেও শরণার্থীরা জানিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।