পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে দেশটির ৩শ’ ৪২ সদস্যের জাতীয় পরিষদে বিরোধীদের আনা-অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর গতকাল বিতর্ক হয়েছে। পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি অনাস্থা প্রস্তাব এড়াতে নিম্নকক্ষের অধিবেশন আগামী ৩ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিত করার পর প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন। ভাষণে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান অঙ্গীকার করেছেন যে ‘যে পরিস্থিতিই আসুক’ তিনি পদত্যাগ করবেন না এবং জাতীয় পরিষদে তার বিরুদ্ধে যৌথ বিরোধী দলের দায়ের করা অনাস্থা প্রস্তাবের মুখোমুখি হবেন। গতকাল জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি বলেন, আগামী রোববার অনাস্থা প্রস্তাবে ভোট হবে... সেদিনই সিদ্ধান্ত হবে দেশ কোন দিকে যাবে। ‘আমি পদত্যাগ করব না এবং শেষ বল পর্যন্ত লড়াই করব’ তিনি যোগ করেন।
এ পরিস্থিতি এশিয়ার দ্বিতীয়-দ্রæততম মুদ্রাস্ফীতির পাকিস্তানের ৭৫ বছরের ইতিহাসে প্রথম পূর্ণ মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ইমরান খানের সম্ভাবনাকে বিপণœ করে তুলেছে। এ সুযোগে যুক্তরাষ্ট্রের মদদপুষ্ট একটি ঐক্যবদ্ধ ইমরানবিরোধী শিবির আগামী কয়েক দিনের মধ্যে অনাস্থা ভোটে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চাইছে। ইমরানের বিরুদ্ধে এ অনাস্থা-প্রস্তাবের নাটকটি শুরু হয় চার মাস আগে, যখন সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়ার লেফটেন্যান্ট জেনারেল নাদিম আঞ্জুমকে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা তত্ত¡াবধানকারী ইন্টার-সার্ভিস ইন্টেলিজেন্স বা আইএসআই-এর নেতৃত্বে নিয়োগ দেয়া নিয়ে ইমরানের সাথে সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
যদিও পাকিস্তানের আইনে বলা হয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রী সামরিক বাহিনী, বিরোধী ও দলের সুপারিশে আইএসআই প্রধানকে নিয়োগ করবেন। কিন্তু দেশটির সামরিক বাহিনীর পররাষ্ট্রনীতি এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর প্রশাসনের প্রতিটি পর্যায়ে জেনারেলদের সিদ্ধান্ত অনুসরণ করা হয়ে থাকে। বাজওয়া এবং অন্যান্য জেনারেলরা নিয়মিত শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী এবং নীতিনির্ধারকদের সাথে ব্যক্তিগত বৈঠক করে থাকেন। কিন্তু ইমরান তাদের পাশ কাটিয়ে ইমরান তখন তার নিয়োগ বিলম্বিত করেন এবং সেই পদের জন্য জেনারেল ফয়েজ হামিদের সমর্থনে সোচ্চার হন, যাকে ইমরানের মিত্র হিসেবে দেখা হয়। পাকিস্তানে তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ এ সুযোগে ইমরান খানের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং ২০১৭ সালে দুর্নীতির অভিযোগে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য এবং এক বছর পরে নির্বাচন দেয়ার জন্য হামিদকে অভিযুক্ত করেন। ইমরানের সাথে সেনাবাহিনীর সম্পর্কের আরো অবনতি ঘটে যখন তিনি একটি জনসভায় সেনাপ্রধানের সাথে একান্ত আলোচনার কথা উল্লেখ করে সেনাবাহিনীর নিষেধাজ্ঞাও ভাঙেন, যা সেনাবাহিনীর রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ না করার দাবিকে খÐন করে। করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রাক্তন প্রধান শায়েস্তা তাবাসসুম বলেছেন, ‘রাজনৈতিক ফোরামে প্রকাশ্যে সেনাবাহিনীর নাম নেয়া এই সরকার করা সবচেয়ে বড় ভুল।’
ইমরানের সাথে সেনাবাহিনী এবং যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের আরো অবনতি হতে শুরু করে, যখন ইমরান যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর সমালোচনা করে তিক্ততা তৈরি করেন এবং আরো ভারসাম্যমূলক পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে একসময় মার্কিন অস্ত্রের শীর্ষ খদ্দের পাকিস্তান অস্ত্রের জন্য চীনের উপর ক্রমবর্ধমান নির্ভরশীল হতে শুরু করে। এছাড়াও, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অভিষেকের মাত্র কয়েক দিন পরে যখন পাকিস্তানের একটি আদালত ২০০২ সালের ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের ব্যুরো প্রধান ড্যানিয়েল পার্লকে শিরñেদে দোষী সাব্যস্ত চার আসামীকে মুক্তি দেয়ার নির্দেশ দেয়, যা হোয়াইট হাউসে খানের বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দেয়, যেখানে বাইডেন বারাক ওবামার সাথে বসে ক্যামরাতে নেভি সিলদের গোপনে পাকিস্তানে অনুপ্রবেশ করে ওসামা বিন লাদেনকে করা পর্যবেক্ষণ করেছিলেন।
আফগানিস্তানে তালেবানরা ক্ষমতা গ্রহণ করার সাথে সাথে ইরমানের সাথে বাইডেন প্রশাসনের সম্পর্ক আরো খারাপ হয়ে যায়, যখন ইমরান বলেন যে, ‘তালেবানরা দাসত্বের শিকল ভেঙে দিয়েছে।’ তবে, গত বছর বাইডেন সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের প্রস্তাব দিয়েছিলেন এবং ইমরানকে ডিসেম্বরে তার গণতন্ত্র সম্মেলনে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কিন্তু পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বাইডেনের নিমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেন, যা পাকিস্তানে ২৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যের প্রকল্পে অর্থায়নকারী চীনের কাছে প্রশংসিত হয়। ইমরান রাশিয়ার সাথেও সম্পর্ক জোরদার করেছেন। রাশিয়া-ইউক্রেন সঙ্ঘাত শুরুর কয়েক ঘণ্টা পর রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সাথে দুই দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে প্রথম শীর্ষ-স্তরের বৈঠক করেছেন তিনি, যা যুক্তরাষ্ট্র মোটেই ভালোভাবে নেয়নি।
ইতোমধ্যে, ইমরান খানের বিরুদ্ধে প্রণীত অনাস্থা প্রস্তাবের মধ্যে বুধবার পিটিআই নেতা ফয়সাল ভাওদা দাবি করেছেন যে, ‘দেশ বিক্রি করতে’ অস্বীকার করার কারণে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ইসলামাবাদে ২৭ মার্চ পিটিআই-এর পাওয়ার শো’তে যে চিঠিটি প্রদর্শন করেছিলেন, ভাওদা সেটি নিয়ে দাবি করেন যে এতে ইমরানের সরকার পতনের জন্য একটি বিদেশী ষড়যন্ত্রের প্রমাণ রয়েছে। পাকিস্তানের এআরওয়াই নিউজের একটি অনুষ্ঠান ‘অফ দ্য রেকর্ড’-এ ভাওদা বলেন, ‘অনাস্থা ভোটের পাশাপাশি, তার (প্রধানমন্ত্রী ইমরানের) জীবনের জন্যও হুমকি রয়েছে। সেখানে হত্যার উল্লেখ করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘ইমরান খান একজন সাহসী মানুষ। সে কখনোই দেশ বিক্রি করবে না। সে তার জাতিকে বিক্রি করবে না। সে ডলার নেবে না। সে সামরিক ঘাঁটিগুলো ব্যবহার করতে দেবে না এবং কাউকে তাদের মর্জি মতো কাজ করতে দেবে না। আর এখন পর্যন্ত এর মূল্য হচ্ছে প্রশাসন, যা সরকার এবং তার জীবন।’
এদিকে, শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা বুধবার প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন এবং রাজনৈতিক দলগুলির জন্য ‘সম্মত বিকল্পগুলো’ এবং বর্তমান রাজনৈতিক সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সরকার ও বিরোধীদের জন্য একটি ‘মুখরক্ষা চুক্তি’ নিয়ে আলোচনা করেছেন। পিএম হাউস সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে অংশ নেওয়া বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা আগামী সাধারণ নির্বাচনের জন্য আলোচনা করেছেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ইমরানের অবশিষ্ট মেয়াদ নিয়েও আলোচনা হয়েছে এবং সরকারের নির্বাচনী সংস্কার এবং অন্তর্র্বতী সরকারের মেয়াদ নিয়ে কথা বলা হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, সম্ভাব্য মুখরক্ষা চুক্তি অনুযায়ী জাতীয় পরিষদের পাশাপাশি চারটি প্রাদেশিক অ্যাসেম্বলিতে সাধারণ নির্বাচন ঘোষণা করা হবে। বৈঠকে আরো বলা হয়েছে, বিরোধী দল এতে একমত না হওয়া পর্যন্ত কোনো পরিকল্পনা চ‚ড়ান্ত করা হবে না এবং সরকার ও বিরোধী উভয় পক্ষই আলোচনার বিষয়ে মীমাংসা করার পরে একটি সম্পূর্ণ প্যাকেজ সংসদে উপস্থাপন করা হবে। যদি চুক্তি ব্যর্থ হয়, তাহলে অনাস্থা প্রক্রিয়া এগিয়ে যাবে। তবে, যদি ইমরান ক্ষমতায় বহাল থাকেন, তার শীর্ষ জেনারেলদের মেকাবেলা করার উচ্চ-স্তরের চ্যালেঞ্জ মাসের পর মাস পাকিস্তানকে একটি অস্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যেতে পারে, যা বলে দেবে যে, বিশ্বের পঞ্চম-সবচেয়ে জনবহুল দেশটি আরও বেশি চীন ও রাশিয়ার দিকে ঘেঁষবে, নাকি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দিকে ঝুঁকবে।
গতকাল জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান অঙ্গীকার করেছেন, ‘যে পরিস্থিতিই আসুক’ তিনি পদত্যাগ করবেন না এবং জাতীয় পরিষদে তার বিরুদ্ধে যৌথ বিরোধী দলের দায়ের করা অনাস্থা প্রস্তাবের মুখোমুখি হবেন। গতকাল জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি বলেন, আগামী রোববার অনাস্থা প্রস্তাবে ভোট হবে... সেদিনই সিদ্ধান্ত হবে দেশ কোন দিকে যাবে।
‘আমি পদত্যাগ করব না এবং শেষ বল পর্যন্ত লড়াই করব’ তিনি যোগ করেন।
প্রধানমন্ত্রী অনাস্থা পদক্ষেপকে তার সরকার পতনের জন্য ‘বিদেশী-সমর্থিত ষড়যন্ত্র’ হিসাবে অভিহিত করে বলেন যে, সংসদের নিম্নকক্ষে তার বিরুদ্ধে ভোট দেবেন এমন আইন প্রণেতাদের জাতি ক্ষমা করবে না।
‘মানুষের সেই লোকদের [আইন প্রণেতাদের] দেখা উচিত যারা রোববার ‘তাদের বিবেক বিক্রি’ করবে’। প্রধানমন্ত্রী সংসদ সদস্যদের সতর্ক করার সময় বলেন যে, তারা তার বিরুদ্ধে ভোট দিলে আগামী প্রজন্ম তাদের কখনই ভুলবে না।
ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান তার ইতিহাসে একটি ‘সংজ্ঞায়িত মুহূর্তে’ পৌঁছেছে যেখানে তার কাছে কেবল দুটি বিকল্প রয়েছে, তিনি যোগ করেছেন যে, জাতিকে এখন কোন পথ বেছে নিতে হবে। ‘তবে তার আগে, আমি জাতিকে বলতে চাই কেন আমি রাজনীতিতে যোগ দিয়েছি’। তিনি বলেন, তিনি তার ক্যারিয়ার পছন্দের কারণগুলো উল্লেখ করতে চানন।
‘আমি ইতোমধ্যেই খ্যাতি উপভোগ করেছি এবং আল্লাহর প্রতি আমার বিশ্বাসের কারণে অর্থ ছিল এবং আমি এমন একটি প্রজন্মের অংশ ছিলাম যে, আমার পিতামাতার বিপরীতে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেছিলাম’। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা-মা আমাকে কৃতজ্ঞ হতে বলতেন, কারণ আমি একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেছি এবং ব্রিটিশদের শাসনের সাক্ষী হতে হয়নি’।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতারা রিয়াসাত-ই-মদিনার মডেলের ভিত্তিতে একটি কল্যাণ রাষ্ট্রের কল্পনা করেছিলেন, কিন্তু দেশটি সেই মডেলের কাছাকাছি কোথাও ছিল না।
‘...আমি রাজনীতিতে এসেছি, কারণ আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে, আল্লামা ইকবাল এবং কায়েদে আজম যেদিকে চেয়েছিলেন পাকিস্তান সেদিকে যেতে পারে না। পাকিস্তানের আসল কারণ ছিল রিয়াসত-ই-মদিনার মতো একটি ইসলামিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা’, তিনি বলে।ন
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানের আদর্শের সাথে সামঞ্জস্য রেখে তিনি রাজনীতি শুরু করেছিলেন এবং তার ইশতেহারে তিনটি জিনিস অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন - ন্যায়বিচার, মানবতা এবং আত্মনির্ভরতা। তিনি বলেন, যৌবনকালে তিনি দেখেছেন দেশ সাফল্য ও উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
‘দক্ষিণ কোরিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং মালয়েশিয়ার লোকেরা এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়ার জন্য পাকিস্তানে আসত’। কিন্তু রাজনৈতিক নেতাদের দুর্নীতির কারণে তা কমতে শুরু করেছে।
‘[দেশকে সেই অধঃপতন থেকে বের করে আনতে], আমি চাই এদেশের শিশুরা নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর পদাঙ্ক অনুসরণ করুক’। অগ্রসর হয়ে, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন যে, পাকিস্তানের অংশগ্রহণ এবং ত্যাগ সত্তে¡ও এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ করেছে, ইসলামাবাদ কখনই প্রশংসা পায়নি।
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন যে, যখন দেশের উত্তরাঞ্চলে মার্কিন ড্রোন দ্বারা বোমাবর্ষণ করা হয়েছিল, তখন তিনিই ‘একমাত্র রাজনীতিবিদ’ ছিলেন যিনি এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন।
‘প্রবীণ রাজনীতিবিদদের মধ্যে কেউই এর বিরুদ্ধে তাদের আওয়াজ তোলেনি কারণ তারা ভয় পেয়েছিলেন যে, তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রোধকে আকৃষ্ট করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের’ কারণে পাকিস্তানিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই, প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, তিনি যখন ক্ষমতায় এসেছিলেন, তিনি একটি স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতির জন্য আকাক্সক্ষা করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘...আমাদের নীতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, -ইউরোপ, এমনকি ভারতবিরোধী ছিল না [...] এটি ভারতবিরোধী হয়ে ওঠে, যখন নয়াদিল্লি কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করে এবং ২০১৯ সালের আগস্টে আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করে’।
তিনি ‘মুখ ফসকে’ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছিলেন এবং তারপরে এগিয়ে গিয়ে বলেন যে, ‘একটি বিদেশী দেশ’ একটি ‘হুমকি মেমো’ পাঠিয়েছে যা পাকিস্তানি জাতির বিরুদ্ধে ছিল। ‘...চিঠিতে বলা হয়েছে যে, অনাস্থা প্রস্তাবটি দাখিল করার আগেই পেশ করা হয়েছিল, যার অর্থ বিরোধী দল তাদের সাথে যোগাযোগ করছে’, প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, মেমো তার বিরুদ্ধে ছিল, সরকারের বিরুদ্ধে নয়। ‘...এতে বলা হয়েছে যে, অনাস্থা প্রস্তাব পাস হলে পাকিস্তানকে ক্ষমা করা হবে, যদি না হয়, তার পরিণতি হবে’।
প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, এটি একটি ‘সরকারি চিঠি’ যা পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে জানানো হয়েছিল, যিনি বৈঠকের সময় নোট নিচ্ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, রাষ্ট্রদূতকে বলা হয়েছিল যে, ইমরান খান ক্ষমতায় থাকলে পাকিস্তান ‘সমস্যার মুখোমুখি হবে।
প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, ‘এটা কি আমাদের অবস্থান? আমরা ২২ কোটির একটি শক্তিশালী জাতি’। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, চিঠিতে কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি এবং শুধুমাত্র তাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চেয়েছিলেন।
‘...আমাদের রাষ্ট্রদূত বিদেশী কর্মকর্তাকে বলেন যে, প্রধানমন্ত্রী [দেশের শীর্ষস্থানীয় কর্তাদের] সাথে আলোচনার পর রাশিয়া সফর করেছেন। কিন্তু বিদেশী কর্মকর্তা বলেছেন যে না, এটি কেবল ইমরান খানের সিদ্ধান্ত ছিল’, প্রধানমন্ত্রী প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন যে, বিদেশী কর্মকর্তা জানতেন যে তার পরে যারা ক্ষমতায় আসবে তাদের বাইরের শক্তির কাছ থেকে আদেশ নিতে কোনো সমস্যা হবে না।
‘তবে সবচেয়ে বিরক্তিকর বিষয় হল, আমাদের লোকেরা, যারা এখানে বসে আছে, তারা বিদেশী শক্তির সাথে যোগাযোগ করছে’, তিনি বলেন, তিনি ‘তিনজন কট্টর’ - পিএমএল-এন সভাপতি শাহবাজ শরীফ, পিপিপি কো-চেয়ারম্যান আসিফ আলী জারদারি ও পিডিএম প্রধান মাওলানা ফজলুর রহমান।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, পিএমএল-এন সুপ্রিমো নওয়াজ শরিফ পাকিস্তানের আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। বিরোধীদের নিন্দা করে তিনি বলেন, জাতীয় জবাবদিহিতা ব্যুরো (এনএবি) এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশী দেশগুলো কি তাদের দেশে এ ধরনের দুর্নীতিবাজদের ক্ষমতায় চাইবে? তারা এ ধরনের দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদদের মেনে নিতে প্রস্তুত, কিন্তু আমি তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নই’। সূত্র : ট্রিবিউন, ডন, টাইম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।