Inqilab Logo

শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সফলতার ধারা বজায় রাখলো আইপিডিসি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ মার্চ, ২০২২, ৬:৪০ পিএম

গত ৩০ মার্চ ২০২২-এ অনলাইনে আয়োজিত হয়ে গেলো আইপিডিসি ফাইন্যান্স-এর ২০২১ সালের পারফরম্যান্স নিয়ে বার্ষিক ইনভেস্টরস মিট। এই আয়োজনে আইপিডিসি-র ২০২১-এর আর্থিক অবস্থার মূলচিত্র, এই সময়ে নেওয়া বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ এবং আগামী দিনগুলোর জন্য নির্ধারিত কৌশলগত পরিকল্পনা আলোচনা করা হয়। অসাধারণ পারফরম্যান্সের মাধ্যমে সফলতার ধারা বজায় রাখার পাশাপাশি রেকর্ড পরিমাণ আয় উপার্জনের বিষয়টি অনলাইনে আয়োজিত এই সেশনে আলোচনায় উঠে আসে। সেশনটি আইপিডিসি-র অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজ থেকে সরাসরি দেখেন বিভিন্ন সংবাদকর্মী, ইন্ডাস্ট্রি এক্সপার্ট, স্টেকহোল্ডার এবং অসংখ্য মানুষ।

আইপিডিসি ফাইন্যান্সের ম্যানেজিং ডিরেক্টর জনাব মমিনুল ইসলাম সেশনটি সঞ্চালনা করেন। এ সময়ে তিনি ২০২১ এ কোম্পানির ব্যবসায়িক ও আর্থিক অবস্থার চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি ২০২২ সালের লক্ষ্য সম্পর্কেও জানান। আয়োজনে জনাব মমিনুল ইসলাম বছরজুড়ে আইপিডিসির বিভিন্ন প্রোডাক্টের পোর্টফোলিও নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি কোম্পানির আয় ও মুনাফা, সমাজসেবামূলক নানান উদ্যোগ ও বিভিন্ন অর্জন সম্পর্কে আলোচনা করেন।

২০২১ সালে আইপিডিসি-র লোন পোর্টফোলিও বেড়েছে আগের বছরের চেয়ে ২১.৯% বেশি। এই প্রবৃদ্ধির একটা বড়ো কারণ এসএমই এবং এমার্জিং কর্পোরেট লোন পোর্টফোলিওর প্রবৃদ্ধি। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে আইপিডিসি-র লোন পোর্টফোলিওতে ৭৯% ই ছিল কর্পোরেট লোন যেখানে এসএমই ও এমার্জিং কর্পোরেট লোন এবং রিটেইল লোন ছিল মাত্র ১১% ও ১০%। ২০২১-এ এসে লোন পোর্টফোলিওর ৩১% এসেছে এসএমই এবং এমার্জিং কর্পোরেট লোন থেকে। রিটেইল লোনও বেড়ে লোন পোর্টফোলিওর ২২%-এ দাঁড়িয়েছে। দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নে এই দুই খাতের গুরুত্ব বিবেচনা করে কৌশলগত পরিকল্পনা গ্রহণ এবং প্রাধান্য প্রদানের ফলেই এই প্রবৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে বলে মমিনুল ইসলাম মন্তব্য করেন।

২০২১-এ আইপিডিসি-র কাস্টমার ডিপোজিট বেড়েছে ১৭.৩%। মমিনুল ইসলাম জানান, ডিপোজিটের প্রবৃদ্ধির কারণে তহবিল উৎসের জন্য ব্যাংকের উপর নির্ভরশীলতা এখন অনেক কমে গিয়েছে। ২০১৮ সালেও আইপিডিসি-র মোট তহবিলের ২৯% ছিল ব্যাংক নির্ভর। ২০২১ এ এসে সেই পরিমাণ দাঁড়িয়েছে মাত্র ৫% এ। আর কাস্টমার ডিপোজিট থেকে এসেছে ৬৮% তহবিল। এই পরিবর্তন আইপিডিসি-র টেকসই উন্নয়নের নির্দেশক।

বিগত বছরে কোম্পানির আয় বেড়েছে ২১.৭%। যথেষ্ট পরিমাণে প্রভিশন রেখেও এ বছর কোম্পানি নিট মুনাফা করেছে ৮৮.১ কোটি টাকা যা গত বছরের তুলনায় ২৪.৯% বেশি। যেকোনো সময় দায় পরিশোধের জন্য আইপিডিসি গত বছর ১৩৪ কোটি টাকা তারল্য সঞ্চিতি (কন্টিঞ্জেন্সি লিক্যুইডিটি রিজার্ভ) নিশ্চিত করেছে। এছাড়া এসময় মমিনুল ইসলাম রিটার্ন অন ইক্যুইটি, আর্নিং পার শেয়ার, রিটার্ন অন অ্যাসেট এবং কস্ট টু ইনকাম প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ অনুপাতেও আইপিডিসি ভালো অবস্থানে আছে বলে জানান। নারী উদ্যোক্তা লোনে অবিশ্বাস্য ৯৮% প্রবৃদ্ধির কথা তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন।

২০২১ জুড়ে আইপিডিসি বিভিন্ন সমাজসেবামূলক উদ্যোগ গ্রহণ করে। ‘মানবতা’ ডিপোজিট-এর মাধ্যমে গ্রাহকের ডিপোজিটের মুনাফার কিছু অংশের সাথে আইপিডিসি নিজে কিছু অর্থ যোগ করে করোনায় বিপর্যস্ত দরিদ্র শ্রেণির মানুষের মাঝে খাদ্য সহায়তা প্রদান করে। জাগো ফাউন্ডেশন-এর সাথে সমঝোতার ভিত্তিতে ৫০ জন দরিদ্র শিশুর লেখাপড়ার খরচ বহন করে আইপিডিসি। এমপি এবং জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার প্রতিষ্ঠিত ‘নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশন’-এ জিম নির্মাণে সহায়তা প্রদান করা হয়। পরিবার পরিচালনার জন্য একজন বীরাঙ্গনাকে সহায়তা দিচ্ছে আইপিডিসি; উক্ত নারীর একটি প্রতিবন্ধী সন্তান রয়েছে। এছাড়া গত বছর আইপিডিসি কাস্টমারদের জন্য কোভিডের চিকিৎসায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন হলে লোন সেবা ‘আরোগ্য’ প্রচলন করেছিল।

২০২১ বছরটিতে গুরুত্বপূর্ণ কিছু পুরস্কার ও স্বীকৃতি জিতেছে আইপিডিসি। ইন্সপায়ারিং উইমেন অ্যাওয়ার্ড ২০২১-এ ‘মোস্ট প্রোগ্রেসিভ অর্গানাইজেশন অ্যাওয়ার্ড’ পায় আইপিডিসি। প্রতিষ্ঠানটির রিটেইলার ফাইন্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম ‘ডানা’ পেয়েছে বাংলাদেশ ফিনটেক অ্যাওয়ার্ড ২০২১, সাপ্লাইন চেইন ফাইন্যান্স প্ল্যাটফর্ম ‘অর্জন’-এর জন্য বাংলাদেশ ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড ২০২১। এ বছর কমওয়ার্ড এবং বাংলাদেশ ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড-এও কয়েকটি স্বীকৃতি পেয়েছে আইপিডিসি। এছাড়া বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে ২০২১ এ আইপিডিসি বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস থেকে লোক সংগীতের চর্চা ও বিকাশের জন্য মেধাসম্পদ সম্মাননা অর্জন করেছে।

২০২২ এর জন্য মমিনুল ইসলাম কয়েকটি লক্ষ্যের কথা বলেন। ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ককে আরও শক্তিশালী করে দ্রুততর সেবা নিশ্চিত করা, সম্পদের সেরা ব্যবহার নিশ্চিত করে সেবার মান উন্নীতকরণ, প্রসেস রিইঞ্জিনিয়ারিং এবং ডিজিটাইজেশনের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ, পাইলট প্রকল্প হিসেবে চলা আইপিডিসি ইজি এবং ডানা এই দুই সেবার কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করা এর মধ্যে অনতম।

অনুষ্ঠানে আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেড-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর মমিনুল ইসলাম বলেন, “স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে এসে আমরা এই দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পাশে থাকার যে প্রতিজ্ঞা তা পুনর্ব্যক্ত করছি। পূর্বের মতই নারীর ক্ষমতায়ন, তরুণদের উৎসাহ প্রদান এবং সুবিধাবঞ্চিতদের পাশে থাকাকে আমরা আগামী দিনগুলোতে প্রাধান্য দিব। একই সাথে মেগাসিটির বাইরের মানুষের গৃহনির্মাণের স্বপ্নপূরণে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতিও অব্যাহত থাকছে। আমি বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের সর্বাঙ্গীন সুখ ও সাফল্য কামনা করছি। আমরা আছি আপনাদের পাশেই সবসময়।”



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ