মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আধ ঘণ্টায় উপার্জন ৭ লাখ ৩৮ হাজার ডলার! বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। শুনতে খানিকটা ম্যাজিকের মতো লাগে। এমনটা আবার হয় নাকি! আর যদি হয়েও থাকে, তবে সন্দেহ হয়, নিশ্চিতই এর নেপথ্যে আছে কোনও কৌশল। হয়তো লটারির দৌলতে কেউ পেয়েছেন অর্থ। বা এমন কোনও পদ্ধতির দ্বারস্থ হয়েছেন, যা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ থাকে। মনে হয়, সেই সব পদ্ধতি বৈধ বা আইনস্বীকৃত তো? অথবা হতে পারে যে, উপার্জনকারী বড় কোনও ব্যবসায়ী, যার কাছে এই অঙ্ক উপার্জন তেমন কোনও ব্যাপারই নয়। এমনই নানা প্রশ্ন ঘোরাফেরা করতে থাকে। তবে আমরা যে ব্যক্তির কথা বলছি, তিনি এসবের ছায়াও মাড়াননি। তিনি নিজের মেধা ও পরিশ্রমের জোরেই আয় করেছেন। যা বিস্মিত করেছে বিশ্ববাসীকে।
ওই ব্যক্তির নাম ক্যাম র্যাক্কাম। ক্যালিফোর্নিয়ার বাসিন্দ ক্যামের বয়স এখন ৪২ বছর। না, ব্যবসায়ী জগতে তিনি মোটেও সুপরিচিত নন। কেননা তিনি ব্যবসা করেন না। অথচ তিনিই আধ ঘণ্টায় আয় করে ফেলেছেন ৬ কোটি টাকা। আসলে ব্যবসা নয়, বরং শিল্পজগতে তার পরিচিতি আছে। তার চিত্রকর্ম যথেষ্ট পরিচিত। মহামারী যখন আঘাত হানল, তখন বেশ বেকায়দায় পড়েছিলেন তিনি। চিত্রকর্মের প্রদর্শনী বা ছবি বিক্রির ব্যাপারটাই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। অন্য অনেক শিল্পীর মতো তার অভিঘাত নেমে এসেছিল ক্যামের উপরেও। বিকল্প উপায়ের সন্ধান করতে থাকেন তিনি। প্রত্যাশিত ভাবেই সারা পৃথিবী যেভাবে ডিজিটাল দুনিয়ার দিকে ঝুঁকেছে, সেদিকে সরে যান এই শিল্পীও। আর তাতেই হয় বিপুল আয়।
তবে না, এক্ষেত্রে খুব সহজেই যে তার হাতে অর্থ এসেছে, তা কিন্তু নয়। এর নেপথ্যে আর একটি বিষয় আছে, যা এই মুহূর্তে গোটা পৃথিবীরই নজর কেড়েছে। তা হল, এনএফটি বা নন ফাঞ্জিবল টোকেনস। শিল্পের দুনিয়ায় এই এনএফটি যথেষ্ট সমাদর লাভ করেছে। কী এই জিনিসটি? এক কথায় আমরা বলতে পারি, এটি একরকমের সম্পত্তি, তবে তা ডিজিটাল। অর্থাৎ স্থাবর নয়। আদতে একরকমের ডেটা ইউনিট, যা গচ্ছিত থাকে ব্লকচেনে। এই এনএফটি নিয়ে ব্যবসায়িক লেনদেনও চলতে পারে। যেভাবে সম্পত্তির কেনাবেচা চলে, অনেকটা সেরকমই। ক্রিপ্টোকারেন্সি বা বিটকয়েনের সঙ্গে অনেকেই এর মিল খুঁজে পান, তবে কিছু ফারাকও আছে। ক্রিপ্টোকারেন্সির মূল্যমান নির্দিষ্ট হয়, যা এনএফটি-র জন্য প্রযোজ্য নয়। অর্থাৎ আলাদা আলাদা শিল্পকর্মের ক্ষেত্রে এনএফটি-র মূল্য বদলে যেতে পারে। অনেকটা নিলামের আদল পাওয়া যায় এনএফটি-র মূল্যমান নির্ধারণের ক্ষেত্রে।
এদিকে এনএফটি-র সঙ্গে এসে যায় কপিরাইট প্রসঙ্গও। একজন শিল্পী যদি তার শিল্পকর্মকে এনএফটি-র মাধ্যমে বিক্রি করেন, তবে সেই শিল্পের কপিরাইট সরাসরি ক্রেতার কাছে যায় না। বলা যেতে পারে, এনএফটি একরকমের মালিকানা নিশ্চিতই দেয়, কিন্তু ক্রেতাকে বস্তুটির একমাত্র সত্ত্বাধিকারী করে তোলে না। ফলত, একজন শিল্পী তার শিল্পকর্মের একাধিক এনএফটি তৈরি করতে পারেন, এবং তা বিক্রি করতে পারেন। প্রচলিত পদ্ধতিতে যেভাবে একটি শিল্পকর্ম একটি ক্রেতার কাছেই বিক্রি করা যায়, তার থেকে এই পদ্ধতি বেশ আলাদা। ডিজিটাল আর্টের ক্ষেত্রেই নতুন এই দরজা খুলে গিয়েছে। এনএফটি-র গ্রহণযোগ্যতা যত বেড়েছে, তত শিল্পীরা মহামারীর ধাক্কা কাটিয়ে সুদিনের মুখ দেখেছেন। ইতিমধ্যে একাধিক সংস্থা এই পদ্ধতিতের মাধ্যমে শিল্পীদের যথেষ্ট পরিমাণে অর্থ দিতে পেরেছে।
ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। মহামারীর অভিঘাতেই চিরাচরিত পদ্ধতি ছেড়ে তিনি ঝুঁকেছিলেন ডিজিটাল আর্টে। যুক্ত হয়েছিলেন এক সংস্থার সঙ্গে। আর তারপরই এক ডিজিটাল অকশনে মাত্র আধ ঘণ্টায় ৫ কোটি টাকা উপার্জন করে ফেলেন এই শিল্পী। আন্তর্জাতিক মহলে এই খবর শোরগোল ফেলেছে। শিল্পী নিজেও ভাবেননি, যে এই অঙ্কের অর্থ এত কম সময়ে উপার্জন করা যায়। তবে সময় বদলেছে। আর সেই সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে পারলে অর্থলাভ যে অসম্ভব কিছু নয়, তা এই ঘটনায় বেশ স্পষ্ট। সূত্র: সিএনবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।