গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
সবুজবাগের দক্ষিণগাঁওয়ের বটতলা এলাকায় স্ত্রী তানিয়া আফরোজ ও দুই সন্তান নিয়ে থাকতেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট মো. ময়নুল ইসলাম। কিছুদিন আগে মুগদা মেডিকেল থেকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে বদলি হন তিনি। সেই বদলির কথা জানতেন তাদের বাসায় এসি লাগিয়ে দেয়া মেকানিক রিফাত আলম বাপ্পী (৩১)।স্বামীর অনুপস্থিতির সুযোগে তানিয়ার বাসায় আরও দুইজনকে নিয়ে ডাকাতির পরিকল্পনা করেন বাপ্পী। গত শনিবার বাসায় লুটপাটের সময় বাধা দেয়া ও চিৎকার করায় তানিয়া আফরোজকে (২৬) খুন করেন তারা। এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতাররা হলেন- রিফাত আলম বাপ্পী, তার দুই সহযোগী হৃদয় ও রুবেল। তাদের কাছ থেকে লুট করা এক জোড়া কানের দুল ও দুটি স্বর্ণের চেইন উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পল্টন মডেল থানায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মতিঝিল বিভাগের ডিসি মো. আ. আহাদ এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, শনিবার বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটের দিকে বাপ্পী এসি সার্ভিসিং করার কথা বলে ময়নুলের বাসায় যান। বাপ্পী এক বছর আগে তাদের বাসায় এসি লাগিয়ে দেন। নিচে কেচিগেটে নক করলে তানিয়া নিচে নেমে আসেন। তখন স্বামী ময়নুলের সঙ্গে তানিয়ার কথা হয়। প্রথমে ময়নুল তার অনুপস্থিতিতে বাসায় প্রবেশে নিষেধ করলেও বাপ্পীর জোড়াজুড়িতে কাজ করতে বলেন। প্রথমে বাসায় ঢুকে বাপ্পী ও হৃদয় আধঘণ্টার মতো এসির কাজ করেন। এর কিছুক্ষণ পর রুবেল তাদের বাসায় প্রবেশ করেন। এসময় রুবেলের পরিচয় জানতে চান তানিয়া। রুবেল তাদের সহযোগী বলে জানান বাপ্পী। তখন ১০ মাসের ছেলে তানভীরুলকে নিয়ে রান্নার কাজ করতে চলে যান।
তিনি আরো বলেন, কিছুক্ষণ পর তানিয়া রুমে ঢুকে আলমারি ও অন্যান্য জিনিসপত্র তছনছ করা দেখে চিৎকার শুরু করেন। এসময় রুবেল ও হৃদয় তাকে বালিশচাপা দেন। বাপ্পীর ব্যাগে থাকা চাপাতি দিয়ে তানিয়ার মাথায় একাধিকবার আঘাত করেন তারা। এরপর বাচ্চাদের মুখে স্কচটেপ পেচিয়ে বেঁধে রেখে মোবাইল ও স্বর্ণালংকার লুট করে পালিয়ে যান তিনজন।
আসামিদের গ্রেফতার প্রসঙ্গে আ. আহাদ বলেন, বাপ্পীকে তার নিজ বাড়ি ঝালকাঠির নলসিটি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর রামপুরা থেকে হৃদয় ও রুবেলকে গ্রেফতার করা হয়। বাপ্পীর পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। হৃদয় ও রুবেলেরও রিমান্ড চাওয়া হবে।
দস্যুতার উদ্দেশেই তারা সেখানে গিয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, জিনিসপত্র লুট করাই তাদের উদ্দেশ্য ছিল। তানিয়া বাধা দিলে ও চিৎকার করায় খুন করেন তারা। বাপ্পী জানতেন তার স্বামী ময়নুলের বদলি হয়েছে। তিনি বাসায় নেই। বাপ্পী আগেও এসি ঠিক করতে গিয়ে বিভিন্ন বাসায় চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে বলে স্বীকার করেছেন।
অন্যদিকে গ্রেফতারকৃত এসি মেরামতের টেকনিশিয়ান বাপ্পিকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আফনান সুমী’র আদালত আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গতকাল আসামি বাপ্পিকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা সবুজবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ আমিনুল বাশার। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক এ আদেশ দেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।