Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বেসরকারিখাতের উন্নয়ন এবং বাণিজ্য সম্প্রসারণ বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি : রুশনারা আলী

বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ বিষয়ক বাণিজ্য দূতের সাথে ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দের সাক্ষাৎ ঢাকা চেম্বারে অনুষ্ঠিত

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ মার্চ, ২০২২, ৫:১৪ পিএম | আপডেট : ৫:১৫ পিএম, ২৯ মার্চ, ২০২২

বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ বিষয়ক বাণিজ্য দূত রুশনারা আলী, এমপি-এর সাথে দেশের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের মধ্যকার এক মতবিনিময় সভা অদ্য ২৯ মার্চ, ২০২২ তারিখে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)-এর গুলশান সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশে নিযুক্ত বৃটেনের হাইকমিশনার মান্যবর রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন, এপেক্স গ্রæপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, এসবিকে টেক ভেঞ্চার-এর প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোনিয়া বশির কবির, বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি মিরান আলী এবং ইউনাইটেড গ্রæপের গ্রæপ চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মইনউদ্দিন হাসান রশিদ যোগদান করেন।

অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ২০২১ সালে দুদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৪.১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং বাংলাদেশে বৃটেনের বিনিয়োগ প্রায় ২.৫৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তিনি জানান, বৃটেন বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য এবং আশা প্রকাশ করেন, সামনের দিনগুলোতে রপ্তানি এ ধারা আরো বৃদ্ধি পাবে। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বৃটেনের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে জাহাজ নির্মাণ, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, পাদুকা, হালকা-প্রকৌশল, মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়ন প্রভৃতি খাতে বিনিয়োগের আহŸান জানান। ডিসিসিআই সভাপতি যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশী পণ্য শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার আগামী ২০২৯ সালের পরও বর্ধিতকরণের প্রস্তাব করেন। এছাড়াও বৃটেনে রপ্তানির ক্ষেত্রে রুল অব অরিজিন সুবিধাকে আরো সহজীকরণ ও বর্ধিতকরণেরও প্রস্তাব করেন, সেই সাথে কৃষি এবং খাদ্যপণ্য রপ্তানি সম্প্রসারণে বিদ্যমান ‘টেকানিক্যাল ব্যারিয়ার্স টু ট্রেড (টিবিটি)’ হ্রাসের আহŸান জানান।

বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ বিষয়ক বাণিজ্য দূত রুশনারা আলী, এমপি বলেন, অর্থনৈতিক ও সামাজিক খাতে বাংলাদেশের বেশ সাফল্য রয়েছে, তবে এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে সরকারি ও বেসরকারিখাতের সমন্বয় খুবই জরুরী। বেসরকারিখাতের উন্নয়ন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং বাণিজ্য সম্প্রসারণ কে বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। দুদেশের বাণিজ্য আরো সম্প্রসারণে যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের পার্টনারশীপ সুদৃঢ়করণের উপর তিনি জোরারোপ করেন, সেই সাথে বাণিজ্য সম্প্রসারণে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা নিরসনে সক্ষম হলে স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে বলে মত প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন দেশটির দারিদ্র বিমোচনে কতটা সহায়ক ভূমিকা পালন করবে, সেটা নিরূপনে সকলকে সচেষ্ট থাকতে হবে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত বৃটেনের হাইকমিশনার মান্যবর রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন বলেন, বেসরকারিখাত বাংলাদেশের অর্থনীতিকে গতিশীল করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। তিনি জানান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সেবা ও আর্থিক খাতে বৃটেনের দক্ষতা রয়েছে, তবে শিল্পখাতের পণ্যের নতুন নতুন ডিজাইনে বাংলাদেশীদের দক্ষতা উন্নয়নে বৃটেন বাংলাদেশের সাথে একযোগে কাজ করতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন, চট্টগ্রামের মিরসরাইতে স্থাপিত অর্থনৈতিক অঞ্চলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে এবং আশা প্রকাশ করেন, বৃটিশ উদ্যোক্তারা সেখানে বিনিয়োগে আগ্রহী হবে।

এপেক্স গ্রæপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, বাংলাদেশের পোষাক খাত, ঔষধ শিল্পসহ অন্যান্য শিল্পে বেশ দক্ষতা থাকলেও ডিজাইনিং-এর ক্ষেত্রে বেশ পিছিয়ে আছে। তাছাড়া ঔষধ শিল্পে বাংলাদেশ এখন অনেক ভাল করছে এবং এখাতে বৃটেনের ব্যাবসায়ীদের এগিয়ে আসার আহŸান জানান।

এসবিকে টেক ভেঞ্চার-এর প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোনিয়া বশির কবির বাংলাদেশে ডিজিটাল ব্যাংকিং ইকো-সিস্টেম তৈরিতে বৃটিশ বিনিয়োগের আহŸান জানান।

বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি মিরান আলী বলেন, তৈরি পোষাক খাতে বাংলাদেশে এখন অনেক এগিয়েছে এবং কমপ্লায়েন্সের দিক দিয়ে বাংলাদেশের কারখানাগুলো অনেক সক্ষমতা অর্জন করেছে। তবে ভাল মানের ডিজাইনিং ও সিনথেটিক সুতা উৎপাদনে বৃটিশ বিনিয়োগ আকর্ষনে তিনি একযোগে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

ইউনাইটেড গ্রæপের গ্রæপ চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মইনউদ্দিন হাসান রশিদ বলেন, স্বাস্থ্য খাতে ভাল মানের নার্স তৈরিতে আমরা যথেষ্ট পিছিয়ে আছি, এক্ষেত্রে বৃটেন সহযোগিতা করতে পারে বলে তিনি মনে করেন। তাছাড়া শিক্ষা খাতেও বৃটেনের অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং বাংলাদেশের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে।

ঢাকা চেম্বারের উর্ধ্বতন সহ-সভাপতি আরমান হক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। ডিসিসিআই সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ