মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইউক্রেনে অভিযান শুরুর পর থেকে রাশিয়ার উপর দফায় দফায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে পশ্চিমা দেশগুলো। সঙ্গে যোগ দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া, জাপান। পাল্টা পদক্ষেপ নিচ্ছে রাশিয়াও।
রাশিয়ার উপর কারা কত নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে তার হালনাগাদ পরিসংখ্যান রাখছে বৈশ্বিক নিরাপত্তা ঝুঁকি ও নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কাজ করা ওয়েবসাইট কাস্টেলাম ডট এআই। তাদের হিসাবে ইউক্রেনে হামলার পর থেকে ক্রেমলিনের উপর সবচেয়ে বেশি ৪৭৯টি নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাজ্য। এই তালিকায় রুশ ব্যাংক, ড্রোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে আব্রাহোমোভিচের মতো ধনকুবের কিংবা পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লেভরভের সৎ কন্যাও রয়েছেন।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় রাশিয়ার ৬১৭ কোটি ডলারের সম্পদ এরই মধ্যে জব্দ করেছে সুইজারল্যান্ড, যা আরো বাড়বে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার। ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়ার উপর সুইজারল্যান্ডের নিষেধাজ্ঞার সংখ্যা ৭৭৪টি।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো একযোগে রাশিয়ার বিভিন্ন খাত, প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিবর্গের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। কয়েক দফায় সংখ্যাটি দাঁড়িয়েছে ৭০৫-এ, যা আরো বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা চলছে। এছাড়া ফ্রান্সের অর্থ বিভাগ নিজেরাও আলাদাভাবে রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞার তালিকা করেছে, যার সংখ্যা ৬৯৬।
ক্যানাডার নিষেধাজ্ঞার তালিকায় আছেন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বরাও। চলতি মাসের শুরুর দিকে রাশিয়ার গণমাধ্যম নির্বাহীসহ দশ জনের একটি তালিকা ঘোষণা করে দেশটি। তাদের মধ্যে রয়েছেন রাশিয়ান টেলিভিশন নিউজ নেটওয়ার্ক আরটির প্রধান সম্পাদক মার্গারিটা সিমোনিয়ানও। সব মিলিয়ে ইউক্রেনে রুশ হামলার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫২৬ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ক্যানাডা।
অস্ট্রেলিয়ায় সম্পদ আছে রাশিয়ার এমন ধনকুবেরদের উপর নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে দেশটি। গত সপ্তাহে এই তালিকায় যুক্ত হয়েছেন কুইন্সল্যান্ডে অ্যালুমিনা পরিশোধনাগারের বিনিয়োগকারী ওলেগ দেরিপাস্কা। ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত রাশিয়ার উপর ৪৭৯টি নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটি।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে সবচেয়ে সরব যুক্তরাষ্ট্র। তবে মিত্র দেশগুলোর তুলনায় এখনও তাদের নিষেধাজ্ঞার তালিকাটি ছোট। কাস্টেলাম এর হিসাবে হামলার পর থেকে এখন পর্যন্ত ক্রেমলিনের উপর ২৯৩ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ওয়াশিংটন। তবে ২৪ মার্চ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, রাশিয়ার পার্লামেন্ট ডুমা ও এর ৩২৮ সদস্য এবং ৪৮টি প্রতিরক্ষা সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার প্রস্তুতি নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে শুরু থেকেই সরব জাপান। রাশিয়ার রাজনীতিবিদ, তাদের স্বজনদের উপর নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে দেশটি। তার মধ্যে আছেন ডুমার ১১ সদস্য, ব্যাংকার, শিল্পপতিও। ২২ ফেব্রুয়ারির পর এখন পর্যন্ত মোট ৮৮টি নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে তারা।
রাশিয়া এখন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হওয়া দেশ। মোট ৭ হাজার ৩৮৬টি নিষেধাজ্ঞার বোঝা বিশ্বের অন্যতম এই পরাশক্তির কাঁধে। এর মধ্যে ৪ হাজার ৩৬২টি দেয়া হয়েছে ইউক্রেনে হামলা শুরুর পরে। এর আগে নিষেধাজ্ঞা পাওয়া দেশের তালিকায় শীর্ষে ছিল ইরান (৩৬১৬)। এরপর রয়েছে সিরিয়া (২৬০৮), উত্তর কোরিয়া (২০৭৭), ভেনিজুয়েলা (৬৫১), মিয়ানমার (৫১০) ও কিউবা (২০৮)।
২২ ফেব্রুয়ারির পর থেকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরোপিত চার হাজার ৩৬২টি নিষেধাজ্ঞার মধ্যে বেশিরভাগই দেয়া হয়েছে ব্যক্তির উপরে। ৩ হাজার ৯১৫টি নিষেধাজ্ঞাই এ সংক্রান্ত। আর বাকি ৪৩৭টি দেয়া হয়েছে প্রতিষ্ঠানের উপরে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন, প্রতিরক্ষামন্ত্রী অস্টিনসহ বিভিন্ন কর্মকর্তার উপর নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে ক্রেমলিন। অন্যদিকে ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোসহ ৩১৩ জনের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এছাড়াও মার্চের শুরুতে রাশিয়া ‘অবন্ধুসুলভ’ ৪৮ দেশের তালিকা প্রকাশ করে। বুধবার পুতিন ঘোষণা দিয়েছেন দেশগুলোকে রাশিয়ার গ্যাসের মূল্য শোধ করতে হবে রুবলে। সূত্র: ডয়চে ভেলে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।