Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রুমে ঢুকে ছাত্রলীগের অতর্কিত হামলায় আহত শিক্ষার্থী

ঢাবির বিজয় একাত্তর হল

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ মার্চ, ২০২২, ১২:০০ এএম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিজয় একাত্তর হলে রুমে ঢুকে অতর্কিতভাবে এক শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আখলাকুজ্জামান অনিক এবং তাকে সাহায্য করতে আসা আরেক শিক্ষার্থী রাজীব ইসলাম। আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হলে তার মাথায় আটটি সেলাই দেয়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের সফিউল্লাহ সুমনের (পিটার) নেতৃত্বে কমপক্ষে দশ থেকে বারেজন নেতাকর্মী অতর্কিত পদ্মা ব্লকের ২০১০ নম্বর রুমে ঢুকে পড়ে। ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা অনিককে (ভুক্তভোগী) টেনে তুলে তারা (হামলাকারীরা) তাকে উপর্যুপরি মারধর করতে থাকে। পরে তার চিৎকার শুনে রুমমেট ও পাশের রুমের ছাত্ররা এসে তাকে উদ্ধার করে। এসময় তাকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হয় রাজীব নামের এক শিক্ষার্থী।

হামলায় অংশগ্রহণকারী ছাত্রলীগের কর্মীদের মধ্যে ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা কয়েকজনকে শনাক্ত করতে পেরেছেন। তারা হলেন, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের মাসফিউর রহমান, অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের সফিউল্লাহ সুমন (পিটার), ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সাব্বির আল হাসান, সাংবাদিকতা বিভাগের নাইমুর রশিদ নাঈম। তারা তিনজনই ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং হল ছাত্রলীগের সভাপতি সজিবুর রহমান সজীবের অনুসারী। সজীব ছাত্রলীগের ঢাবি শাখা সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের অনুসারী।

জানা যায়, গত কয়েকদিন আগে অনিকের সাথে মাসফিউরের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কথা-কাটাকাটি হয়। অনিক মাসফিউরকে সেখানে একটি মেয়ের সাথে আপত্তিকর অবস্থায় পেয়ে তাকে র‌্যাগ দেয়। তারই প্রতিশোধ নিতে এই হামলা চালানো হয়।

কিন্তু ভুক্তভোগী অনিক সেই ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, তাদের অভিযোগ আমি নাকি তাদের সাথে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুর্ব্যবহার করেছি। এই জন্য তারা আমার উপর হামলা চালায়। অথচ যেদিনের কথা তারা বলেছে সেদিন আমার পরীক্ষা ছিল। আমি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যাই-ই নি।

অভিযুক্ত নাইমুর রশিদ নাইম বলেন, উনি (অনিক) মনে হয় সেকেন্ড ইয়ারের কোন ছেলেরে মারছিলো। পরে ওরা গিয়ে ওনাকে মারছে। আমরা দ্রুত গিয়ে ওদের থামাইছি। এখন মনে হয় সিনিয়ররা এটা সমাধান করছে। আমরা মারি নাই, সেকেন্ড ইয়ারের ছেলেরা মারছে। বাকি অভিযুক্তদের ফোন দেয়া হলে তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে ওই হল ছাত্রলীগ সভাপতি সজিবুর রহমান সজীব বলেন, যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে হল প্রশাসন তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিবে। এক্ষেত্রে আমাদের পূর্ণ সহযোগিতা থাকবে।
অভিযুক্তরা আপনার গ্রুপের অনুসারী কিনা জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি পাশ কাটিয়ে বলেন, হলে যারা থাকে তারা তো কারো না কারো রাজনীতি করে। এটা তো আর আমাদের নির্দেশনা থাকে না।

এ বিষয়ে বিজয় একাত্তর হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. আব্দুল বাছিরে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. এ কে এম গোলাম রব্বানীর কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগী খালেকুজ্জামান অনিক।

অভিযোগের ব্যাপারে প্রফেসর বাছির জানান, এ বিষয়ে আমি শুনেছি। ইতিমধ্যে দায়িত্বরত শিক্ষককে সেখানে পাঠিয়েছি। তিনি কথা বলেছেন। আমরা আগামীকাল দশটায় এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিব।###



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ছাত্রলীগ

২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ