গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
অবিলম্বে নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করলে সরকারের পরিণতি ‘ভয়াবহ’ হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার বিকেলে নয়াপল্টনে দলের স্বাধীনতার দিবসের র্যালি পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এই হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, এই র্যালির মাধ্যমে আমরা একটা বাণী পৌঁছিয়ে দিতে চাই শেখ হাসিনার কানে। সেটা হলো- যে, তোমার দিন শেষ। এখনো সময় আছে আমরা হাসিনার সরকারকে বলতে চাই- পদত্যাগ করে দ্রুত নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। সেইসাথে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন দিয়ে জনগণের প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। অন্যথায় আপনারা পালাবারও পথ খুঁজে পাবেন না। সকল স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদের যে পরিণতি হয়েছে আপনাদেরও সেই একই পরিণতি হবে। এই লক্ষ্যে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাই।
এর আগে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ট্রাকের ওপর অস্থায়ী মঞ্চে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়। পরে সেখান থেকে একটি বিশাল র্যালি শুরু হয়ে বিজয়নগর ও তোপখানা রোড হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়। র্যালিতে রাজধানীর বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড থেকে নেতা-কর্মীরা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মিছিল নিয়ে অংশ নেয়। তাদের হাতে ছিলো জাতীয় পতাকার পাশাপাশি দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড। তারা খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে স্লোগান দেন। ব্যান্ড দলের সুরের মূর্ছনা, ঘোড়া গাড়ি, মুক্তিযুদ্ধের সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বের নানা দৃশ্য প্রদর্শন, লাল-সবুজ-হলুদ ক্যাপ পরা নেতা-কর্মীদের এই স্বাধীনতার র্যালি দেখতে ফুটপাতে দুই পাশে মানুষজনও ছিলো ব্যাপক। তারা করতালি দিয়ে র্যালিকে শুভেচ্ছা জানাতে দেখা যায়। র্যালি শুরুর আগে থেকেই দৈনিক বাংলা মোড় থেকে ফকিরাপুল হয়ে কাকারাইলের নাইটেঙ্গল রেঁস্তোরা মোড় পর্যন্ত তিল পরিমাণ ঠাঁই ছিলো না, হাজার হাজার নেতা-কর্মীর উপস্থিতিতে র্যালি জনসমাবেশে রুপ নেয়। র্যালির অগ্রভাগ যখন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তখনও শেষ ভাগ কাকরাইলের নাইটেঙ্গল মোড় অতিক্রম করেনি। বিএনপির র্যালি উপলক্ষে দুপুর ১টা থেকে নয়াপল্টনের সড়কে যানচালাচল বন্ধ করে দেয় পুলিশ। ফলে মতিঝিল, কাকরাইল, শাহজাহানপুর, শান্তিনগরসহ বিভিন্ন সড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। চারপাশের এলাকায় ব্যাপক পুলিশসহ সাদা পোষাকের সদস্যরা মোতায়েন ছিলো।
স্বাধীনতা দিবসের দিন জিয়াউর রহমানসহ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে সারাদেশের মানুষ এই ৫০ বছর পরে আক্ষেপ করছে যে, আমরা ৫০ বছর হলো স্বাধীন হলাম। কিন্তু কী পেয়েছি আমরা? আজকে আমাদের কথা বলার ও জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করবার স্বাধীনতা নেই। মানুষের গণতান্ত্রিক কোনো অধিকার নেই। আজকে অর্থনীতি ধবংসের পথে চলে গেছে, চাল-ডাল-তেল-লবন সবকিছুর দাম এমনভাবে বেড়েছে যে, সাধারণ মানুষ তা কিনতে পারে না। আজকে জ্বালানি তেলের দাম হু হু করে বাড়ছে। আবার নাকি গ্যাসের দাম নতুন করে বাড়াবে?
দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক রাখা হয়েছে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বাসিত করা হয়েছে। ৩৫ লাখ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে রুখে দাঁড়াতে হবে। সকল অন্যায়কে পরাজিত করে গণতন্ত্র ফিরে পেতে হলে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে এবং তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনতে হলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সমস্ত জাতি ও রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে এই ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকারকে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা সমাবেশ থেকে অনতিবিলম্বে এই সরকারের পদত্যাগ চাই, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটা নির্বাচন চাই। যে নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার হবে না। দেশের জনগণ নিজের হাতে ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে। তাই আপনাদেরকে আন্দোলন সংগ্রামের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণের আহবান জানাচ্ছি।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির আয়োজিত এই র্যালিতে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, উত্তরের আহবায়ক আমান উল্লাহ আমান ও দক্ষিণের আহবায়ক আবদুস সালামও বক্তব্য রাখেন।
পরে র্যালিতে পায়ে হেটে অংশ নেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মির্জা আব্বাস, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, এজেডএম জাহিদ হোসেন, জহিরুল হক শাহাজাদা মিয়া, রুহুল কবির রিজভী, মাহবুব উদ্দিন খোকন, শামা ওবায়েদ, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামারুজ্জামান রতন, এবিএম মোশাররফ হোসেন, ডা. রফিকুল ইসলাম, মীর সরফত আলী সপু, মো: মুনির হোসেন, শিরিন সুলতানা, আমিরুল ইসলাম আলীম, শামীমুর রহমান শামীম, ফিরোজ উজ্জামান মামুন মোল্লা, রফিক সিকদার, রাজিব আহসান, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির আমিনুল হক, হাবিবুর রশিদ হাবিব, তানভীর আহমেদ রবিন, মুক্তিযোদ্ধা দলের ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাদেক আহমেদ খান, যুবদলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, গোলাম সারোয়ার, আনু মো: শামীম, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, সুলতানা আহমেদ, হেলেন জেরিন খান, কৃষকদলের হাসান জাফির তুহিন, শহিদুল ইসলাম বাবুল, তাঁতীদলের আবুল কালাম আজাদ, ঢাকা জেলার খন্দকার আবু আশফাক, মৎস্যজীবী দলের রফিকুল ইসলাম মাহতাব, ওলামা দলের শাহ নেছারুল হক, নজরুল ইসলাম তালুকদার, ছাত্রদলের ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমুখ নেতারা অংশ নেন। এছাড়া
ঢাকা-১৪ আসনের বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ও দারুসসালাম থানা বিএনপির সদ্য সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এসএ সিদ্দিক সাজুর তত্ত্বাবধানে ৭, ৮,৯, ১০, ১১, ১২, ১৩ ও ৯৩ নং ওয়ার্ড বিএনপির নবনির্বাচিত আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দ ও ঢাকা -১৪ আসনের বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা স্বাধীনতা র্যালিকে অংশগ্রহণ করেন। তাদের মধ্যে উত্তর বিএনপির হুমায়ুন কবির রওশন, উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাইদুল ইসলাম সাইদুল, রাজীব আহমেদ, মিরপুর থানা বিএনপির হাজী দেলোয়ার হোসেন দুলু, শহিদুর রহমান এনা, দারুসসালাম থানার আরিফ মৃধা, মো. বাবুল মিয়া, মো. লিটন ভূঁইয়া, মো. মোস্তফা বেপারী, উত্তর যুবদলের গাজী জহিরুল ইসলাম সবুজ, আইয়ুব আলী, পশ্চিম ছাত্রদলের আশরাফুল হোসেন মামুন, আমিনুর রহমান শান্ত, দারুসসালাম থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের মো. ইকবাল হোসেন রিপন, মিজানুর রহমান মিজান, মাহবুবুর রহমান, মিরপুর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম রুস্তম আলী, কেএম ইয়াহিয়া সামী, ওয়ার্ড বিএনপির কামরুল ইসলাম শ্যামল, ফয়সাল আহম্মেদ, মো. জয়নাল আবেদীন, মো. আবু রাহিদ রাহাদ, আবু সাঈদ দিপু, মো. শফিকুর রহমান মামুন, মো. ইকবাল হোসেন স্বপন, মো. সেলিম ইকবাল, মো. শাহেন শাহ শাহীন, আবু বক্কর সিদ্দীক মাকসুদ, হাজী রমজান হোসেন রঞ্জু, মো. আবুল বাঁশার ভূঁইয়া, মো. আরিফুর রহমান, মো. শাকিল, শাহরিয়ার দিল খায়ের শিপু, মো. মফিজুর রহমান মফিজ, মো. হাবিবুর রহমান হাবিব, মো. দিদারুল ইসলাম, এহসানুল হক আপেল প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।