রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
কুমিল্লা উত্তর সংবাদদাতা
কুমিল্লার তিতাস উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং জিয়ারকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনির হোসেন সরকার ও তার শ্যালক মহিউদ্দিন হত্যাকা-ের ঘটনায় মামলা হয়েছে। নিহত মনিরের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার বাদী হয়ে গত মঙ্গলবার গভীর রাতে দাউদকান্দি মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে জুলহাস, মোহাম্মদ আলী, হাসান, ইয়াছিন, আবু সাইদ, আল আমিন, শাকিল, বাবুল, রাসেল, নূর মোহাম্মদ, সুমন, সাইফুল, রুবেল মিয়াসহ আরো ৭/৮ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। এজাহারভুক্ত আসামি বাবুলকে ডিবি পুলিশ গ্রেফতার করেছে। আসামিদের একজন বাদে ১২ জনের বাড়ি দাউদকান্দির বিভিন্ন গ্রামে। শাকিল নামের আসামীর বাড়ি তিতাস উপজেলায়। এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় কুমিল্লা পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি সাংবাদিকরে বলেন, আমাদের একাধিক বাহিনী মাঠে কাজ করছেন। খুব সহসাই হত্যাকা-ের আসল রহস্য জানতে পারবেন। ঘটনার পরদিন গত বুধবার মামলাটি ডিবিতে (জেলা গোয়েন্দা শাখা) হস্তান্তর করা হয়েছে। মামলা হওয়ার পর তিতাস উপজেলা ও দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর বাজার এলাকার অনেক রাজনীতিক, ব্যবসায়ীসহ অনেকে গাঢাকা দিয়েছে। এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে গৌরীপুর বাজার, হোমনা সড়ক, লক্ষ্মীপুর ব্রিজ ও জিয়ারকান্দি গ্রামের কয়েকটি স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। জানা যায়, এলাকায় নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা, প্রশাসনে ও সবর্ত্র প্রাধান্য বিস্তার, মাদক বাজার নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবজি, দাউদকান্দির গৌরীপুর বাজার ইজারা, সিএনজি স্ট্যান্ডের টোল আদায়, মানুষ জিম্মি করে মোটা অংকের টাকা আদায়সহ নানা বিষয়ে স্থানীয় রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীসহ নানা পেশার মানুষের সাথে বিরোধ চলছিল মনির চেয়ারম্যানের। এছাড়াও তিতাস আ.লীগ ও যুবলীগের মধ্যে আভ্যন্তরীণ কোন্দল রয়েছে চরম আকারে। এমনকি গত ইউপি নির্বাচনে মনিরের প্রাণনাশের হুমকি খেয়ে অনেকে প্রার্থী হয়নি আবার কেউ কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। ফলে বীনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মনির চেয়ারম্যার নির্বাচিত হন। ওই সূত্র মতে মনির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে খুন, অস্ত্র, বিস্ফোরক ও চাঁদাবাজির ২২টি মামলা রয়েছে। তার এসব ভয়ংকর অপরাধের কারণে মানুষ অতিষ্ঠ ছিল। প্রায় দুইশতাধিক সন্ত্রাসী নিয়ে ‘মনির বাহিনী’ নামে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ গড়ে তুলে। গত ৮ নভেম্বর একটি মামলায় হাজিরা দিতে ১১ জন সহযোগী নিয়ে মনির চেয়ারম্যান মাইক্রোবাসে কুমিল্লার আদালতে যাচ্ছিলেন। সকাল ৮টার দিকে পার্শ্ববর্তী উপজেলার গৌরীপুর মোড় বাস স্ট্যান্ডে পৌঁছামাত্র পেছন থেকে একটি মোটরসাইকেল মাইক্রোবাসে ধাক্কা দেয়। এতে মনির ও তার সহযোগিরা নেমে এলে কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই ৭/৮ জনের একটি মুখোশধারী দল তাদের উপর অতর্কিত ঝাঁপিয়ে পড়ে। উপর্যুপরি গুলি আর রামদা দিয়ে কোপিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে মুখোশধারী সন্ত্রাসীরা। পরে স্থানীয় লোকজন আহত অবস্থায় মনির, তার শ্যালক মহিউদ্দিনসহ ৫ জন সহযোগীকে প্রথমে গৌরীপুর সরকারী হাসপাতারে নিয়ে যায়। অবস্থা আশংকাজনক দেখে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তার মনির চেয়ারম্যান ও তার শ্যালক মহিউদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে হত্যাকা- সংঘটিত হবার পর থেকেই কুমিল্লা পুলিশ সুপারের নির্দেশে ডিবির একাধিক টিম হত্যার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেফতার করতে মাঠে কাজ করছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।