আগুন ঝরানো বোলিংয়ে জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিলেন তাসকিন আহমেদ। পরে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠলেন তামিম ইকবাল। দক্ষিণ আফ্রিকাকে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে রীতিমতো উড়িয়ে দিল বাংলাদেশ। গড়ল সিরিজ জয়ের ইতিহাস।
সেঞ্চুরিয়নের সুপারস্পোর্ট পার্কে বুধবার দিবারাত্রির ম্যাচটিতে ৯ উইকেটের দাপুটে জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। ১৫৫ রানের লক্ষ্য মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে ১৪১ বল হাতে রেখেই ছুঁয়েছে টাইগাররা।
সুবাদে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ এ নিজেদের করল সফরকারীরা। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে এটিই টাইগারদের প্রথম সিরিজ জয়।
একই ভেন্যুতে এই সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ৩৮ রানে জিতেছিল বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে যা যে কোনো ফরম্যাটে টাইগারদের প্রথম জয়।
পরে জোহানেসবার্গে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে ৭ উইকেটে জিতে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। তাতে সিরিজে ফেরে সমতা। তবে তৃতীয় ম্যাচটায় দাপুটে জয় তুলে নিয়ে বাংলাদেশ লিখল ইতিহাস।
দেশের বাইরে এত দিন বাংলাদেশ ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিল কেবল জিম্বাবুয়ে, কেনিয়া ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে। সেই তালিকায় যুক্ত হলো এবার দক্ষিণ আফ্রিকার নাম। যেখানে খেলা উপমহাদেশের দলগুলোর জন্য বরাবরই চ্যালেঞ্জিং।
বাংলাদেশ অবশ্য সিরিজটা জিতল দাপুটে ক্রিকেট খেলে। তাসকিন আহমেদের ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বার ৫ উইকেট শিকারের দিনে মাত্র ৩৭ ওভারেই ১৫৪ রানে গুটিয়ে যায় টস জিতে ব্যাট করতে নামা দক্ষিণ আফ্রিকা। যা টাইগারদের বিপক্ষে দলটির সর্বনিম্ন সংগ্রহ।
এরপর ব্যাট হাতে জ্বলে ওঠেন তামিম। ৮২ বলে ১৪ চারে ৮৭ রানের অপরাজিত ইনিংস উপহার দেন তিনি।
লিটন দাসকে নিয়ে উদ্বোধনী জুটিতেই ১২৭ রান যোগ করেন তামিম। লিটন ২ রানের জন্য ফিফটি মিস করেছেন। ৫৭ বলে ৪৮ রান করেছেন তিনি ৮ চারে। পরে সাকিব যোগ দেন তামিমের সঙ্গে। জয়সূচক রান আসে সাকিবের ব্যাট থেকেই। রাবাদাকে চার হাঁকিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন তিনি।
প্রথম ওয়ানডে জয়ের নায়ক ছিলেন সাকিব। ৬৪ বলে খেলেছিলেন ৭৭ রানের ইনিংস। পরিবারের একাধিক সদস্যের অসুস্থতার জন্য শেষ ওয়ানডের আগেই দেশে ফেরার কথা ছিল তার। কিন্তু পরে দলের স্বার্থে শেষ ম্যাচটা খেলে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। শেষ পর্যন্ত ফেরার পথে সাকিবের সঙ্গী হচ্ছে সিরিজ জয়ের আনন্দ।
দক্ষিণ আফ্রিকা ভালো শুরুই পেয়েছিল এদিন। প্রথম ৬ ওভারে ৪০ রান তুলে বড় স্কোরের ইঙ্গিত দিচ্ছিল দলটি। কিন্তু বিনা উইকেটে ৪৬ রান থেকে ১৫৪ রানে অলআউট হয়েছে তারা। সেটাও ১৩ ওভার বাকি থাকতে।
কুইন্টন ডি কক ও জানেমান মালানের ৪৬ রানের উদ্বোধনী জুটিটাই প্রোটিয়াদের সর্বোচ্চ। মালান দলীয় সর্বোচ্চ ৩৯ রান করেছেন। এ ছাড়া কেশভ মহারাজ ২৮ ও ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস ২০ রান করেন।
তাসকিন ৯ ওভারে ৩৫ রান খরচায় নিয়েছেন ৫ উইকেট। এর আগে ২০১৪ সালে ভারতের বিপক্ষে নিজের অভিষেক ওয়ানডেতেই পাঁচ উইকেট শিকার করেছিলেন। দ্বিতীয়বার এই কীর্তি গড়তে প্রায় ৮ বছর লাগল তার।
সাকিব ৯ ওভারে ২৪ রান খরচায় ২ উইকেট নিয়েছেন। একটি করে উইকেট নিয়েছেন শরিফুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজ।
ম্যাচসেরা ও সিরিজ সেরার পুরস্কার পেয়েছেন তাসকিন আহমেদ।