Inqilab Logo

বুধবার, ২২ মে ২০২৪, ০৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে এক নারী!

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৩ মার্চ, ২০২২, ১২:০১ এএম

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ একদিকে দেখেছিল মানুষের অপরিমিত নিষ্ঠুরতা। আরেকদিকে সেই যুদ্ধের আবহেই অভূতপূর্ব মানবিকতারও নজির রেখেছিলেন অনেক মানুষ। তেমনই একজন মহিলা নাৎসিদের হত্যালীলার মধ্যেই জীবন বাঁচিয়েছিলেন প্রায় ৮ হাজার শিশুর।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তাকেই মা বলে মনে করত হাজার হাজার শিশু। তারা জানত তিনি তাদের জন্ম দেননি। কিন্তু তারা এ কথাও জানত, তিনি তাদের নিশ্চিত মৃত্যু থেকে বাঁচিয়েছিলেন। তাই তাদের কাছে এই মহিলাই ছিলেন তাদের ‘দ্বিতীয় মা’।

মহিলার নাম ডায়ানা বুডিসাজেভিক। তিনি মনে করতেন এই ভালবাসাই তার পাওয়া সবচেয়ে বড় পুরস্কার। এই মহিলা ঠিক কী করেছিলেন? প্রশ্নের জবাব লুকিয়ে আছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সেই অভিশপ্ত দিনগুলোতে।
ক্ষমতা দখলের নেশায় উন্মত্ত জার্মানি হাত মিলিয়েছিল ইতালি আর জাপানের সঙ্গে। তাদের টার্গেট ছিল গোটা বিশ্বে দখলদারি চালাবে। পাল্টা আক্রমণ করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়ার মতো শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো। সব মিলিয়ে শুরু হয়ে যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পিষে যাচ্ছিল সাধারণ মানুষ। এমনকি রেহাই পায়নি শিশুরাও। আর এমন যুদ্ধবিধ্বস্ত শিশুদের বাঁচাতেই এগিয়ে এসেছিলেন ডায়ানা। তিনি ক্রোয়েশিয়ার মানুষ। সার্বিয়ার কিছু অংশ এবং ক্রোয়েশিয়া নিয়ে গঠিত রাষ্ট্রটি তখন নামেই স্বাধীন। আর সেখানে ছড়ি ঘোরায় জার্মানির নাৎসি সরকারই।
বিশ্বযুদ্ধের সময় যখন প্রচুর অস্ত্রের প্রয়োজন, তখন অস্ত্র কারখানার শ্রমিক জোগাড় করতে এই দেশটির দিকে নজর দেয় জার্মানি। ক্রোয়েশিয়া থেকে সুস্থ নারী-পুরুষদের বন্দি করে জার্মানিতে নিয়ে আসতে শুরু করে নাৎসি বাহিনী।

এদিকে তাদের সন্তানরা থেকে যায় ক্রোয়েশিয়াতেই। কয়েকটি হোমে তাদের রাখা হয়। কিন্তু সেগুলোর অবস্থা ইহুদিদের কন্সেনট্রেশন ক্যাম্পের মতোই ছিল জঘন্য। ফলে শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়তে লাগল। তাদের চিকিৎসারও কোনও ব্যবস্থা ছিল না বললেই চলে।

এমন পরিস্থিতিতেই একদিন ক্রোয়েশিয়ার সবচেয়ে বড়ো শহর জ্যাগ্রেবের এক হাসপাতালে ঢুকেছিলেন ডায়ানা। দেখলেন হাসপাতালের মেঝেতে স্রেফ পড়ে রয়েছে শত শত অসুস্থ শিশু। এমনকি তাদের মধ্যে কেউ কেউ মারাও গেছে। এক চিকিৎসকের স্ত্রী ডায়ানা সেদিনই ঠিক করে নিয়েছিলেন, এই অনাথ শিশুদের বাঁচাতে যা যা করার দরকার, তিনি একাই করবেন। আর সে কাজটি করেছিলেন বলেই বেঁচে গিয়েছিল ৭ হাজার ৭০০ শিশু। সূত্র : বিবিসি নিউজ, রেডিও ফ্রিইউরোপ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ