Inqilab Logo

শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে নগর পরিকল্পনায় গুরুত্ব দেয়া জরুরি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ মার্চ, ২০২২, ৮:০৯ পিএম

নগর পরিকল্পনার মাধ্যমে মানুষের স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা সম্ভব। নগর পরিকল্পনায় হাঁটার জন্য ওয়ার্কওয়ে, পথচারীর নিরাপত্তা ও অগ্রাধিকার প্রদান, সাইকেলের জন্য লেন তৈরি, পার্ক, উম্মুক্ত স্থান তৈরি এবং সকলের অবাধ চলাচল নিশ্চিত করা। শিক্ষা কার্যক্রমে শরীরচর্চা বাধ্যতামূলক করা, শরীরচর্চার জন্য শিক্ষক এবং উপকরণ নিশ্চিত করার মাধ্যমে শরীরচর্চা বৃদ্ধি করা যায়। গ্রামের নাগরিকদের বসত বাড়ীতে খাদ্য উৎপাদনে উৎসাহী করা জরুরি। নগরে সবজির চাহিদা পূরণে ছাদ কৃষি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে, এদিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। রেলওয়ে, নৌ পরিবহনের সবজি সহজে ও দ্রুত নেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে কম দামে নাগরিকদের সবজি পৌছেছে দেয়া সম্ভব হবে। অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে অন্যান্য মন্ত্রণালয়গুলো এগিয়ে আসলেই এ রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এ সকল রোগ প্রতিরোধ না করা হলে, দেশের সার্বিক অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হবে। অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য সেক্টরের বাইরের সংস্থাগুলোকে দায়িত্ব নিতে হবে। এ লক্ষ্যে বিদ্যমান আইন ও নীতিসমূহ বাস্তবায়ন এবং প্রয়োজনে সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি । আজ ২১ মার্চ ২০২২, সকাল ১১টায়, ইব্রাহিম অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ ইউনিভাসিটি অব হেলথ সাইন্সেস, সেন্টার ফর ল এন্ড পলিসি এফেয়ার্স-সিএলপিএ, আইডিএলও এবং সিটিজেন নেটওয়ার্ক আয়োজিত অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে শরীরচর্চা, কায়িক পরিশ্রম এবং নগরে তাজা শাক-সবজি যোগান নিশ্চিতে স্থানীয় সরকারের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা সভায় এই অভিমত ব্যক্ত করা হয়। সভায় প্রফেসর ডা: আনোয়ার হোসেন, ডীন, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেস-র সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রফেসর অধ্যাপক আ ফ ম সারোয়ার, রিসার্চ কনসালট্যান্স এবং সৈয়দ মাহবুবুল আলম, সেক্রেটারী, সেন্টার ফর ল এন্ড পলিসি এফেয়ার্স-সিএলপিএ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ফরিদুল আলম, ভিসি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেস ।

অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে বিদ্যমান আইন সম্পর্কিত গবেষণার আলোকে বক্তারা বলেন, শরীরচর্চার খেলার মাঠ এবং উম্মুক্ত স্থান নিশ্চিতে দেশে প্রায় ১৬টি মতো আইন রয়েছে। এছাড়া অস্বাস্থ্য খাদ্য নিয়ন্ত্রণে ৬ টি এবং স্বাস্থ্যকর তাজা খাদ্য নিশ্চিতে ১১ টি মন্ত্রণালয়ের ৩০টি বেশি আইন জড়িত। তবে এ সকল আইনগুলো প্রয়োগে স্বাস্থ্যের দিকগুলো গুরুত্ব পায় না। অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে অন্যান্য মন্ত্রণালয়গুলো এগিয়ে আসলেই এ রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তিনি আরও বলেন স্থানীয় পর্যায়ে কায়িক পরিশ্রমের পরিবেশ সৃষ্টিতে স্থানীয় সরকার কর্তৃক পৃথক নীতিমালা প্রণয়ন করা জরুরী এবং স্থানীয় সরকার আইনে কায়িক পরিশ্রম ও শরীরচর্চার পরিবেশ সৃষ্টির বিষয়টি নিশ্চিতে আইন সুনির্দিষ্ট বিধান যুক্ত করা প্রয়োজন। পাশাপাশি তাজা সবজির যোগান নিশ্চিতে নগর কৃষি নীতি প্রণয়নে গুরুত্ব আরোপ করা জরুরি।

বক্তারা বলেন, মৌসুমি ফল উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দেশের তালিকায় নাম লিখিয়েছে বাংলাদেশ। তারপরও আমাদের পুষ্টি ঘাটতির অন্যতম কারণ হচ্ছে স্বাস্থ্যসম্মত ও বৈচিত্রপূর্ণ খাবার গ্রহণে উৎসাহী করতে পারিনি। গ্রামের নাগরিকদের বসত বাড়ীতে খাদ্য উৎপাদনে উৎসাহী করা জরুরি। নগর কৃষির লক্ষ্যে নীতিনির্ধারকদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। নগরে সবজির চাহিদা পুরণে ছাদ কৃষি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে, এদিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।

বক্তারা বলেন, প্রতিবছর খেলাধূলার জন্য বাজট বরাদ্ধ, পুকুরগুলো সংরক্ষন এবং সাঁতার শিখানোর সুযোগ সৃষ্টি, মার্শাল আর্ট শিখানোর জন্য বিনামূল্যে স্থান বরাদ্ধ, হাঁটার জন্য দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের উপযোগী ফুটপাত এবং সাইকেল লেন প্রদান, নদী, দীঘির পাড়ে পার্ক, উম্মুক্ত স্থান তৈরি করে বিনোদনের স্থান তৈরি, শহরের ছাদে সবজি এবং ঔষধী গাছ লাগানোতে কর মওকুফসহ উৎসাহী দেয়া, জনস্বাস্থ্য বিষয়ক একটি পুণার্ঙ্গ আইন প্রণয়ন স্বাস্থ্য উন্নয়ন হেলথ ডেভলাপমেন্ট সারচার্র্জের অর্থ দিয়ে হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন গঠন করা, শরীরচর্চার অবকাঠামো বিষয়ে বিষয়ে একটি জাতীয় গাইনলাইন প্রণয়ন এবং বাজেট বরাদ্ধ প্রদানের সুপারিশ করা হয়।

সভায় আরো বক্তব্য রাখেন ড. এ কে এম শামীম আলম, প্রকল্প পরিচালক, ইউনিয়ন পর্যায়ে কৃষক সেবা কেন্দ্র স্থাপন ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্প, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, প্রফেসর মো: তাজুল ইসলাম, কান্ট্রি প্রজেক্ট ম্যানেজার, স্বাস্থ্য প্রজেক্ট অফিস, জাইকা ডা. মো: শাফিউর রহমান, প্রোগ্রাম কো অর্ডিনেটর, নিপসম, ফরিদা আখতার, নির্বাহী পরিচালক, উবিনীগ, ডা. মাহমুদ হোসেন ফারুকী, সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান পেশা ও পরিবেশ স্বাস্থ্য বিভাগ, বিউএইচএস, অধ্যাপক ডা. শেখ আখতার আহমদ, ট্রেজারার, বিইউএইচএস, নজরুল ইসলাম রুমি, প্রাক্তন চীফ কোচ, বিকেএসপি, আমিনুল ইসলাম বকুল, নাগরিক সংযোগ, হেলাল আহমেদ, সেক্রেটারী প্রত্যাশা, মাসুম বিল্লাহ, নির্বাহী পরিচালক, সিয়াম প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ