Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আল্লাহর পথে ব্যয় করার সুফল

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুন্শী | প্রকাশের সময় : ২০ মার্চ, ২০২২, ১২:০০ এএম

ইসলাম পরিপূর্ণ জীবন বিধান। এই বিধানের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে আল্লাহর পথে ব্যয় করা। কেননা, সহায়-সম্পদ, শক্তি সামর্থ্য এবং স্বচ্ছলতা সব কিছুই আল্লাহপাকের দান ও অনুগ্রহ। তাই সামর্থ্যবানদের উচিত আল্লাহর পথে সাধ্যানুসারে ব্যয় করা। এতদ প্রসঙ্গে আল কোরআনে এরশাদ হয়েছে : (ক) যারা অদৃশ্যের প্রতি বিশ্বাস করে, সালাত কায়েম করে এবং আমি তাদেরকে যে রিজিক প্রদান করেছি তা থেকে ব্যয় করে। (সূরা বাকারাহ : আয়াত-৩)। (খ) আর তোমরা আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় কর এবং নিজ হাতে নিজেদের ধ্বংসের দিকে নিক্ষেপ করোনা। আর তোমরা পুণ্যকর্ম সম্পাদন কর; আল্লাহপাক সৎকর্মশীলদের ভালো বাসেন। (সুরা বাকারাহ : ১৯৫)।

উল্লিখিত আয়াতদ্বয়ে সুস্পষ্টভাবে বলে দেয়া হয়েছে যে, আল্লাহর পথে ব্যয় করা একটি পুণ্যকর্ম। এ পুণ্য কর্মসম্পাদন করতে হবে আল্লাহ পাকের দেয়া রিজিক থেকেই। যা হালাল এবং বৈধ পন্থায় অর্জিত। অবৈধ পন্থায় সংগৃহীত ও অর্জিত সম্পদ ব্যয় করলে কোন পুণ্য লাভের অধিকারী হওয়া যাবে না। মুমিন মুসলমানগণ কতটুকু সম্পদ ব্যয় করবে এবং কোন্ কাজে ব্যয় করবে ও কাদের জন্য ব্যয় করবে, সেদিন নির্দেশনা ও আল কোরআনে প্রদান করা হয়েছে।

যথা : (ক) আর তারা তোমাকে জিজ্ঞেস করে তারা কি ব্যয় করবে? বল যা প্রয়োজনের অতিরিক্ত। (সূরা বাকারাহ : ২১৯)। (খ) তারা তোমাকে জিজ্ঞেস করে তারা কি ব্যয় করবে? বল, তোমরা যে সম্পদ ব্যয় করবে, তা পিতামাতা আত্মীয়, ইয়াতিম, মিসকিন ও মুসাফিরদের জন্য। আর যে কোন পুণ্যকর্ম তোমরা কর। (সূরা বাকারাহ : ২১৫)।

এই আয়াতদ্বয়ের মর্মের প্রতি গভীর দৃষ্টিতে তাকালে বোঝা যায় যে, সে সকল সম্পদ প্রয়োজনের অতিরিক্ত, তা থেকে ব্যয় করাই উত্তম। তবে, অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে, এই ব্যয় যেন আপনরক্ত সম্পর্কিত জন্য অগ্রাধিকার প্রদান করা হয় এবং একই সাথে অন্যান্য পুণ্য কর্মের প্রতিও নজর রাখা হয়।

আমরা জানি, মানুষ মরণশীল। মৃত্যুর তুহীন শীতল পরশ হতে নিষ্কৃতি লাভের কোনো পথ খোলা নেই। তাই, মৃত্যুর আগেই ব্যয় করতে হবে। আল কোরআনে এরশাদ হয়েছে : (ক) হে মুমিনগণ! আমি তোমাদের যে রিজিক প্রদান করেছি তা থেকে তোমরা ব্যয় কর, সেদিন আসার আগে সেদিন থাকবে না কোনো বেচাকেনা, না কোনো বন্ধুত্ব এবং না কোনো সুপারিশ। (সূরা বাকারাহ : ২৫৪)। (খ) অতএব, তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় কর, শ্রবণ কর, আনুগত্যকর এবং তোমাদের নিজেদের কল্যাণে ব্যয় কর। (সূরা তাগাবুন : ১৬)।

এই আয়াতদ্বয়ে আল্লাহপাক অত্যন্ত সহজভাবে বলে দিয়েছেন যে, এ ব্যয় মূলত : তোমাদের কল্যাণের পথই সুপ্রশস্ত করে তুলবে এবং এর শুভ ফলকে আল্লাহপাক বহু গুণে বর্ধিত করে দেবেন। আল কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে : (ক) যারা আল্লাহর পথে সম্পদ ব্যয় করে তাদের উপমা একটি বীজের মতো যা থেকে উৎপন্ন হয় সাতটি শীষ, প্রতিটি শীষে রয়েছে একশত দানা। আর আল্লাহ যাকে চান তার জন্য বাড়িয়ে দেন। আর আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ। (সূরা বাকারাহ : ২৬১)।

(খ) আর যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ ও নিজেদের সুদৃঢ় রাখার লক্ষ্যে সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উপমা উঁচু ভ‚মিতে অবস্থিত বাগানের মতো, যাতে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়েছে। ফলে, তা’ দ্বিগুণ ফলফলাদি উৎপন্ন করেছে। আর যদি তাতে প্রবল বৃষ্টি নাও পড়ে, তবে হালকা বৃষ্টিই যথেষ্ট। আর তোমরা যা আমল কর সে ব্যাপারে আল্লাহ সম্যক দ্রষ্টা। (সূরা বাকারাহ : ২৬৫)।

স্মরণ রাখা দরকার যে, মানব জীবনে সচ্ছলতা ও অসচ্ছলতা পাশাপাশি অবস্থান করে। এক অবস্থায় জীবনকাল স্থির থাকে না। সুতরাং এই শুভ পরিণামের স্রোত ধারায় অবগাহন করার তৌফিক আল্লাহপাক আমাদের দান করুন- এটাই আজকের একান্ত প্রত্যাশা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসলাম

৩ মার্চ, ২০২৩
২ মার্চ, ২০২৩
১ মার্চ, ২০২৩
২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন