রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
গোপালগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সবেজমিন গবেষণা বিভাগের পিরোজপুর-গোপালগঞ্জ-বাগেরহাট সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৩ জেলার সাড়ে ২১ হাজার কৃষক আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। তারা দু’ফসলি জমিকে তিন ফসলি ও তিন ফসলি জমিকে ৪ ফসলি জমিতে রূপান্তরিত করে শস্যের নিবিড়তা বৃদ্ধি করেছে। বসতবাড়ির আঙ্গিনায় সারা বছর সবজি ও ফলের আবাদ করে পুষ্টির চাহিদা পূরণ করছেন। ফসলের উৎপাদন বাড়িয়ে তারা আয় বৃদ্ধি করেছেন। তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার হরিদাসপুর গ্রামের কৃষক জিল্লুর রহমান বলেন, আমাদের এলাকার কৃষিতে বিভন্ন সমস্যা রয়েছে। এ কারণে আগে কৃষিকাজ ছিল অলাভজনক। কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিতে এ প্রকল্প প্রথমে আমাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে। পরে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) বিজ্ঞানীদের সদ্য উদ্ভাবিত উন্নত জাতের ধান, গম, ভূট্টা, আলু, পাট, তৈলবীজ, ডাল, বিটি বেগুন, সমার টমেটো ও মসলা বীজ প্রদান করে। চাষাবাদের আধুনিক প্রযুক্তির সাথে উচ্চফলনশীল বীজ পেয়ে আমরা দু’ফসলি জমিকে তিন ফসলি ও তিন ফসলি জমিকে ৪ ফসলি জমিতে পরিবর্তন করেছি। অধিক ফসল উৎপাদন করে আয় বৃদ্ধি করেছি। এলাকার নারী ও শিশুর মৌসুমী কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে। আমার দেখাদেখি অনেক কৃষক লাভজনক চাষাবাদে ঝুঁকে পড়েছেন। প্রকল্পটি আমাদের ৩ জেলার কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নের ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে। শুনেছি ২০১৭ সালের জুন মাসে এ প্রকল্প শেষ হচ্ছে। প্রকল্পটির মেয়াদ আরো ৫ বছর বৃদ্ধি করা হলে পশ্চাদপদ এ তিন জেলার কৃষির ব্যাপক উন্নতি সাধিত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। মুকসুদপুর উপজেলার কদমপুর গ্রামের কৃষক ওবায়দুর রহমান বলেন, এ প্রকল্প অব্যবহৃত জমিতে বারি উদ্ভাবিত জাতের আম, মাল্টা, কুল, লিচু, পেয়ারা, সফেদা ও কলার বাগন সৃজন করেছে। কৃষকের বসতবাড়ির আঙ্গিনায় সবজি ও ফলের আবাদ সম্প্রসারণ করে পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। অব্যহৃত জমিতে ফল ও বসতবাড়ির আঙ্গিনায় সবজির আবাদ করে আমরা নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে অধিক মুনাফা ঘরে তুলছি। প্রকল্পের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ভৌগোলিক কারণে দক্ষিণের পিরোজপুর-গোপালগঞ্জ-বাগেরহাট জেলার কৃষি পরিবেশিক ভিন্নতা রয়েছে। এ অঞ্চলের কৃষি নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত। এ কারণে ফসলের উৎপাদন ভালো হতো না। তাই বারি কৃষকের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি, প্রশিক্ষণ, কর্মশালা, মাঠ দিবস, খাদ্য নিরাপত্তা, প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি জন্য ৫ বছর মেয়াদি সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করে। ২০১৩ সালে প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ১ বছর পর ২০১৪ সালে কাজ শুরু হয়। ৩ জেলার ২১ হাজার ৫০০ কৃষক এ প্রকল্প থেকে সাবলম্বী হয়েছেন। এ অঞ্চলের কৃষির ক্ষেত্রে সবুজ বিপ্লব সাধিত হয়েছে। উৎপাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের প্রদর্শনী প্লটের মাধ্যমে উন্নত চাষাবাদের পাশাপাশি বারির উচ্চফলনশীল বীজ সংরক্ষণের কৌশল শিখিয়ে দেয়া হয়েছে। এ কৌশল তারা কাজে লাগাতে পারলে এ অঞ্চলে কৃষি ও কৃষকের কোনো সমস্যাই থাকবে না। কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঊর্ধŸতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এইচএম খায়রুল বাসার বলেন, এ প্রকল্পের আওতায় আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় কৃষককে খাপখাইয়ে নেয়াসহ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় কাজ করছি। পানির উপর ভাসমান চাষাবাদ, ব্যাগিং পদ্ধতি, সেক্সফেরোমেন পদ্ধতিসহ কৃষির সব ধরনের প্রযুক্তি আমরা কৃষকদের হাতে-কলমে শিখিয়েছি। কৃষকরা এগুলো গ্রহণ করে ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধি করে আর্থ-সমাজিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। এ প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সফল হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।