মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বিশ্ববাজারে খাদ্যের দামে আগুনে গরীব দেশগুলো বেশি ‘পুড়বে’ বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফ।
সংস্থাটি বলেছে, এমনিতেই করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করার পর থেকেই বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যসহ সব ধরনের জিনিসের দাম বাড়তে থাকে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মারাত্মক প্রভাব পড়েছে তাতে; যেনো আগুন লেগেছে। লাগামহীনভাবে বাড়ছে সব পণ্যের দাম। যুদ্ধের ডামাডোলে জ্বালানি তেলের দর চড়ছে। তার প্রভাব পড়ছে পণ্যমূল্যে; আগুনের উত্তাপ আরও বাড়ছে। আর তাতে দরিদ্র দেশগুলোকে সবচেয়ে বেশি আঘাত করছে।
খাদ্যপণ্যের বিশ্ববাজার পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ ভায়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে আইএমএফ।
‘খাদ্যের দামে যুদ্ধ-জ্বালানির প্রভাব: দরিদ্র দেশগুলোকে সবচেয়ে বেশি আঘাত করবে’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী খাদ্যের দাম গত ফেব্রুয়ারিতে রেকর্ড ঝাঁপিয়ে যাওয়ার পরও বেড়েই চলেছে। যা করোনা মহামারির আঘাতে তছনছ হয়ে যাওয়া বিশ্ব অর্থনীতির পুনরুদ্ধারকে মারাত্মক ব্যাহত করছে। পণ্যমূল্যে এই আগুন গরীব দেশগুলোর জনগোষ্ঠীর উপর সবচেয়ে বেশি বোঝা চাপিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, গত বছর খাদ্যপণ্যের দাম ২৩ দশমিক ১০ শতাংশ বেড়েছে। যা ছিল এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উল্লম্ফন। ফেব্রুয়ারি মাসে মাংস, দুধ, সেরিয়েল ফুড, ভোজ্যতেল এবং চিনির দাম ১৯৬১ সালের পর সর্বোচ্চ উচ্চতায় উঠেছে।
এখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং হামলার কারণে রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুটি কৃষি উৎপাদনকারী দেশের কোনো পণ্য অন্য দেশে আসতে পারছে না। যুদ্ধের কারণে পণ্য উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে। এই দুটি দেশ বিশ্ববাজারে মোট চাহিদার ৩০ শতাংশ গম এবং ১৮ শতাংশ ভুট্টা সরবরাহ করে থাকে। এখন দেশ দুটির সকল বন্দর বন্ধ থাকায় সবকিছুই বন্ধ; কোনো পণ্য পাচ্ছে না কোনো দেশ। আর সে কারণে শিকাগোতে গমের দাম সম্প্রতি রেকর্ড ছুঁয়েছে।
গরীব দেশগুলোর দরিদ্র পরিবারের উপর পণ্যমূল্যের আগুন কতোটা ধাক্কা দেবে তার একটি তুলনামূলক চিত্র উপস্থাপন করে প্রতিবেদনে বলা হয়, উন্নত দেশগুলোতে ভোক্তাদের ব্যয়ের ১৭ শতাংশ ব্যয় হয় খাদ্য কিনতে। আর সাব-সাহারান আফ্রিকাসহ অন্য গরীব দেশগুলোতে ভোক্তাদের ব্যয়ের ৪০ শতাংশই খাদ্যের জন্য।
পূর্ব ইউরোপ, ককেশাস এবং মধ্য এশিয়াসহ রাশিয়া এবং ইউক্রেনের সাথে ঘনিষ্ঠ বাণিজ্য সংযোগ রয়েছে এমন দেশগুলোরর জন্য আঘাত আরও বেশি হতে পারে। উচ্চ গমের দাম মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার অর্থনীতির উপর আরও বেশি প্রভাব ফেলবে। যেমন মিশর- এই দেশটি রাশিয়ার রপ্তানির উপর নির্ভরশীল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সামনের দিনগুলোতে সার সরবরাহ হ্রাস এবং জ্বালানি তেলের উচ্চ মূল্য খাদ্য সংগ্রহ, পরিবহন এবং প্রক্রিয়াজাতকরণের খরচ অনেক বাড়িয়ে দেবে। তাই নীতিনির্ধারকদের অবশ্যই দরিদ্রদের জন্য সামাজিক সহায়তা বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
প্রতিবেদনের শেষে এই কঠিন পরিস্থিতি মোবাবিলার জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দুই দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও চীনকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে বলা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যেখানে ভুট্টা উৎপাদনের প্রায় ৪০ শতাংশ ইথানলে যায়, নীতিনির্ধারকরা এই ব্যবহার পুনরায় মূল্যায়ন করতে পারেন। আর চীন বিশ্বব্যাপী গম এবং ভুট্টার মজুদের অর্ধেকেরও বেশি ধারণ করে। এই দেশটি কম দামে এই দুটি পণ্য সরবরাহের বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।