Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিলাইদহের কুঠিবাড়ি রক্ষা বাঁধে আবারও ধস

আতঙ্কিত এলাকাবাসী

এস এম আলী আহসান পান্না, কুষ্টিয়া থেকে | প্রকাশের সময় : ১৫ মার্চ, ২০২২, ১২:০৫ এএম

কুষ্টিয়ার ঐতিহ্যবাহী কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি রক্ষা বাঁধের একটি অংশ ধসে পড়েছে। কুঠিবাড়ি রক্ষা বাঁধের ১১০ মিটার ধসে পড়েছে। বারো দিন আগে কোমরকান্দি এলাকায় বাঁধে ধস দেখা দেয়। কিন্তু ভাঙন ঠেকাতে এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এই নিয়ে তিন দফা বাঁধের ধস হলো। শুষ্ক মৌসুমে এই বাঁধ ধসের ঘটনায় এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, ২০১৮ সালে শিলাইদহে ‘রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি সংরক্ষণ বাঁধ প্রকল্প’ নামে রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি রক্ষায় ৩ দশমিক ৭২ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এতে ব্যয় করা হয় প্রায় ১৯০ কোটি টাকা। তবে কাজ শেষ হওয়ার দুই মাস পর বাঁধে ভাঙন দেখা যায়। কালোয়া খাপাড়া এলাকায় পদ্মা নদীতে বাঁধের ১৫০ মিটার নদীতে বিলীন হয়ে যায়। তখন পাউবোর প্রকৌশলীরা জানান, পদ্মায় পানি অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় তীব্র স্রোতে নদীর তীর ও কুঠিবাড়ি সংরক্ষণ বাঁধের প্রায় ১৫০ মিটার বøকবাঁধ বিলীন হয়ে গেছে।
তবে এবার শুষ্ক মৌসুমে বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। বারো দিন আগে কোমরকান্দি এলাকায় বাঁধে ধসের সৃষ্টি হয়। বাঁধের ওপরের মাটি দেবে বøক খসে পড়ছে। কোমরকান্দি গ্রামের বাসিন্দা রিয়াজ উদ্দিন বলেন, সপ্তাহখানেক আগে বাঁধে ধস দেখা দেয়। সেটা দীর্ঘ হয়ে এখনো মাটি দেবে ধসে যাচ্ছে। বøকবাঁধ নির্মাণের সময় পাইলিংয়ের কাজে অনিয়ম হয়েছে। এ জন্য অসময়ে বাঁধ ধসে যাচ্ছে। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, কুঠিবাড়ি রক্ষা বাঁধ নির্মাণের সময় যথাযথভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়নি। নকশা অনুযায়ী বাঁধ নির্মাণ না করায় বারবার ওই বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। আরো বলেন, গ্রামের মাঠের সঙ্গে বøকবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। মাটি নরম হয়ে তা ধসে পড়ছে। প্রতিদিনই একটু একটু করে ধসছে। পাউবোর কর্মকর্তারা এসে দেখে গেছেন। কোনো দৃশ্যমান কাজ করতে কেউ আসছেন না।
স্থানীয় এক কৃষক বলেন, কাজে অনিয়ম থাকায় বাঁধ ভেঙে গেছে। ভাঙন ঠেকানো না গেলে কুঠিবাড়িসহ আশপাশের এলাকার কৃষিজমি, ফসল, ঘরবাড়ি বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
একজন জনপ্রতিনিধি বলেন, বাঁধ নির্মাণের পর মানুষ অনেকটা নিশ্চিত ছিল। তবে পরপর কয়েকবার বাঁধ ভাঙনের কারণে এখন আর কেউ ভরসা পাচ্ছে না। বাঁধের একটি অংশ এখনও ফাঁকা রয়েছে। সেখানে কোনো কাজ করা হয়নি।
কোমরকান্দি গ্রামের মরিয়ম খাতুন বলেন, ‘ব্যাটারা কাজে ফাঁকি দিছে। এখন আমরা ভাঙনের ভয়ে দিশাহারা।’
শিলাইদহ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন তারেক জানান, এবার দিয়ে বাঁধে তিনবার ভাঙন দেখা দিল। শিলাইদহ অংশে বেশ কিছুটা বাঁধ নির্মাণ কাজ হয়নি। এখানকার বাসিন্দারা বিপদের মধ্যে আছে। বর্ষার পানি বাড়লে মাঝখান দিয়ে পানি প্রবেশ করে দুই পাশের বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই বিষয়টি আমলে নেয়া উচিত।
কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। উচ্চ পর্যায় জানানো হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ জানানে হয়েছে।
কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা বিতান কুমার মন্ডল টেলিফোনে জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়সহ বিভিন্ন জায়গায় চিঠি প্রেরণ করেছেন। তবে দৃশ্যমান কোনো কাজ পানি উন্নয়ন বোর্ড এখনও শুরু করেনি।
পাউবোর কুষ্টিয়া কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আফছার উদ্দীন বলেন, কোমরকান্দি এলাকায় যেখানে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে, সেখানে আগে গর্ত ছিল। গর্ত ভরাট করে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল। এ ছাড়া মাঠের ওপরের দিকে পানি জমে বøকের ভেতরে চলে যায়। মাটি নরম হওয়ায় প্রায় ১১০ মিটারজুড়ে ধসের সৃষ্টি হয়েছে।
বর্ষাকালের আগেই সংস্কার করা হবে। এ ব্যাপারে ঢাকা থেকে একটি বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবে। কুষ্টিয়ার বিজ্ঞমহল বাধ নির্মাণের কাজ দ্রæত শুরু করার পরামর্শ দেন।



 

Show all comments
  • ash ১৫ মার্চ, ২০২২, ৩:২২ এএম says : 0
    WORLD ER KON DESH E DEKHI NAI E VABE BLOCK SHAJYE NODIR TIR BA BADH DEBAR CHESHTA KORE, AK MATRO BNAGLADESH SARA !! WORLDER KONO DESH E DEHI NAI EAT ER SURKI BA EAT USE KORE RASTA BANAY, AK MATRO BANGLADESH SARA !! 73-74 E PASHER DESH E FARKKA BAD BANYESE, ODER GONGAR TIR A KI VABE BADH DYESILO?? AMADER MOTO BLOCK BISYE?? OI SHOB GONGAR TIR SHONGROKHON TO AKHON PORJONTO TIKE ASE !! AMADER BLOCK SAJYE NODIR TIR SHONGROKHON KENO 6 MASH O TIKE NA ??????
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কুঠিবাড়ি রক্ষা বাঁধ
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ