পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গাজীপুরে গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১৬০টি ঘর তৈরিতে ব্যাপক দুর্নীতি ধরা পড়ায় তা ভেঙে নতুন করে তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে আশ্রয়ন প্রকল্পের ১৬০টি ঘর ভেঙে গুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। গাজীপুর সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন ও মহানগরীর কাশিমপুর এলাকায় ঘরগুলো নির্মাণ করা হচ্ছিল।
প্রকল্পের শর্ত অনুযায়ী, প্রতিটি বিমে রড থাকার কথা চারটি। কিন্তু কোনো বিমে দেয়া হয়েছে একটি, কোনোটিতে রড ব্যবহারই করা হয়নি। কলামের পিলারে দেয়ার কথা ছিল ১৬ মিলিমিটারের চারটি রড। দেয়া হয়েছে ১০ মিলিমিটারের দুটি। নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারে নয়-ছয়ের কারণে বাঁশ দিয়ে ঠেলা দিতেই হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে দেয়াল। সামান্য আঘাতে ভেঙে ক্ষত-বিক্ষত হয় পাকা মেঝে। দুর্বল পাতলা প্লেইন শিট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ঘরের দরজা-জানালা। মুজিববর্ষে গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণে এমন দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর ঘটনা ধামাচাপা দিতে তড়িঘড়ি করে ভেঙে ফেলা হয়েছে নির্মাণাধীন ১৬০টি ঘর। ভেঙে ফেলা ঘরগুলো মানসম্মত উপকরণ দিয়ে পুনরায় তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রকল্পের সভাপতি এস এম সাদিক তানভীর।
এই প্রকল্পের সদস্যরা হলেন- উপজেলা প্রকৌশলী মো. শাকিল হোসেন (সদ্য বিদায়ী), উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইশতিয়াক আহমেদ উজ্জ্বল, সহকারী কমিশনার (ভূমি) তানিয়া ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় গত বছরের ডিসেম্বর মাসে সরকারি খাস জমিতে ঘর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। তার মধ্যে বাড়িয়া ইউনিয়নের কেশরিতা গ্রামে ৬টি, খুন্দিয়া গ্রামে ৯টি, ভাওয়াল মির্জাপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া খালপাড় এলাকায় ১৫টি, পিরুজালী ইউনিয়নের পাতিলবান্দা এলাকায় ৬০টি, মহানগরীর ৩ নম্বর ওয়ার্ডে কাশিমপুর গোবিন্দপুর এলাকায় ১৭টি ও হাতিমারা এলাকায় ৮টি, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের হাতিয়াবো এলাকায় ১৪টি ঘর নির্মাণ হচ্ছিল। ১৯ ফুট ৬ ইঞ্চি দৈর্ঘ্য ও ২২ ফুট ৬ ইঞ্চি প্রশস্থ প্রতিটি পাকা ঘরের সঙ্গে একটি করে রান্নাঘর ও টয়লেট থাকার কথা রয়েছে। প্রতি ১০টি ঘরের জন্য থাকবে একটি নলক‚প। ইট, সিমেন্ট এবং বালুর পরিমাণও নকশা মোতাবেক নির্ধারণ করা ছিল।
প্রতিটি ঘর নির্মাণে ব্যয় বরাদ্দ ছিল ২ লাখ ৬৪ হাজার ৫০০ টাকা। কাজ শুরুর পর থেকে নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহার, বিম ও কলামে রড কম দেয়া এবং সিমেন্ট কম দেয়ার অভিযোগ ওঠে। সামান্য আঘাতেই খসে পড়তে থাকে ইট। তাছাড়া কাজ শেষ হওয়ার আগেই ঘরের মেঝে দেবে ও ফেটে যেতে থাকে। স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলেও কাজ বন্ধ হয়নি।
এ বিষয়ে একের পর এক অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লোকজন নিয়ে গত ৪/৫ দিনে সব ঘর ভেঙে দিয়েছেন। এর মধ্যে বেশ কিছু ঘরের নির্মাণকাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। বাকিগুলোর নির্মাণকাজ ২৫ থেকে ৫০ শতাংশ শেষ হয়েছিল।
প্রকল্পকাজ তদারকিতে প্রশাসনের গা-ছাড়া আচরণের অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। তারা জানান, ঘর নির্মাণকাজ শুরুর পর থেকে সরকারি কোনো কর্মকর্তা বা কমিটির কাউকে প্রকল্প এলাকায় দেখা যায়নি। নির্মাণ শ্রমিকও ছিল বহিরাগত। মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল হক মুসল্লি বলেন, ‘প্রকল্পের কোনো কাজেই আমাকে ডাকা হয়নি। সবকিছু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাসহ সরকারি কর্মকর্তারা করেছেন।’ এ বিষয়ে জানতে উপজেলা প্রকৌশলী ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইশতিয়াক আহমেদ উজ্জ্বলের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম সাদিক তানভীর জানান, স্থানীয়দের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে সরেজমিন গিয়ে ঘরগুলো মানসম্মতভাবে নির্মাণ হয়নি দেখে ভেঙে ফেলা হয়েছে। নির্ধারিত নকশা ও নির্মাণসামগ্রী দিয়ে শিগগিরই ঘরগুলো পুনরায় নির্মাণ করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।