নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা

নওগাঁর রানীনগরে বেতগাড়ী-পাগলীর মোড় নামক স্থানে ছোট যমুনা সেতুর নির্মাণ কাজের মন্থরগতির কারণে কার্যাদেশের নির্ধারিত সময়ের পর আরো এক বছর বৃদ্ধি করা হলেও যথাসময়ে সেতুর কাজ সম্পূর্ণ হওয়া নিয়ে এলাকাবাসী শংকা প্রকাশ করছেন। সেতুটি দ্রুত নির্মাণ করা হলে রানীনগর হয়ে সরাসরি বিভাগীয় শহর রাজশাহীর সাথে যোগাযোগের আমূল পরিবর্তন ঘটবে। সুবিধা হবে রানীনগর, আত্রাই, মান্দা, বাগমারা উপজেলাসহ আশপাশে বসবাসরত প্রায় ৬ লাখ মানুষের। তবে উপজেলা প্রকৌশলীর দায়িত্বরত কর্মকর্তা জানান, চলতি বছরের শেষদিকে সর্বসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে বলে আশা করছেন। জানা গেছে, উপজেলা সদর থেকে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে রানীনগর উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নওগাঁর ছোট যমুনা নদীর বেতগাড়ী পাগলীর মোড় নামক স্থানে চলাচলের জন্য অত্র এলাকার জনগণের প্রাণের দাবি ছিল একটি বড় সেতু। সেই দাবির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে নওগাঁ-৬ আসনের সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম এখানে সেতুু তৈরির ঘোষণা মোতাবেক স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়কে দীর্ঘ সেতু প্রকল্প কর্মসূচির আওতায় ৪ কোটি ৯৬ লাখ ৩৫ হাজার ৪৫৭ টাকা ব্যয়ে ১১৫ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণের জন্য গত ২০ ডিসেম্বর ২০১৩ সালে একটি দরপত্র যার বিজ্ঞপ্তি নং-০৯, প্যাকেজ নং- এলবিসি/এনএও/০৪ প্রকাশ করা হয়। সেই মোতাবেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নওগাঁর পশ্চিম চকদেব পাড়ার এএস-এসআরআই জেভি নামক নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান কাজ পেলে গত ১০/০৯/২০১৩ সালে নির্বাহী প্রকৌশলী নওগাঁ ওই প্রতিষ্ঠানকে ২১/০৪/২০১৫ তারিখে সমুদয় কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য কার্যাদেশ প্রদান করলে স্থানীয় সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম এমপি ১ নভেম্বর ২০১৩ সালে এক জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সেতুটি নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। নির্মাণ কাজের শুরুতেই সেতুর পূর্ব পাড়ে ভূমি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান প্রথমদিকে স্থানীয় জমির মালিক কাজ করতে বাধা প্রয়োগ করলে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা করলেও অনেক দেন-দরদার করে যথাযথভাবে সুরাহা না হওয়ায় একপর্যায়ে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। বিভিন্ন অসুবিধার কারণে এই সেতুর নির্মাণকাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ করা সম্ভব হয়নি তবে দুই পাশের সংযোগ সড়ক বাদে সেতুটির মূল কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে বলে উপ-সহকারী প্রকৌশলী মকলেছুর রহমান জানান। রানীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঘোষগ্রাম কফিলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আব্দুল আরিফ রাঙ্গা জানান, অত্র এলাকার প্রাণের দাবি ছিল ছোট যমুনা নদীর উপর নির্মিত একটি সেতু। নানা কারণে নির্মাণকাজ ধীরগতিতে হওয়ায় নদী পারাপারের জন্য প্রায় ৫ দশক ধরে নৌকার উপরেই ভরসা করতে হয়। সেতুর নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করা হলে প্রায় চারটি উপজেলার কৃষক, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবীসহ এলাকার সর্বস্তরের জনগণ উপকৃত হবে। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই সেতুটির নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ করে চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করার জোর দাবি জানাচ্ছি। রানীনগর উপজেলা প্রকৌশলী সাইয়েদুর রহমান মিঞা জানান, বেতগাড়ী-পাগলীর মোড় সেতুটি নির্মাণকাজ প্রায় ৯০ ভাগ সম্পূর্ণ হয়েছে। দুই পাশের সংযোগ সড়কের কাজ খুব শিগগিরই শেষ করে জনস্বার্থে চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে।