Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কংগ্রেসের রেকর্ড ভাঙল বিজেপি : টানা দুইবার উত্তরপ্রদেশে যোগী সরকার

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১০ মার্চ, ২০২২, ৪:৪৬ পিএম

ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে আবার সরকার গঠন করতে চলেছেন যোগী আদিত্যনাথ। টানা দু’বার বিজেপির পক্ষ থেকে ভোটে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়ে রেকর্ড করতে চলেছেন তিনি।
উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনে অখিলেশ যাদবের সাইকেলকে অনেক পিছনে ফেলে দিয়ে আবার সরকার গঠন করতে চলেছেন যোগী আদিত্যনাথ। গতবারের তুলনায় অখিলেশ অনেক ভালো ফল করেছেন। বিজেপি-র আসন গতবারের তুলনায় কমছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও যোগীকে চ্যালেঞ্জ জানানোর জায়গায় পৌঁছতে পারেননি অখিলেশ। বেলা বারোটা নাগাদ ফলাফলের প্রবণতা হলো বিজেপি এগিয়ে ২৬৯টি আসনে, অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি ১২২টি আসনে এগিয়ে। কংগ্রেস ও বহুজন সমাজ পার্টি চারটি করে আসনে এগিয়ে। গতবারের তুলনায় বিজেপি ৫৩টি আসন হারাতে পারে, অখিলেশ ৭১টি আসন বেশি পেতে পারেন।
এ প্রবণতা থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট, উত্তরপ্রদেশে লড়াই হয়েছে সরাসরি বিজেপি ও সমাজবাদী পার্টির মধ্যে। প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর কংগ্রেস ও মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি উত্তরপ্রদেশের এ বিধানসভা নির্বাচনে একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে। তারা নিতান্তই শক্তিহীন হয়ে পড়েছে।
অখিলেশের চ্যালেঞ্জকে অতিক্রম করে যোগী আদিত্যনাথ আবার উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন। উত্তরপ্রদেশের ইতিহাসে সাধারণত কেউ পরপর দুইবার মুখ্যমন্ত্রী হন না। যোগী হলে সম্ভবত দ্বিতীয়বার এ ঘটনা ঘটবে। উত্তরপ্রদেশে এবার যোগীই ছিলেন বিজেপি-র মুখ। মোদি নন। তাকে সামনে রেখেই ভোটে গিয়েছিল বিজেপি। আর অনিবার্যভাবে যোগী প্রচারপর্বে হিন্দুত্বের প্রসঙ্গ তুলেছেন। বিভাজনের চেষ্টা করেছেন। মন্দির-মসজিদ প্রসঙ্গ তুলেছেন, একইসাথে ৮০-২০-র কাহিনি শুনিয়েছেন। ৮০ শতাংশ হিন্দু ও ২০ শতাংশ মুসলিমকে বিভাজনের কাহিনি। তিনি বারবার অযোধ্যায় রামমন্দির, মথুরায় কৃষ্ণজন্মভূমি ও কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের করিডোরকে প্রচারে সামনে এনেছেন।
ফলাফল প্রকাশের পর দেখা যাচ্ছে, যোগীর ৮০-২০-এর কৌশল সফল হয়েছে। বিজেপি-কে পঞ্চাশটির মতো আসন হারাতে হলেও, তারা সমাজবাদী পার্টির থেকে প্রায় দেড়শ আসনে এগিয়ে আছে। উত্তরপ্রদেশে পরপর দ্বিতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর যোগীর রাজনৈতিক উচ্চতা বাড়তে বাধ্য। সারা ভারতেই তিনি হিন্দুত্বের মুখ হিসাবে আরো অনেক সামনে আসবেন বলে বিজেপি নেতারাই মনে করছেন।
অখিলেশের ভোট পাওয়ার হার গতবারের তুলনায় অনেক বেড়েছে। গতবার তার দল পেয়েছিল প্রায় ২২ শতাংশ ভোট। এবার তাদের ভোট পাওয়ার হার গিয়ে পৌঁছেছে ৩৪ শতাংশে। বিজেপি-ও তাদের ভোটের হার চার শতাংশ বাড়াতে পেরেছে। তারা এবার প্রায় ৪৫ শতাংশের কাছাকাছি ভোট পেয়েছে। ভোটপ্রাপ্তির হারে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মায়াবতীর দল। তারা গতবার ভোটের হারে দ্বিতীয় স্থানে ছিল। এবার তাদের ভোট পাওয়ার হার অর্ধেক হয়েছে।
এ হিসাব থেকেই স্পষ্ট, গতবারের তুলনায় অখিলেশ অনেক ভালো ফল করেছেন। কিন্তু বিজেপি-র কাছাকাছি তিনি পৌঁছতে পারেননি।
উত্তরপ্রদেশের এ ফলাফল বিজেপি-কে নিঃসন্দেহে স্বস্তি দেবে। কারণ, পশ্চিমবঙ্গে হার, করোনাকালের কঠিন সময়, অর্থনীতির বেহাল অবস্থার পর উত্তরপ্রদেশ হাতছাড়া হলে, সেটা হতো মোদী-শাহের কাছে বড় ধাক্কা। কিন্তু কঠিন সময়ে এ জয়ের ফলে তারা রাজনৈতিক দিক থেকে আবার অন্যদের অনেক পিছনে ফেলে দেবেন।
মোদাী-শাহের নজর এবার গুজরাটের বিধানসভা ভোট। এ কারণে ফলাফলের ব্যস্ততা কাটার পরই তারা গুজরাট যাচ্ছেন। সূত্র : ডয়চে ভেলে



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ