পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তালিকাভুক্ত কোনো প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম একদিনে সর্বোচ্চ দুই শতাংশের বেশি কমতে পারবে না বলে জানিয়েছে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আজ বুধবার থেকে এ নিয়ম কার্যকর হবে। গতকাল বিএসইসির কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বিএসইসির কমিশনার প্রফেসর শেখ শামসুদিন আহমেদ।
এর আগে মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপে ২০২০ সালে দেশের শেয়ারবাজারে ভয়াবহ ধস নামলে ওই বছরের ১৯ মার্চ প্রতিটি কোম্পানির শেয়ারের সর্বনিম্ন দাম বেঁধে দিয়ে ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করেছিল বিএসইসি। তবে বাজার পরিস্থিতি ভালো হওয়ায় গত বছরের জুনে সব প্রতিষ্ঠানের ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। পাশাপাশি ছয়টি ক্যাটাগরিতে সার্কিট ব্রেকার (দাম কমা বা বাড়ার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন সীমা) নির্ধারণ করে দেয়া হয়।
ওই সময় নির্ধারণ করা নিয়ম অনুযায়ী, ২০০ টাকার নিচে থাকা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকার নির্ধারণ করা হয় ১০ শতাংশ। অর্থাৎ যেসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বা ইউনিটের দাম ২০০ টাকার নিচে তার শেয়ার বা ইউনিটের দাম একদিনে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ বাড়তে বা কমতে পারবে। একইভাবে শেয়ার বা ইউনিটের দাম ২০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে থাকা প্রতিষ্ঠানের সার্কিট ব্রেকার ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ, ৫০০ থেকে ১০০০ টাকার ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকার ৭ দশমিক ৭০ শতাংশ, ১০০০ থেকে ২০০০ টাকার ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকার ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ, ২০০০ থেকে ৫০০০ হাজার টাকার ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকার ৫ শতাংশ এবং ৫০০০ টাকার ওপরে হলে সার্কিট ব্রেকার ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। মঙ্গলবার পর্যন্ত এ নিয়মেই শেয়ারবাজারে লেনদেন চলছিল।
তবে আজ বুধবার থেকে শেয়ার বা ইউনিটের দাম বাড়ার ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকারে আগের নিয়মই বহাল থাকবে। দাম কমার সর্বোচ্চ সীমা হবে ২ শতাংশ। অর্থাৎ দুই শতাংশের নিচে কোনো প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমতে পারবে না। শেয়ার বা ইউনিটের দাম কমার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক সংস্থার এমন একটি নিয়ম করার সংবাদ মঙ্গলবার লেনদেন চলাকালেই শেয়ারবাজারে চলে আসে। এর পরিপ্রেক্ষিতে লেনদেনের শুরুতে সূচকের বড় পতন দেখা দেয়, যদিও শেষ দিকে সূচক ঊর্ধ্বমুখী থেকে দিনের লেনদেন শেষ হয়।
এর আগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরুর পর দেশের শেয়ারবাজারে টানা দরপতন দেখা দেয়। এতে সোমবার পর্যন্ত শেষ আট কার্যদিবসের মধ্যে সাত কার্যদিবসেই পতন দিয়ে পার করেছে শেয়ারবাজার। এ পতনের মধ্যে পড়ে ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক ৪৯২ পয়েন্ট কমে যায়। শেয়ারবাজারে এমন দরপতনের প্রেক্ষিতেই পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা এখন সার্কিট ব্রেকারের নিয়মে পরিবর্তন নিয়ে এলো।
সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিএসইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন বলেন, বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা দেয়া আমাদের মৌলিক ও প্রধান কাজ। এজন্য আমরা নানাবিধ চেষ্টা করে থাকি। যার ধারাবাহিকতায় দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ ও স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এটি আগের ন্যায় দীর্ঘমেয়াদি হবে না। পরিস্থিতির উন্নতি হলে ২ শতাংশ সীমা তুলে নেয়া হবে।
তিনি বলেন, সেকেন্ডারি মার্কেটে তারল্যপ্রবাহ নিশ্চিতকল্পে ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএফ) থেকে আরও ১০০ কোটি টাকা দ্রæত বিনিয়োগের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যা আজ থেকেই বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। বিএসইসি’র এ কমিশনার বলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধাবস্থা এবং বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের একটি জাহাজ পরিত্যক্ত ঘোষণাকে অনেকে বড় প্রচার করছেন। বিভিন্ন গুজবও ছড়াচ্ছে। এ পর্যন্ত ৩৫ জন গুজবকারীকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কমিশন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোর ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল ব্যবহারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতিবাচক। কিন্তু এখনো অনেক ব্যাংক ওই ফান্ড গঠন করেনি। এছাড়া কেউ কেউ ফান্ড গঠন করলেও তা ব্যবহার করেনি।
শেয়ারবাজারে লেনদেনের গতি বাড়াতে ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে কমিশন টি+১ সেটেলমেন্ট চালুর উদ্যোগ নিয়েছে জানিয়ে শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, শেয়ারবাজারে টি+১ সেটেলমেন্টের প্রকৃত অর্থে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে কি না, তা যাচাই করা হবে। কোনো ইতিবাচক ফলাফল ছাড়া চালু করতে চাই না।
তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ভ‚মিকা যেমন হওয়া দরকার ছিল, তা কোম্পানিটির বর্তমান ম্যানেজমেন্ট উপলব্ধি করছেন। আশা করি এ বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানটি আগামীতে শেয়ারবাজারে সঠিক ভ‚মিকা রাখতে পারবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএসইসি’র এ কমিশনার বলেন, আমাদের দেশে মার্কেট মেকারের আইন আছে। কিন্তু মার্কেট মেকার নেই। যদি দেশে বড় বড় মার্কেট মেকার থাকতো, তাহলে বর্তমান এ পরিস্থিতি কাটানো যেতো। এটি শেয়ারবাজারের জন্য খুবই কার্যকর। যা বিশ্বের সব দেশেই আছে।
এদিকে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের জেরে পুঁজিবাজারে ধসের পরিস্থিতিতে তারল্য প্রবাহ নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিল থেকে আরও ১০০ কোটি টাকা দ্রæত বিনিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। সেকেন্ডারি মার্কেটে তারল্য প্রবাহ নিশ্চিত করতেই এই অর্থ দ্রæত বিনিয়োগ করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকে দেশের পুঁজিবাজারে দেখা দেয়া ধসে ব্যাপকহারে ক্ষতির মুখে পড়তে শুরু করেছেন বিনিয়োগকারীরা। ভালো-মন্দ নির্বিশেষে পড়ছে শেয়ারের দর। সূচক এক বছর আগের কাছাকাছি নেমে এসেছে।
অবশ্য বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বিনিয়োগকারীদেরকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, বড় বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করছে না। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ায় বাজারে এই দরপতন। এমন বাস্তবতায় স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড থেকে ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
এর আগে গত বছরের ২৮ নভেম্বর সিএমএসএফ থেকে ১০০ কোটি টাকা টিডিআর হিসেবে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অফ বাংলাদেশে (আইসিবি) বিনিয়োগে সম্মতি জানিয়ে চিঠি দেয় বিএসইসি। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর অবণ্টিত লভ্যাংশ দিয়ে চলতি বছর এই তহবিল গঠন করা হয়েছে। শুরুতে এই তহবিল ২১ হাজার কোটি টাকা হবে বলে জানানো হয়েছিল। তবে পরে কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়, অবণ্টিত লভ্যাংশের বেশিরভাগই বিনিয়োগকারীরা নিয়ে গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।