Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা মস্কোবাসীর জীবনে কী ধরনের প্রভাব ফেলছে?

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ মার্চ, ২০২২, ১২:০৬ এএম

মস্কোতে বসন্ত শুরু হয়েছে। গাছে কুঁড়ি ফুটছে প্রতিদিন ঝলমলে রোদ উঠছে। এরকম আবহাওয়ায় মস্কোবাসির যে উচ্ছ্বাস আনন্দ থাকার কথা সেটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। মস্কোর সর্বত্র বইছে এক নীরবতার সুর। মানুষের মধ্যে উদ্বেগ। শপিং সেন্টারে লোক সমাগম আগের চাইতে অনেক কম।

গত কয়েক দিন রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা বিশ্বের আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা (স্যাঙ্কন) অথবা ইউক্রেন সংঘাত নিয়ে মস্কোতে তেমন একটা প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি। জীবন গতি স্বাভাবিকই চলছিলো। মানুষের মধ্যেও উদ্বেগ তেমন লক্ষ্য করা যায়নি। কিন্তু বিশ্বের ব্যাঙ্ক লেনদেনের ব্যবস্থা ‘সুইফট’ থেকে একের পর এক রুশ ব্যাঙ্ককে বহিষ্কার করা শুরু হলে মস্কোবাসীর মধ্যে বিশেষ উদ্বেগ লক্ষ্য করা গেছে। কেবল অর্থনৈতিকভাবেই রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি। সামাজিক, সাংস্কৃতিক নানাভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পরে রাশিয়া এখন রাষ্ট্রীয়ভাবে একঘরে, বা সমাজ বন্ধ। নানা রকম স্যাঙ্কনে রাশিয়া জর্জরিত। এখন দেখার বিষয়, এই স্যাঙ্কনে রাশিয়ার জীবনে কী প্রভাব পড়ছে বা পড়তে পারে এবং এই স্যাঙ্কন তারা কিভাবে মোকাবিলা করবে। শুরুতে বলে নেয়া ভাল, এই স্যাঙ্কন রাশিয়ার জন্য নতুন কিছু নয়, তবে এবারকার স্যাঙ্কন পূর্বের যেকোনো স্যাঙ্কনের চাইতে ভিন্ন রকম। এবারে ব্যক্তি পর্যায় থেকে শুরু করে ব্যাঙ্ক, প্রতিষ্ঠান অনেক কিছুই এবার স্যাঙ্কনের আওতাভুক্ত। বলা যায় পুরো রাশিয়াকে পৃথিবী থেকে একঘরে করে ফেলা হয়েছে।

স্যাঙ্কনের প্রভাব ইতিমধ্যেই পড়তে শুরু করেছে রাশিয়ান জীবনে। হয়তো এর প্রভাব আরো সুদূর প্রসারিত হবে। গত সপ্তাহে নিষেধাজ্ঞা আরোপের শুরুর দিকে মস্কোর সাধারণ মানুষ মনে করেছিল তাদের গচ্ছিত অর্থ ব্যাঙ্ক থেকে নাই হয়ে যাবে এবং একটি গুজব রটেছিল যে ব্যাঙ্ক একাউন্ট হ্যাক করে সেই অর্থ ইউক্রেনীয়দের সাহায্যের জন্য পাঠানো হবে। তাই সকলের মধ্যে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলার হিড়িক পরে যায়।

বেশ কয়েকদিন ধরে, রাশিয়ার আশেপাশে এটিএম-এর কাছে দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়েছিল যখন লোকেরা ইলেকট্রনিক ব্যাঙ্কিংয়ে বিপর্যয়ের আশঙ্কার মধ্যে পড়েছিল - বৈদেশিক মুদ্রা এবং রুবল উভয়ই - নগদ তুলতে ছুটেছিল। সেই আতঙ্ক এখন আর নেই। মস্কো স্টক এক্সচেঞ্জেরও পতন হয়েছিল। স্টক এক্সচেঞ্জ বন্ধ ছিল কয়েক দিন। বুধবার পর্যন্ত বন্ধ ছিল। এখন আবার স্টক এক্সচেঞ্জ চলছে। অনেক লোক ভেবেছিল তাদের সঞ্চয় হারিয়েছে। রুবলের মান রেকর্ড পরিমাণ কমে ছিল। ডলার এর দাম গত কয়েক দিনে ৭৫ থেকে ১১০ রুবল হয়েছে। রুবলের দাম কমে গিয়েছে। অনেকে মনে করছে রুবল ইনকাম করার আর কোন মানে নাই। তবে রুবলের দরপতন ঠেকাতে সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ ইতোমধ্যে নিয়েছে। ক্রেমলিন সব রাশিয়ানদের বিদেশে বৈদেশিক মুদ্রা স্থানান্তর নিষিদ্ধ করেছে এবং রপ্তানিকারকদের তাদের বৈদেশিক মুদ্রার আয়ের ৪০ শতাংশ রুবলে বিনিময় করার নির্দেশ দিয়েছে। সূত্র: বিবিসি নিউজ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ