Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

যেসব ভুল বিশ্বকে প্রায় পারমাণবিক যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছিল

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ মার্চ, ২০২২, ১২:০৬ এএম

প্রাণীর আক্রমণ থেকে শুরু করে সস্তা ত্রæটিযুক্ত কম্পিউটার চিপ- এমন বহু জিনিসের তালিকা আছে যা দেখলে বোঝা যায়, কিভাবে একটি ভুলের কারণে খুব সহজে পারমাণবিক যুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে।

১৯৬২ সালের ২৫শে অক্টোবর মধ্যরাতে যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিনের রানওয়ের দিকে দ্রæতগতিতে যাচ্ছিলো একটি ট্রাক। এটা ছিলো একটি বিমানের উড্ডয়ন আটকে দেয়ার আগ মুহ‚র্তের ঘটনা। কয়েক মিনিট আগে ডুলুথ সেক্টর ডিরেকশন সেন্টারের একটি গার্ড ছায়াসদৃশ কিছু একটাকে ওই কেন্দ্রের সীমানা প্রাচীর বেয়ে উঠতে দেখেন। তিনি সেটিকে লক্ষ্য করে গুলি করেন এবং সতর্কবার্তা জারি করেন এই ভয়ে যে হয়তো এটা সোভিয়েত হামলার একটি অঙ্ক। সাথে সাথে ওই এলাকার সব বিমান ঘাঁটিতে এ সতর্কতা জারি করা হয়।

পরিস্থিতি দ্রæতই আরও জটিল হয়ে ওঠে। নিকটবর্তী বিমান ঘাঁটি ভল্ক ফিল্ডে কেউ একজন ভুল সুইচ চেপে দেন। ফলে সাধারণ নিরাপত্তা সতর্কবার্তার পরিবর্তে পাইলটদের কানে বেজে ওঠে জরুরি সাইরেন। মুহ‚র্তেই পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত বিমানগুলো একযোগে উড্ডয়নের উদ্যোগ নেয়। একেবারে হুড়োহুড়ি পড়ে যাওয়ার মত অবস্থা। এটা ছিলো কিউবান ক্ষেপণাস্ত্র সঙ্কটের সময়কার কথা। এর এগারো দিন আগে একটি গোয়েন্দা উড়োজাহাজ থেকে কিউবার মিসাইল, ট্রাক ও গোপন লঞ্চারের ছবি তোলা হয়। যা দেখে মনে করা হয় যে সোভিয়েত পুরো যুক্তরাষ্ট্রে তাদের টার্গেটগুলোকে কেন্দ্র করে গুছাচ্ছিলো। তবে পুরো বিশ্বই জানতো যে কোন পক্ষ থেকে একটি হামলা নজিরবিহীন অবনতি ঘটাতো।

কিন্তু এসব যখন ঘটছে তখন জানা যায় এগুলোর সাথে জড়িত কোন মানুষ নয় বরং ওই সীমানা প্রাচীরের কাছে ছায়া পড়েছিলো একটি বড় কালো ভালুকের। অর্থাৎ পুরোটাই ছিলো একটা ভুল। তবে ভল্ক ফিল্ডে তখনো এ সত্য পৌঁছায়নি। বরং তারা পুরোপুরি নিশ্চিত ছিলো যে - তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। শেষ পর্যায়ে বিমান ঘাঁটির কমান্ডার বের করেন যে আসলে কি হয়েছিলো। তিনিই একটি ট্রাক নিয়ে গিয়ে পাইলটদের থামান।

এটা ভুলে যাওয়া সহজ যে প্রায় ১৪ হাজার পারমানবিক অস্ত্র রয়েছে এই দুনিয়া যা দুনিয়ার তিনশো কোটি মানুষকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার ক্ষমতা রাখে, এমনকি মানবজাতিকে বিলুপ্তও করে দিতে পারে। আমরা জানি এর কোনটি যদি কোন নেতা ইচ্ছা করে বিস্ফোরণ ঘটাতে চান তাহলে তিনি বা তারা আসলে পাগল। কিন্তু আমরা যেটি ধারণা করতে পারি না তা হলো এটি আসলে দুর্ঘটনাক্রমেও হতে পারে। এ পর্যন্ত অন্তত ২২ বার এমনটি ঘটতে যাচ্ছিলো যা শেষ পর্যন্ত অল্পের জন্য আর হয়নি। আর যেসব বিষয় এভাবে বিশ্বকে পারমাণবিক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিলো তার মধ্যে ছিলো একদল রাজহাঁস, চাঁদ, সামান্য কম্পিউটার সমস্যা এবং মহাকাশের অস্বাভাবিক আবহাওয়া।

১৯৫৮ সালে একটি বিমান থেকে ভুলবশত একটি বাড়ির বাগানে পারমানবিক বোমা ফেলা হয় কিন্তু বিস্ময়করভাবে কেউ মারা যায়নি। তবে কিছু মুরগি পুড়ে যায় তাপে। সূত্র : বিবিসি নিউজ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ