মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : হিলারি ক্লিনটন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের নতুন ই-মেইল তদন্ত করে বেআইনি কিছু পায়নি দেশটির কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই। কংগ্রেস সদস্যদের প্রতি গতকাল রোববার লেখা এক চিঠিতে এফবিআইয়ের পরিচালক জেমস কোমি এ কথা বলেন। নির্বাচনের মাত্র দুই দিন আগে এফবিআই–প্রধান এ ঘোষণা দিলেন। কোমি বলেছেন, হিলারির বিরুদ্ধে মামলা না করার বিষয়ে চলতি বছরের জুলাইয়ে যে সুপারিশ করা হয়েছিল, এফবিআই তা থেকে সরে আসছে না। নতুন পাওয়া ই-মেইলগুলো তদন্ত করতে সংস্থাটি দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা কাজ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে হিলারি ক্লিনটনের কাছে আসা এবং তাঁর পাঠানো সব ই–মেইল আমরা তদন্ত করেছি। গত জুলাইয়ে হিলারি ক্লিনটনের বিষয়ে নেওয়া সিদ্ধান্ত আমরা পরিবর্তন করছি না।
জুলাইতে এফবিআই প্রধান কোমি বলেছিলেন, ক্লিনটন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় নিজের ব্যক্তিগত ই-মেইল সার্ভারে স্পর্শকাতর জিনিসপত্র রাখার ক্ষেত্রে অসতর্ক থাকলেও তিনি কোনো অপরাধ করেননি। হিলারির প্রচারণা শিবিরের যোগাযোগ পরিচালক জেনিফার পালমিয়েরি কোমির এ ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, তদন্তে তিনি যা পেয়েছেন, তাতে আমরা খুশি এবং আমরা এ ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে তিনি তদন্ত করে এটাই পাবেন। আমরা খুশি যে এ বিষয়ের একটি সুরাহা হয়েছে। তবে এতে যারপরনাই অখুশি ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণা শিবির। ট্রাম্পের এক পরামর্শক নিউট গিংরিচ টুইট বার্তায় বলেন, কোমি অবশ্যই বিরাট রাজনৈতিক চাপের কারণে এ কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন।
গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, যৌন কেলেঙ্কারির জন্য অভিযুক্ত সাবেক কংগ্রেসম্যান অ্যান্থনি উইনারের ঘরে কম্পিউটারে তল্লাশি চালানোর সময় এফবিআই সন্দেহজনক ই-মেইলের খোঁজ পায়। উইনারের সাবেক স্ত্রী হুমা আবেদিন হিলারি ক্লিনটনের দীর্ঘদিনের ব্যক্তিগত সহকারী। নতুন করে পাওয়া ওই ই-মেইলের কথা উল্লেখ করে গত ২৮ অক্টোবর জেমস কোমি বহুল প্রচারিত এক চিঠিতে আইনপ্রণেতাদের বলেছিলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে হিলারি সরকারি সার্ভারের বদলে ব্যক্তিগত সার্ভার ব্যবহারের সময় কোনো গোপনীয় তথ্য চালাচালি করেছিলেন কি না, তা নিয়ে এফবিআই নতুন করে তদন্ত শুরু করতে যাচ্ছে। হঠাৎ ফাটানো এফবিআইয়ের ওই বোমায় বেকায়দায় পড়েন হিলারি ক্লিনটন।
তবে আত্মবিশ্বাসী হিলারি জানিয়েছিলেন, যতই তদন্ত করা হোক, খারাপ কিছুই পাওয়া যাবে না। বরং ভোটের মাত্র ১০ দিন আগে এমন একটি সিদ্ধান্ত কেন নেওয়া হলো, তার ব্যাখ্যা চান এফবিআইয়ের কাছে। একের পর এক যৌন হয়রানির অভিযোগের মুখে ডুবতে থাকা রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প এফবিআইয়ের সরবরাহ করা ওই নতুন রসদ লুফে নেন।
অন্য কয়েকটি খবরে বলা হয়, নির্বাচনের ঠিক আগের মুহূর্তে মার্কিন তদন্ত সংস্থা এফবিআই যখন হিলারির ই-মেইল নিয়ে আবার তদন্ত শুরু করলো তখনই ধস নামতে শুরু করে হিলারির জনপ্রিয়তায়। এতে ট্রাম্প-শিবির বেজায় খুশি হয়ে হিলারির ই-মেইল তদন্তকেই অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার স্বপ্ন দেখা শুরু করে। কিন্তু এবার ট্রাম্প মার্কিন সিস্টেমের উপর আবার খেপেছেন। কারণ, এফবিআই নির্বাচনের দুই দিন আগে হিলারিতে সকল তদন্ত থেকে নির্দোষ বলে অব্যাহতি দিয়েছে। এই ঘোষণার এক ঘণ্টা পরই গত রোববার ট্রাম্প বলেছেন, কারচুপির মাধ্যমে হিলারিকে রক্ষা করা হয়েছে। মার্কিন শাসন ব্যবস্থার সমালোচনা করেন ট্রাম্প। রিপাবলিকান দলের এই সমালোচিত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মিনেসোটার এক র্যালিতে এই মন্তব্য করেন।
এর আগে এফবিআইয়ের ডিরেক্ট জেমস কোমি গত রোববার বলেন, আমাদের দল নির্বাচনের আগে দ্রুত হিলারির নতুন ই-মেইলগুলো তদন্ত করে দেখেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকার সময় পাঠানো ই-মেইল গুলোতে আমরা সন্দেহজনক কিছু পাইনি তাই আমরা জুলাই মাসে হিলারি ক্লিনটনকে নির্দোষ বলে যে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিলাম তাতেই হিলারির প্রতি শ্রদ্ধার সাথে আবারও একমত হচ্ছি। কোমি কংগ্রেসকে এই বিবৃতি লিখে পাঠান। যদিও ট্রাম্প কোমির তদন্তের পদ্ধতি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। ট্রাম্প বলেন, আপনি নিশ্চয়ই ৬ লাখ ৫০ হাজার মেইল ৮ দিনে দেখে শেষ করতে পারবেন না। তিনি জোরালো দাবি করে বলেন, আপনি এটা করতে পারেন না। হিলারি দোষী। সে তা জানে, এফবিআইও তা জানে, এমনকি দেশের মানুষও তা জানে। হিলারিকে তাই উপযুক্ত শাস্তি দেয়ার দায়িত্ব ট্রাম্প দেশের নাগরিকের হাতে তুলে দেন। তিনি মার্কিন নাগরিককে ভোটের মাধ্যমে জবার দিতে বলেন। উল্লেখ্য, ৮ ই নভেম্বর বাংলাদেশ সময় বেলা ৫টায় শুরু হবে মার্কিন নির্বাচন। বিবিসি, রয়টার্স, বিজনেস ইনসাইডার, এএফপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।