Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শেখ হাসিনার অধীনে আর কোন নির্বাচন হতে পারে না : খন্দকার মোশারফ

ময়মনসিংহ ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২ মার্চ, ২০২২, ৮:১৭ পিএম

শেখ হাসিনার অধীনে আর কোন নির্বাচন হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য খন্দকার মোশারফ হোসেন। তিনি বলেন, আজকের প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন ক্ষমতায় আসলে দশ টাকা কেজি চাল খাওয়াবে। তারা একটা কথাও রক্ষা করেনি। জনগনের সাথে প্রতারণা করেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। বার বার মানুষকে ঠকিয়েছে। তাদের হাতে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধ হবে না। আর গণতন্ত্র পুনররুদ্ধার না হলে এদেশের ভোটের অধিকার পাবে না।

তিনি আরও বলেন, আজ দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ, তারা নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। নিজের হাতে ভোট দিয়ে নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবে। কিন্তু এই আওয়ামীলীগের হাতে সুষ্ঠ নির্বাচন তো দূরের কথা আর কোন নির্বাচন হতে পারে না। অতএব সুষ্ঠ নির্বাচন চাইলে গনতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে। তা করতে হলে গনতন্ত্রের মাতা মাদার অব ডেমোক্রেসি বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। আমাদের দলের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কে দেশে ফিরিয়ে এনে স্বাধীন ভাবে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিতে হবে।

প্রবীণ এই বিএনপি নেতা আরও বলেন, আজকের এই সরকারের কাছে দাবি করে কোন লাভ নাই। একটাই টার্গেট এই স্বৈরাচারী সরকারকে দেশের স্বার্থে, জনগনের স্বার্থে, বিদেশে আমাদের ভাবমূর্তি ফিরিতে আনতে এই স্বৈরাচার জালেম সরকারকে হটাতে হবে এবং তার থেকে জনগনকে মুক্ত করতে হবে। সামনে আন্দোলন, দ্রব্যমূল্য কমাতে হবে গনতন্ত্র দিতে হবে, তা না হলে পদত্যাগ করে দেশে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

তবে আন্দোলন ছাড়া কোন স্বৈরাচারের পতন ঘটানো যায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানের সংকট থেকে দেশকে রক্ষা করতে হলে দলের কর্মীদের মধ্যে কোন বিভেধ থাকলে তা ভুলে দেশের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তবেই জনগন সাহস পাবে। তাই রাস্তায় নেমে স্বৈরাচারের পতন ঘটানোর প্রস্তুতি নিতে হবে।

বুধবার (২ মার্চ) সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ নগরীর নতুন বাজারস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির প্রতিবাদে জেলা দক্ষিণ ও উত্তর বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে খন্দকার মোশারফ হোসেন আরও বলেন, আওয়ামীলীগ বার বার গণতন্ত্র হত্যা করেছে, তারা গনতন্ত্র উপহার দিতে পারে না। আওয়ামীলীগ আর গনতন্ত্র এক সাথে যায় না। আমাদের নেতা জিয়াউর রহমান বাকশালের হাত থেকে দেশকে রক্ষ করে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল এবং বাকশাল গঠনের সময় আওয়ামীলীগও বাতিল হয়েছিল। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাত ধরে আওয়ামীলীগ আবারও রাজনৈতিক নিবন্ধিত দল হয়েছিল। হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ মার্সাল ল দিয়ে আবার গনতন্ত্র হত্যা করেছিল, আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ৯ বৎসর আপোষহীন ভাবে সংগ্রাম করে স্বৈরাচার থেকে দেশকে রক্ষা করেছিলেন এবং একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনে এদেশের মানুষের ভোটে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন।

তিনি বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা যাতে নির্বাচনগুলো সুষ্ট ও নিরপেক্ষ হয়, সে জন্য সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছিলেন। আজকের যিনি নেত্রী তিনি নিজের সুবিধার জন্য সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছেন। আজকে যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার বহাল থাকত হবে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসতে পারত না আর দেশে সংকট সৃষ্টি হত না।

তিনি বলেন, আজকে দ্রব্যমূল্য কে বৃদ্ধি করেছে। আওয়ামীলীগ এখন হাইব্রীড সরকার। তারা দেশের অর্থনীতি, ব্যবসা বাণিজ্য নিয়ন্ত্রন করছে আওয়ামীলীগ সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেট দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি থেকে শুরু করে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করেছে। চালের দাম ছিল ১৬ টাকা এখন ৫০ টাকা।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক ডা: মাহাবুবুর রহমান লিটন। এ সময় উত্তর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদারের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, বিএনপি নেতা প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন, নির্বাহী সদস্য শাহ শহীদ সারোয়ার, শাহ নূরুল কবীর শাহীন, ইঞ্জি. ইকবাল হোসাইন, কেন্দ্রীয় যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন, মহানগর বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম, যুগ্ম-আহবায়ক আবু ওয়াহাব আকন্দ, অধ্যাপক শেখ আমজাদ আলী, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডা. মাহবুবুর রহমান লিটন, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক জাকির হোসেন বাবলু, আলমগীর মাহমুদ, কাজী রানা, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ফখরউদ্দিন আহমেদ বাচ্চু, আখতারুজ্জামান বাচ্চু, এড. ফাত্তাহ খান, মহানগর যুগ্ম আহবায়ক এ কে এম মাহবুবুল আলম, এড. এমএ হান্নান খান, লিটন আকন্দ, শামীম আজাদ, বিএনপি নেতা ইয়াসের খান চৌধুরীসহ দক্ষিণ ও উত্তর জেলা এবং মহানগর বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্চাসেবক দল, শ্রমিকদল ও মহিলাদলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে সমাবেশকে কেন্দ্র করে নগরীতে বিএনপি নেতাকর্মীদের উৎসাহ উদ্দীপনা ছিল চোখে পড়ার মত। ফলে দুপুর থেকে মিছিল সহকারে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা সমাবেশ স্থলে সমাবেত হয়।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ