Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ক্রাইস্টচার্চে দক্ষিণ আফ্রিকার ‘প্রথম’

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ মার্চ, ২০২২, ১২:০৪ এএম

আগের দিনই বড় হারের সমস্ত প্রেক্ষাপট তৈরি হয়ে গিয়েছিল নিউজিল্যান্ডের। ক্রাইস্টচার্চে শেষ দিনে অনেকটা যেন আনুষ্ঠানিকতাই সারল দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে তাতেও প্রকৃতি দিলো কিছুটা রোমাঞ্চের আঁচ। দুপুর বেলায় হঠাৎ প্রায় অন্ধকার চারপাশ। ক্রাইস্টচার্চের আকাশে কালো মেঘের আনাগোনা। দক্ষিণ আফ্রিকার ভাগ্যাকাশেও বলা যায় দুর্যোগের ঘনঘটা! টিপটিপ বৃষ্টি ক্রমেই রূপ নিল ভারী বর্ষণে। চা-বিরতি হয়ে গেল আগেভাগেই। জয় থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার দূরত্ব তখন স্রেফ ১ উইকেটের। কিন্তু দুরু দুরু বুকে তাদের অপেক্ষা, সেই সময়টা মিলবে তো! নিউজিল্যান্ড তখন আশায় প্রকৃতির সহায়তায় ম্যাচ বাঁচানোর। শেষ পর্যন্ত খুব দীর্ঘায়িত হলো না বৃষ্টি। দক্ষিণ আফ্রিকাও পেয়ে গেল জয়ের ঠিকানা।
ক্রাইস্টচার্চে দ্বিতীয় টেস্টে নিউজিল্যান্ডকে ১৯৮ রানে হারাল দক্ষিণ আফ্রিকা। দুই ম্যাচের সিরিজ শেষ হলো সমতায়। তবে প্রথম টেস্টে নিজেদের ইতিহাসের দ্বিতীয় সবচেয়ে বাজে পরাজয়ের পর যেভাবে ঘুরে দাঁড়াল দক্ষিণ আফ্রিকা, ড্র সিরিজের শেষটায় তৃপ্তি তাদেরই বেশি থাকার কথা। হেরে গিয়ে নিউজিল্যান্ড হারাল আরেকটি সুযোগ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম সিরিজ জয় এখনও অধরাই রইল তাদের। বরং তাদেরকে অপেক্ষায় রেখে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করল দক্ষিণ আফ্রিকা। কিউইদের ঘাঁটি বলে পরিচিত হ্যাগলি ওভালে টস জিতে ব্যাটিং নিয়েও এই প্রথম জিততে পারল কোনো দল।
শেষ ইনিংসে ৪২৬ রান তাড়ায় ৪ উইকেটে ৯৪ রান নিয়ে শেষ দিন শুরু করে নিউজিল্যান্ড। উইকেট আঁকড়ে রেখে দিন পার করার চেষ্টা দেখা যায়নি দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান ডেভন কনওয়ে ও টম ব্লান্ডেলের ব্যাটিংয়ে। বরং সহজাত ব্যাটিংয়ে এগিয়ে যাওয়ার কৌশল বেছে নেন তারা। দিনের প্রথম ৮ ওভারে আসে ৩৩ রান। পরে কাগিসো রাবাদা ও ভিয়ান মুল্ডার একটু চেপে ধরেন রানের গতি। সেটির সুফল পান লুথো সিপামলা। দক্ষিণ আফ্রিকাকে কাক্সিক্ষত উইকেট এনে দেন দলের সবচেয়ে অনভিজ্ঞ বোলারই। কনওয়েকে ফিরিয়ে তিনি ভাঙেন ৮৫ রানের জুটি।
একটুর জন্য সপ্তম টেস্টে চতুর্থ সেঞ্চুরির স্বাদ পাননি কনওয়ে।
যে দেশে তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা, ক্রিকেট ক্যারিয়ারের বড় অংশ যেখানে, সেই দেশের বিপক্ষে দারুণ খেলে বাঁহাতি ব্যাটসম্যান করেন ১৮৮ বলে ৯২। ব্লান্ডেল ও প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম এরপর লাঞ্চ পর্যন্ত নিরাপদেই পার করেন। লাঞ্চের পর মার্কো ইয়ানসেনের দারুণ বোলিংয়ে আর কোনো প্রতিরোধ গড়তে পারেনি নিউজিল্যান্ড। দুর্দান্ত এক স্পেলে বাঁহাতি এই পেসার ফেরান ব্লান্ডেল, ডি গ্র্যান্ডহোম ও কাইল জেমিসনকে।
দক্ষিণ আফ্রিকার জয় যখন সময়ের ব্যাপার, বৃষ্টি বয়ে আনে তখন আশা-নিরাশার দোলাচল। শেষ পর্যন্ত শেষ হাসি প্রোটিয়াদেরই। ৪০ রানের মধ্যে শেষ ৫ উইকেট হারায় কিউইরা। ৮ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা রাবাদা। ২ ম্যাচে ১৪ উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরা ম্যাট হেনরি। ৬ ম্যাচে স্রেফ ২ জয় নিয়ে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে এখন পয়েন্ট তালিকার ৬ নম্বরে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ড। ৫ ম্যাচে ৩ জয়ে ৪ নম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
দক্ষিণ আফ্রিকা : ৩৬৪ ও ২য় ইনিংস : ৩৫৪/৯ (ডি.)।
নিউজিল্যান্ড : ২৯৩ ও ২য় ইনিংস : (লক্ষ্য ৪২৬, আগের দিন ৯৪/৪) ৯৩.৫ ওভারে ২২৭ (কনওয়ে ৯২, ব্লান্ডেল ৪৪, ডি গ্র্যান্ডহোম ১৮, জেমিসন ১২, সাউদি ১৭, ওয়্যাগনার ১০*; রাবাদা ৩/৪৬, ইয়ানসেন ৩/৬৩, মহারাজ ৩/৭৫, সিপামলা ১/২৯)।
ফল : দক্ষিণ আফ্রিকা ১৯৮ রানে জয়ী।
সিরিজ : ২ ম্যাচের সিরিজ ১-১ ড্র।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : কাগিসো রাবাদা।
ম্যান অব দ্য সিরিজ : ম্যাট হেনরি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ