Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের জন্য উদ্বেগের

ঢাকায় কর্মরত ইইউর ৮ রাষ্ট্রদূতের বিবৃতি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ মার্চ, ২০২২, ১২:০৫ এএম

ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধ বন্ধের পাশাপাশি বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকাস্থ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) ৮ দেশের রাষ্ট্রদূত। তাদের মতে ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ শুধু ইউরোপ নয় বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের জন্য উদ্বেগের।

৮ রাষ্ট্রদূতের সই করা বিবৃতিতে বলা হয়, এই লেখা আমরা এমন একটা সময়ে লিখছি, যখন রাশিয়ার ভয়াবহ আগ্রাসনের মুখোমুখি ইউক্রেনকে চড়া মূল্য দিতে হচ্ছে। একুশ শতকে ইউরোপে যে ছবিটির কথা আমরা কল্পনাতেও আনিনি, সেটাই এখন আমাদের দেখতে হচ্ছে। একটি আগ্রাসী দেশ তার শান্তিপূর্ণ প্রতিবেশী দেশ দখল করতে গিয়ে নিরপরাধ লোকজনকে নির্বিচার খুন করছে, অন্য রাষ্ট্রের আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বকে বুড়ো আঙুল দেখাচ্ছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার এ আগ্রাসন শুধু ইউরোপ নয়, বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের জন্য উদ্বেগের। প্রথমত, এর মধ্য দিয়ে জাতিসংঘের সনদ ও আন্তর্জাতিক আইনের চরম লংঘন ঘটেছে, যার ওপর বিশ্বের সব দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নির্ভর করে। দ্বিতীয়ত, ইতিহাসে আমরা দেখতে পাই, আগ্রাসন ও স্বৈরশাসন সংক্রামক ব্যাধির মতো।

বিশ্বের এক প্রান্তের বিস্তার প্রতিহত করা না গেলে অন্যখানে একই মনোভাব পোষণকারীদের তা মদদ দিয়ে থাকে। তৃতীয়ত, রাশিয়ার নেতৃত্ব যে সহিংসতা উসকে দিয়েছে, বিশ্বজুড়ে আর্থিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় এর বিরূপ প্রভাব পড়বে। কোভিড-১৯ মহামারিতে পর্যুদস্ত অর্থনীতি যখন ধকল কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে, তখন রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট জ্বালানির দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাবে। এ পরিস্থিতি বাণিজ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থাকে বিঘ্নিত করবে।

এ প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে একটি জোরালো পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। ইইউ এবং এর ২৭টি সদস্য রাষ্ট্র ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি জোরালো সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে। রাশিয়ার হামলার জবাব দিতে আমরা দ্রুততার সঙ্গে এবং পরিকল্পিতভাবে দেশটির ওপর ব্যাপকতর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছি। এর মধ্যে রয়েছে রুশ নেতৃত্বের ওপর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা, ভিসার ওপর নিষেধাজ্ঞা, পণ্য ও প্রযুক্তিতে নিষেধাজ্ঞা।

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করে ইইউর উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি জোসেপ বোরেল বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট পুতিন এবং তার সরকার প্রতিবেশী স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছেন। আন্তর্জাতিক শান্তি, আইন এবং নিয়মতান্ত্রিক কাঠোমা সমুন্নত রাখতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন আন্তর্জাতিক অংশীদার ও জোটসঙ্গীদের নিয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ।’

আন্তর্জাতিক আইন লংঘনের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব পাসে রাশিয়া ভেটো দিলেও তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দমিয়ে রাখতে পারবে না। জাতিসংঘের সনদ সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে জাতিসংঘ প্রধান প্ল্যাটফর্ম। এ দুঃসময়ে ইউক্রেনের পাশে রয়েছে ইইউ।

এ সংকটকালে জাতিসংঘের সনদ ও আন্তর্জাতিক আইন সমুন্নত রাখতে সংহতি প্রকাশের জন্য বাংলাদেশসহ বিশ্বের নানা প্রান্তের অংশীদারদের অঙ্গীকারের প্রতি সাধুবাদ জানাই। ইউরোপ ও বিশ্ব ইতিহাসের চরম সংকটের পর্বে এবং ইউক্রেনের প্রয়োজনের সময়ে এ সংহতি অপরিহার্য।

যৌথ বিবৃতিদাতারা হলেন- ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াটলি, ড্রেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উইনি এসট্রাপ পিটারসেন, জার্মানির রাষ্ট্রদূত আসিম ট্রস্টার, ইতালির রাষ্ট্রদূত এনরিকো নুনজিয়াতা, নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত অ্যান ভ্যান লিউয়েন, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বেরগ ভন লিন্ড, স্পেনের রাষ্ট্রদূত ফ্রানস্কা ডি বেনিটেজ সালাস, ফ্রান্সের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত জিলস্ গেরাসন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ