Inqilab Logo

শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

চাকরি নেই : তবুও তদন্ত চলছে বিভাগীয় মামলার

দুদকে হাজিরা দিলেন শরীফ উদ্দিন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ মার্চ, ২০২২, ১২:০৭ এএম

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কোনো বিভাগেই তাকে রাখা হয়নি। সাময়িক বরখাস্ত না করে করা হয়েছে সরাসরি বরখাস্ত। তা সত্ত্বেও বিভাগীয় মামলার তদন্ত চলছে চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা মো: শরীফউদ্দীনের বিরুদ্ধে। আর এ মামলায় হাজিরা দিতে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার সেগুনবাগিচাস্থ দুদক কার্যালয়ে আসেন তিনি। এ সময় সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন তিনি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শরীফউদ্দীন বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্যি আমি অপসারিত হওয়ার পরও বিভাগীয় মামলার হাজিরা দিচ্ছি। তিনি বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে তা বাস্তবায়ন করতে গিয়েই প্রভাবশালীদের রোষানলে পড়েছি। প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন। যে বিষয়ে একটি মিশন-ভিশন রয়েছে। সে মিশন-ভিশন বাস্তবায়ন করতে গিয়েই প্রভাবশালীদের রোষানলে পড়েছি। দুদকের সহকর্মী, মিডিয়া সহকর্মী ও মানুষের দোয়ার কারণে আমি গুম হতে রেহাই পেয়েছি। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নজর। তিনি ন্যায়বিচারের প্রতীক। প্রধানমন্ত্রীর কারণে গুম হওয়া থেকে বেঁচে গেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘মা’ সম্বোধন করে তিনি বলেন, আপনি আমার মা। মা, আমি অসহায়। পরিবার ও বাচ্চা নিয়ে খুব সমস্যায় আছি। আমি গত দুই সপ্তাহ ধরে ঘুমাতে পারছি না। আমাকে সুযোগ দেয়া হোক। কমিশনের যত অভিযোগ রয়েছে, তার ব্যাখ্যা দিতে পারব। সকল ডকুমেন্টস আমার কাছে রয়েছে। আমাকে সরাসরি অপসারণ করে দুদকের আসার পথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আমি আসলে ‘অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি’ হিসেবে আসতে পারব। আমার কাছে এটি খুব বিব্রতকর পরিস্থিতি যে, দুদকের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি হিসেবে হাজিরা দিতে এসেছি। আপনারা জানেন, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি আমাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য আমি অপসারিত হওয়ার পরও বিভাগীয় মামলায় হাজিরা দিচ্ছি। এটা আইনের দৃষ্টিতে কতটুকু সাম্য আমি বলতে পারব না। তবে এটা নিয়ে আমি বিব্রত। আমার বিরুদ্ধে তিনটি ডিপি চলমান রয়েছে। প্রথমটা হচ্ছে, ব্যাংক হিসাব নো-ডেবিট সংক্রান্ত, দ্বিতীয়টা নথি হস্তান্তরের বিলম্ব কেন ও তৃতীয়টা হচ্ছে বিলম্বে কর্মস্থলে যোগদান করা।

আজকের বিভাগীয় মামলার বিষয়বস্তু হচ্ছে, আমি নথি হস্তান্তরে কেন বিলম্ব করেছি। এটি তদন্তের দায়িত্বে রয়েছেন, উপ-পরিচালক মো: মশিউর রহমান। আমি সশরীরে হাজির হয়ে, যাবতীয় প্রমাণ তার কাছে দিয়েছি। এ বিষয়ে আমি বলতে চাই, আমার কাছে ১৩০টি নথিপত্র ছিল। মামলাগুলো অত্যন্ত চাঞ্চল্যকর ও হাই-সেনসিটিভ ছিল। ৬টি আলমারিতে সেগুলো ছিল। তা আরেকজনকে বুঝিয়ে দেয়া সময়সাপেক্ষ বিষয়। পটুয়াখালী থেকে আমাকে ফাইল বুঝিয়ে দিতে আসতে দেয়া হয়নি। গত ২২ আগস্ট নির্দেশনা পাওয়ার পর আমি ৫ দিন ধরে নথিগুলো বুঝিয়ে দিই। যারা ফাইলগুলো বুঝে নিয়েছেন, তাদের জিজ্ঞেস করলে মূল ঘটনা জানতে পারবেন।

তিনি বলেন, আমার ঊর্ধ্বতনদের মিসগাইড করা হয়েছে। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি চাকরিবিধি অনুযায়ী কমিশন বরাবর আদেশ রিভিউ করার জন্য আবেদন করেছি। আশা করি, কমিশন আমার আবেদন গ্রহণ করবে এবং ন্যায় বিচার পাব। এছাড়া তার বিরুদ্ধে দুদকের অভিযোগগুলোর বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে দেয়া বক্তব্যে আগের অবস্থানে অটল রয়েছেন বলেও জানান শরীফ।
প্রসঙ্গত : গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দুদক চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক আদেশে মো: শরীফ উদ্দীনকে অপসারণ করা হয়। ওই প্রজ্ঞাপনে দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধি ৫৪ (২)-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে তাকে অপসারণের কথা বলা হয়। পর দিন কমিশনের প্রধান কার্যালয়সহ ২১ জেলায় দুদকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ওই বিধি বাতিল এবং অপসারণের আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেন। পরে ২০ ফেব্রুয়ারি গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে দুদক সচিব মো: মাহবুব হোসেন শরীফকে অপসারণের ১৩টি কারণের কথা জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দুদক

২৫ জানুয়ারি, ২০২৩
৪ জানুয়ারি, ২০২৩
২৮ নভেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ