পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনা পরবর্তী সময়ে ৫ অক্টোবর ২০১৯ বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খোলার পর থেকে গত ৫ মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ৬ টি আবাসিক হলে ১০টি ঘটনায় মোট ১৮ জন শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার হয়েছে। স¤প্রতি ‘স্টুডেন্টস অ্যাগেইনস্ট টর্চার’ (স্যাট) নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সমীক্ষায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
গতকাল সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ তথ্য তুলে ধরেন সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সালেহ উদ্দিন সিফাত।
সমীক্ষার তথ্য মতে সবচাইতে বেশি নির্যাতনের ঘটনা ঘটে বিশ্ববিদ্যালয়টির এফ রহমান হলে। এই হলে গত ৫ মাসে মোট ৭ জন শিক্ষার্থী নির্যাতনের শিকার হয়। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে ৩ জন, মাস্টার দা সূর্যসেন হলে ৩, বিজয় একাত্তর হলে ৩, রোকেয়া হলে ১ ও জগন্নাথ হলে ১ জন শিক্ষার্থীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরেন সংগঠনটি। এসব ঘটনায় কারণ হিসেবে ক্রিকেট খেলা নিয়ে ফেসবুক পোস্ট, গেস্টরুমকে ইঙ্গিত করে ফেসবুক পোস্ট, রাজনৈতিক প্রোগ্রামে না যাওয়া ইত্যাদির মতো তুচ্ছ ঘটনার উল্লেখ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সালেহ উদ্দিন সিফাত বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে চলমান নির্যাতন, নিপীড়ন ও সহিংসতাকে আমরা মানবাধিকারের লঙ্ঘন হিসাবে দেখি। নাগরিকরা কোনো নির্যাতন, নিষ্ঠুর ও অমানবিক দÐের শিকার হবে না- এ প্রতিশ্রæতি দেয়া যেমন রাষ্ট্রের দায়িত্ব। তেমনি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসাবে বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্তৃপক্ষেরও দায়িত্ব শিক্ষার্থীরা যে কোনো নির্যাতন, নিপীড়ন কিংবা সহিংসতার শিকার হবে না, তা নিশ্চিত করা এবং শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা। কিন্তু আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে। এই নির্যাতনের হার সবচেয়ে বেশি আবাসিক হলগুলোর অতিথি কক্ষে। যা নির্যাতিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষার অধিকারকেও নীরবে হরণ করছে।
সিফাত জানান, স্যাট প্রতিবছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সংঘঠিত নির্যাতনগুলোর পরিসংখ্যান প্রকাশ করবে। ইতোপূর্বে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও এসব ঘটনা তথ্যবহুল আকারে কখনো প্রকাশিত হয়নি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিয়মিত নির্যাতনের ঘটনা ঘটেলেও এসব ঘটনার ভয়াবহতা সম্পর্কে আমাদের জানা সম্ভব হয়না।
তিনি বলেন, আমরা এবারের প্রতিবেদনে নির্যাতনকারীর নাম প্রকাশ করছি না। কিন্তু সামনের দিনগুলোতে আমরা নির্যাতনকারীর নাম, বিভাগ, হল এসব প্রকাশ করবো। প্রতিবেদন বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা দেবো। বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাহলে আচার্য ও মহামান্য আদালতের দ্বারস্থ হবো, রিট পিটিশান দায়ের করা হবে। এসব ঘটনায় নির্যাতনকারীর নাম উল্লেখ না করলেও তিনি বলেন, এসব ঘটনায় ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরাই জড়িত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে গত কয়েক মাসের ঘটনা সম্পর্কে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস খোলার আগে বিশ্বিবদ্যালয়ের ভিসি, প্রক্টর আশ্বাস দিয়েছিলেন যে কোন ধরনের নির্যাতনের ঘটনা ঘটবে না। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস খোলার পর নির্যাতন শুরু হয়। এসব নির্যাতনের মধ্যে মাত্র তিনটি ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কিন্তু সেগুলো নামমাত্র ব্যবস্থা। ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে প্রশাসন নির্বিাকার থাকে, বাকী ৩০ শতাংশ নির্যাতনের ঘটনায় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
সংগঠনটির কর্মীরা বলেন, নির্যাতনের মতো অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘনীয় অপরাধের ক্ষেত্রে ষান্মাসিক ও বাৎসরিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে এই প্রতিবেদন তুলে ধরছি যাতে প্রত্যেকটি নির্যাতনের ঘটনা তদন্তপূর্বক নির্যাতকদের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রাশাসনিক ও আইনী ব্যবস্থা নেয়া হয়। এই লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে গেস্টরুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে একটি প্রাশাসনিক বিধি এবং আইন তৈরি করারও প্রস্তাব রাখছি।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন প্ল্যাটফর্মটির সহপ্রতিষ্ঠাতা স্মৃতি আফরোজ সুমি, আহনাফ সায়েদ খান, আনাস বিন মনির, সাদ আরমান নাফিস প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।