Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ঠাকুরগাঁও এবং নওগাঁয় নতুন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে

হালাল পণ্য-ফ্রিল্যান্সিং অন্তর্ভুক্ত করে রফতানি নীতি অনুমোদন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ মার্চ, ২০২২, ১২:০২ এএম

ঠাকুরগাঁও এবং নওগাঁয় নতুন করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে। এজন্য দুটি আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। একই সঙ্গে হালাল পণ্য, ফ্রিল্যান্সিং, করোনার প্রেক্ষাপটে মেডিক্যাল ও ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রীকে অন্তর্ভুক্ত করে রফতানি নীতি আদেশ ২০২১-২০২৪-এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে।
গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। গণভবন প্রান্ত থেকে প্রধানমন্ত্রী এবং সচিবালয় থেকে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এতথ্য জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ঠাকুরগাঁও এবং নওগাঁ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এটা অনেকটা এ জাতীয় অন্যান্য আইনের মতো। আগেও বিভিন্ন জায়গায় যেভাবে বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে, সেই অনুযায়ী এটা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নওগাঁ জেলায় একটি পূর্ণাঙ্গ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রæতি দিয়েছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে এ আইনটি আনা হয়। এখানে ৫৬টি ধারা হয়েছে। অন্যান্য আইনের মতোই। এখানে প্রেসিডেন্ট আচার্য হবেন, উনি একজন স্বনামধন্য একজন শিক্ষাবিদকে চার বছরের মেয়াদে ভিসি হিসেবে নিয়োগ দেবেন। দু’জন থাকবেন উপ-উপাচার্য, একজন থাকবেন ট্রেজারার। উনারা প্রকৃতপক্ষে দেখাশোনা করবেন। এছাড়া অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এখানে একটি তহবিল থাকবে, রেজিস্ট্রার অফিস থাকবে। খসড়া আইনে আরও বলা হয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম ও শিক্ষাক্রম পরিচালনার জন্য বিধি-প্রবিধি করে নিতে পারবেন। বিধি ও প্রবিধিতে সবকিছু ডিফাইন করা হবে।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, একইভাবে ঠাকুরগাঁও বিশ্ববিদ্যালয় আইনের বিষয়ে গত ২০১৮ সালের ২৯ মার্চ ঠাকুরগাঁও সফরকালে প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রæতি দিয়েছিলেন ওই এলাকায় কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই সেটি করা হবে। এ আইনটিও সেইম, একই জিনিস। এখন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৫২টি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ১০৮টি।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, রফতানি নীতি ২০২১-২০২৪ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এটার উদ্যোক্তা। আমাদের রফতানি খাতে চাহিদা ও বিশ্ববাণিজ্য পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নীতি প্রণয়নের জন্য তিন বছর পর পর রফতানি নীতি পরিবর্তন করা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এটা আনা হয়েছে। ডবিøউটিও’র বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা বিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পণ্য সেবা বহুমুখীকরণে অগ্রাধিকারমূলক পণ্য সেবা খাত চিহ্নিতকরণ, রফতানি শিল্পের পশ্চাৎ ও অগ্রসংযোজন শিল্প স্থাপনে সহায়তা করা, শ্রমনির্ভর রফতানি খাতে গুরুত্ব প্রদান করা, দক্ষতা উন্নয়ন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ পরিবেশ সহজীকরণে সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণের প্রতি রফতানি নীতি ২০২১-২০২৪ এ বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, পার্টিকুলারলি গ্র্যাজুয়েশনের (স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তর) বিষয়টি এখানে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে। ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভল্যুশনে দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে। তারপর ২০২৬ এবং আরও তিন বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ইইউতে আমরা যে গ্রেস পাবো তা বিবেবচনায় রাখা হয়েছে। ইকোনমিক ডিপ্লোমেসিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আমাদের অ্যাম্বাসেডর যারা আছেন, তারা ডিপ্লোমেটিক কাজের পাশাপাশি ইকোনমিক প্রমোশন, ক্যাম্পেইন, এক্সপোর্ট-ইমপোর্টে বিশেষ দৃষ্টি দেবেন। তিনি বলেন, প্রতিটি টপিক আলাদাভাবে আলোচনা করা হয়েছে। কীভাবে আরও বেশি বিদেশি ফান্ড আনা যায়, কীভাবে এক্সপোর্ট বৃদ্ধি করা যায় তা রাখা হয়েছে। অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত খাতে কিছু সম্ভাবনাময় নতুন খাত যেমন কৃত্রিম ফাইবার, হালাল পণ্য ও ফ্যাশন, মেডিক্যাল ও ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী যেমন পিপিই, এটা তো আগে ছিল না। তারপর ফ্রিল্যান্সিং খাত অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সব খাত যেন সুবিধা পায়, নীতি আদেশে সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নারী ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের রফতানিতে সম্পৃক্ত করতে সুনির্দিষ্ট নীতি বিবেচনায় রাখা হয়েছে। ব্যবসা ও বিনিয়োগ সহজীকরণে বিশেষ দৃষ্টি রাখা হয়েছে। আমরা যেন সব প্রাইমারি গুডস যাতে দেশের বাইরে পাঠিয়ে না দেই। যেমন একটি উদাহরণ হচ্ছেÑ তুরস্ক, আমাদের কাছ থেকে র-জুট নিয়ে যায়। তারা আবার ফাইনাল প্রোডাক্ট বানিয়ে ইউরোপের বাজারে দেয়। আমরা অবশ্যই র-জুট এক্সপোর্ট করব; কিন্তু পাশাপাশি ফাইনাল প্রোডাক্ট যদি করতে পারি তাহলে ভ্যালু অ্যাড কিন্তু বেশি হচ্ছে। এগুলোকে প্রটেকশন দেওয়ার জন্য কিছু বিধিবিধান এখানে আনা হয়েছে।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, রফতানি পণ্য নিষিদ্ধ তালিকাও হালনাগাদ করা হয়েছে। আরেকটি বিষয় তিন থেকে চারমাস পর কমার্স সেক্রেটারির তত্ত¡াবধানে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়ের অবজারভেশন নিয়ে রফতানি নীতি মনিটর করা হবে এবং প্রয়োজন হলে মডিফাই করা হবে।
তিনি বলেন, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং বঙ্গোপসাগর উপক‚লের দেশগুলোর মধ্যে প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পারস্পারিক সহযোগিতার প্ল্যাটফর্ম বিমসটেক সনদের খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। তিনি বলেন, পঞ্চম বিমসটেক সম্মেলনের গৃহীত ও স্বাক্ষরের জন্য বিমসটেক সনদ মন্ত্রিসভায় দেওয়া হয়। আগামী ৩০ মার্চ শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে পঞ্চম বিমসটেক সম্মেলন হবে। এর আগেই সনদ সই করতে হবে। সনদে ১১টি অধ্যায় এবং ৩৬টি অনুচ্ছেদ রয়েছে। বাংলাদেশ বিমসটেকের সেক্রেটারিয়েট ফাংশন করবে এবং সেক্রেটারিয়েট ঢাকাতে হবে। সেজন্য এটা অনুমোদনের প্রয়োজন ছিল। এটা আইন এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দেখে দিয়েছে। বিমসটেক সনদ স্বাক্ষর করার ফলে বিমসটেকভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে একটা বাণিজ্যিক অঞ্চল গঠন করা সম্ভব হবে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার একটা বড় উন্নয়ন সাধিত হবে। এক দেশ থেকে আরেক দেশে সরাসরি ট্রাক বা অন্য মাধ্যমে মালামাল আনা নেওয়া করা যাবে। খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সবচেয়ে বড় জিনিস হলো বঙ্গোপসাগরের যে প্রাকৃতিক সম্পদ এবং অন্যান্য মিনারেলস আছে, সেগুলো সম্মিলিতভাবে ব্যবহারের সুযোগ তৈরি হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়

২১ অক্টোবর, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ