Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বিআইবিএমে ২০তম নুরুল মতিন মেমোরিয়াল লেকচার অনুষ্ঠিত

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৮:৩৬ পিএম

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টে (বিআইবিএম) ২০তম নুরুল মতিন মেমোরিয়াল লেকচার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ২০তম নুরুল মতিন মেমোরিয়াল লেকচার ‘ইথিকস ইন ব্যাংকিং’ অনুষ্ঠিত হয়। এতে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) ভাইস চেয়ারম্যান ড. সাদিক আহমেদ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএম গভর্নিং বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআইবিএম-এর মহাপরিচালক ড. মো. আখতারুজ্জামান। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বিআইবিএম-এর সহযোগী অধ্যাপক এবং পরিচালক (গবেষণা, উন্নয়ন এবং পরামর্শ) ড. আশরাফ আল মামুন।

মূল প্রবন্ধে ড. সাদিক আহমেদ বলেন, ১৯৯৭ সালের শেষের দিকেও, ব্যাংকিং খাতে অত্যন্ত দুর্নীতিগ্রস্থ এবং অদক্ষ সরকারি ব্যাংকগুলির আধিপত্য ছিল। যা মোট আমানতের ৬৭শতাংশ এবং মোট ঋণের ৬৩ শতাংশ ছিল। দুর্বল শৃঙ্খলা ও অদক্ষ ব্যবস্থাপনার কারণে এসব ব্যাংকের অনেক ঋণই খেলাপী হয়েছে। সংক্ষেপে, ব্যাংকিং নৈতিকতা তৎকালীন সময়ে বেশ দুর্বল ছিল। তবে সেই পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।

তিনি বলেন, ব্যাংকিং নৈতিকতার বিভিন্ন দিক রয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো ব্যাংকিং গভর্নেন্স। ১৯৯৮ সালে শুরু হওয়া সংস্কার কর্মসূচির আগে, ব্যাংকিং সেক্টরের প্রশাসন খুবই দুর্বল ছিল। এখন ব্যাংকিং নৈতিকতা আগের চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে। ১৯৯৮-পরবর্তী সময়ে ব্যাংকিং খাতের সংস্কারগুলি মূলত ব্যাংকিং খাতের সুশাসন ও নৈতিকতার অনেকাংশ পুনরুদ্ধার করেছিল। এ সময়ে ব্যাংকিং খাতের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন আইন কানুন, নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। এর মাধ্যমে ব্যাংকিং খাতের সামগ্রিকক অবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, ব্যাংকিংয়ে নৈতিকতার চর্চা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে পরিচালনা পর্ষদ, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার ভূমিকা পুরো ব্যাংকের পারফরমেন্সের ওপর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ব্যাংক ব্যবস্থাপনায় স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত নেয়া এবং তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে তা আদর্শ হিসেবে বিবচনা করা যায়।

তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাতের যেসব আর্ন্তজাতিক মানের চর্চাগুলোর আলোকে বাংলাদেশের ব্যাংক ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বও কর্তব্য আলাদা করে দেয়া হয়েছে। যাতে ব্যাংকিং খাতে কর্পোরেট গভর্নেন্সের চর্চা করা সম্ভব হয়।

বিআইবিএম’র মহাপরিচালক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, বিআইবিএম প্রতিবছর এ, এফ, এম, নুরুল মতিন স্মরণে মর্যাদাপূর্ণ স্মারক বক্তৃতার আয়োজন করে। এ বছর ২০তম স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ব্যাংকিং সেক্টরে প্রত্যেক বছর নৈতিকতার বিষয়ে নতুন বার্তা পেয়ে থাকে। এ বছর ড. সাদিক আহমেদ মহোদয়ের বক্তৃতা ব্যাংকিং খাতে নৈতিকতা প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে।

উল্লেখ্য, এ এফ এম নুরুল মতিন ১৯২৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫১ সালে তদানিন্তন স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের গবেষণা বিভাগে প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ১৯৬৩ সালে তাঁর চাকুরী ঐ ব্যাংকের অপারেশন বিভাগে স্থানান্তরিত হয়। বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর থেকেই বাংলাদেশের ব্যাংকিং পরিকাঠামো নির্মাণে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার ১৯৭২ এবং বাংলাদেশ ব্যাংক ন্যাশনালাইজেশন অর্ডার ১৯৭২ প্রনয়ণে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সত্তর দশক এবং পরবর্তীতে ব্যাংকিং খাতের উন্নতির জন্য নীতি নির্ধারণী বিষয়ে তাঁর অবদান উচ্চ মহলে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়। তিনি ১৯৭৮ সালে ব্যাংকিং খাতে তার অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন। ব্যাংকিং খাতে তাঁর এই অসামান্য অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। উল্লেখ্য, ব্যাংকিং খাতে নৈতিকতা শীর্ষক এ মেমোরিয়াল লেকচার ১৯৯৮ সাল থেকে চালু করেছে বিআইবিএম।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ