Inqilab Logo

শনিবার ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ২৯ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

শুধু নামেই শিল্পনগরী

নোয়াখালী বিসিক

নোয়াখালী ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০৩ এএম

নোয়াখালী সদরের সোনাপুরে ১৫ একর জমিতে ২০০৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর চালু হয় নোয়াখালী বিসিক শিল্প নগরী। কিন্তু গত দেড় দশকেও শিল্প সহায়ক পরিবেশ তৈরি হয়নি শিল্প নগরীটিতে। ফলে এখন শুধু নামেই বিসিক শিল্প নগরী। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পরিকল্পিত শিল্পায়ন গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে বেকারত্ব দূরীকরণে বিসিকটি ভূমিকা রাখবে এমনটাই প্রত্যাশা বিশিষ্টজনদের।
নোয়াখালী বিসিক শিল্প নগরীতে কর্মরত কয়েকজন জানান, বিভিন্ন সমস্যার কারণে প্রতিনিয়ত বন্ধ হচ্ছে কারখানা-প্রতিষ্ঠান। গ্যাস, পানি সংকট, চুরি-ছিনতাই ও নিরাপত্তাহীনতার কারণে বরাদ্দকৃত প্লটগুলো বছরের পর বছর খালি পড়ে আছে। বর্তমানে হাতে গোনা কয়েকটি কারখানা সচল আছে। তাও আবার এসব কারখানার উৎপাদন নিয়মিত না। বিভিন্ন সংকটের কারণে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন প্রতিষ্ঠানের মালিকরা।
জানা গেছে, শুরুতে বিসিকের ১০৮টি প্লটের মধ্যে শিল্প-কারখানা স্থাপনের জন্য ৬২টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু বরাদ্দ পাওয়ার পরও সবগুলো প্লটে গড়ে উঠেনে প্রতিষ্ঠান। কেমিক্যাল, রাবার, ওষুধ, ওয়ার্কশপ, আটা, ধান মিল, প্লাস্টিক, বোতামসহ প্রায় ৪০টির মত ছোট-বড় প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে এখানে। কিন্তু নামমাত্র প্লট বরাদ্ধ নিয়ে তাতে কিছু খুঁটি, দেয়াল আবার কেউ কেউ টিন সিডের ঘর তুলে দখলে রাখেন। পড়ে থাকা প্লটগুলো বরাদ্দ বাতিলের জন্য ভূমি বরাদ্দ কমিটিকে আবেদন দেওয়ার পর বরাদ্দ বাতিল করা হয়। যা নিয়ে পরে আগের বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিগণ নিম্ন আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলা জনিত কারণে অর্ধনির্মিত অবস্থায় রয়েছে ১০টি প্লট। ৮টি প্লটের মামলা ইতিমধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে অর্ধনির্মিত প্লট মামলা জটিলতা কাটিয়ে তা উদ্ধার করে নতুন করে বরাদ্দ দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। রাবার কারখানায় কর্মরত এক কর্মকর্তা বলেন, তাদের প্রতিষ্ঠানের সামনের সড়কটিতে কোন বিদ্যুতিক বাতি নেই। ফলে সন্ধ্যার পর থেকে প্রতিষ্ঠানের ভিতরের লাইট ছাড়া বাকি অংশটুকু অন্ধকার হয়ে থাকে। গত আড়াই মাসে তিন বার চুরির ঘটনা ঘটেছে এ প্রতিষ্ঠানে। কর্তৃপক্ষ যদি বিসিক এলাকায় পুলিশের টহল জোরদার করে তাহলে হইতো এ সমস্যার উত্তোরণ হবে বলেও মনে করেন তিনি। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের একাধিক কর্মকর্তা অভিযোগ করে বলেন, চুরির বিষয়ে বিসিক কার্যালয়ে একাধিকবার জানানো হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের চুরি রোধে নিরাপত্তার বিষয়ে জানালে বিসিক কর্তৃপক্ষ জানান নিরাপত্তার বিষয়টি তাদের দেখার বিষয় না। অথচ প্রতিমাসে চলমান প্রতিটি কারখানা থেকে নিরাপত্তা বাবদ ফি নিচ্ছে বিসিক অফিস।
হাজী প্লাস্টিকের পরিচালক মো. শহিদুল আলম জানান, বিসিকে বর্তমানে সবচেয়ে বড় সংকট হচ্ছে গ্যাসের। পর্যাপ্ত পরিমাণ গ্যাস পাওয়া গেলে এখানে বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেবে। যতদ্রুত গ্যাস পাওয়া যাবে ততদ্রুত বিসিকের উন্নতি হবে। নোয়াখালী শিল্প নগরীর ডিজিএম মাহাবুব উল্যাহ্ বলেন, বর্তমানে গ্যাসের যে সংযোগটি রয়েছে তা বাসা-বাড়িতে ব্যবহারের সংযোগ। সংযোগটি ৬ ইঞ্চি পাইপ দিয়ে গ্যাসের চাপ (প্রেসার) বাড়ানোর জন্য বাখরাবাদকে লিখিতভাবে চিঠি দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্যাসের সমস্যাটি সমাধান হবে। তিনি আরও বলেন, উদ্যোক্তারা প্লট বরাদ্দ নিয়েও নির্দিষ্ট সময়ে চালু না করার কারণে এখানে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে না। ২০১১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন প্লটের মালিকগণের আদালতে মামলা চলমান থাকার কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে উঠেনি। মামলাগুলোর মাধ্যমে ইতিমধ্যে ৮টি মামলার রায় আমাদের (বিসিক) পক্ষে এসেছে। নতুন উদ্দ্যোক্তাদের উদ্ধারকৃত প্লটগুলো বরাদ্দ দেওয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নোয়াখালী বিসিক

২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ