গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
বাঙালি জাতির ইতিহাসে ভাষা আন্দোলন একটি অবিস্মরণীয় ঘটনা। এ আন্দোলন শুধু মাতৃভাষার অধিকার আদায়ের আন্দোলন ছিল না, বরং নিজস্ব জাতিসত্তা, স্বাধিকার প্রতিষ্ঠা ও সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র রক্ষারও আন্দোলন ছিল। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ধাপে ধাপে বাঙালির স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম বেগবান হয়েছে এবং একাত্তরে স্বাধীনতা অর্জনের মাধ্যমে তা পূর্ণতা পেয়েছে।
রোববার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে “বাংলা ভাষার গৌরবময় ইতিহাস জাতীয় মুক্তির পথ” শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। দেশের প্রবীণ সাংবাদিক দৈনিক নয়াদিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক এবং মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. আব্দুর রব। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহঃ অধ্যাপক ও বিশিষ্ট শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আতিয়ার রহমান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি বিশিষ্ট সাংবাদিক কাদের গণি চৌধুরী, বিশিষ্ট কবি মোশাররফ হোসন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে আলমগীর মহিউদ্দিন বলেন, সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারদের রক্তের বিনিময়ে বাংলা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পেয়েছিল, ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলনের ওই অঙ্গীকার থেকে দূরে সরে এসে বাংলাভাষাকে লাঞ্ছিত করা যাবে না। ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যুদয়- এই সত্যটি আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। ভাষা মানুষের বিচ্ছিন্নতা দূর করে, পরস্পরকে ঐক্যবদ্ধ করে। কাজেই দেশ ও জাতির ঐতিহাসিক প্রয়োজনে বাংলাভাষা চর্চাকে বিকশিত ও উন্নত করাই হবে আমাদের অন্যতম কর্তব্য।
আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক এবং মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. আব্দুর রব বলেন, মাতৃভাষা মানুষের জন্মগত অধিকার। মানুষ যে দেশে জন্মগ্রহণ করে সে দেশের ভাষাই তার মাতৃভাষা। জন্মগতভাবে আমরা বাংলাদেশী আর বাংলা আমাদের মাতৃভাষা। এ ভাষার ইতিহাস ও আন্দোলন অত্যন্ত দীর্ঘ। আজকে বাংলা ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে বিকৃত করা হচ্ছে। আমাদেরকে ভাষা আন্দোলনের সঠিক ইতিহাস জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে। বাংলা ভাষা নিয়ে যুব সমাজকে গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
সেমিনারে প্রবন্ধকার ড. মুহাম্মাদ আব্দুল মান্নান বলেন, উদ্ভট উটের পিঠে চলছে স্বদেশ। ভাষা আন্দোলনে যেমন সকল শ্রেণী পেশার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাবি আদায় করেছিল, ঠিক তেমনি আজকে দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন, ভোটাধিকার, বাকস্বাধীনতা ও ধর্মীয় অনুশাসন প্রতিষ্ঠায় সকলকে দল-মত ও শ্রেণী-পেশার উর্ধ্বে উঠে ভাষা আন্দোলনের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে ঝাপিয়ে পড়তে হবে। তাহলেই এ জাতীর মুক্তি সম্ভব।
কাদের গণি চৌধুরী বলেন, বাংলা আমাদের প্রাণের ভাষা। এই ভাষার অধিকার রক্ত দিয়ে আমরা অর্জন করেছি। একুশ আমাদের শিখিয়েছে শোষনের বিরুদ্ধে লড়াই ও সংগ্রাম করতে। ১৯৫২ সালে তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী আমাদের বাক স্বাধীনতাকে কেড়ে নেওয়ার চেস্টা করেছিল, একইভাবে আজ ২০২২ সালে এসেও সিকিউরিটি এ্যাক্ট নামে আমাদের কথা বলার স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হয়েছে। নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য আমাদের আবারও প্রচেষ্টা চালাতে হবে। এব্যাপারে দেশের জনগণকে সচেতন ও সোচ্চার হতে হবে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সহকারী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুল মান্নান।
1 Attached Images
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।