Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইউক্রেন আক্রমণের নেপথ্যে ‘ধর্মীয়’ কারণ!

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৪:২৩ পিএম

তিন দশক আগে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে তৈরি হওয়া দেশগুলির মধ্যে অন‌্যতম ইউক্রেন। হঠাৎ কেন এতদিন পর রুশ প্রেসিডেন্ট ইউক্রেন আক্রমণ করলেন তার পিছনে একাধিক যুক্তি ও তত্ত্ব কাজ করছে। কারও বক্তব‌্য আমেরিকার হাতের পুতুল প্রেসিডেন্টকে সরিয়ে দিতে এই হামলা চালিয়েছেন পুতিন। কারও বক্তব‌্য, তিন দশক আগে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া রাষ্ট্রগুলিকে আবার একজোট করতে চাইছেন তিনি। আর তৃতীয় একটি তত্ত্ব বলছে, প্রাচীন রুশ ‘অর্থোডক্স চার্চ’ ফের চালু করতে চাইছেন প্রেসিডেন্ট।

হঠাৎই সীমা অতিক্রম করে ইউক্রেনের ভিতর ঢুকে রুশ সেনার হামলা নিয়ে গত তিনদিনে উত্তপ্ত গোটা বিশ্বই। কিন্তু ধর্মীয় যে যোগটি মিলছে সেই তত্ত্বে রয়েছেন পুতিনেরই এক নেমসেক- তিনিও ভ্লাদিমির তবে নামের আগে একটা সেন্ট রয়েছে। এই সন্ত ভ্লাদিমির-ওয়ান প্রায় এক হাজার বছর আগের মানুষ। তার হাত ধরেই যেমন রুশ সাম্রাজ্যের পত্তন তেমনই রাশিয়ান অর্থোডক্স চার্চও।

বর্তমান ইউক্রেনীয় রাজধানী কিয়েভ বা কিভ বা কেভ শহর থেকেই তিনি তার কর্মকাণ্ড চালাতেন। ধর্মবিশ্বাসী নয় এমন মানুষদের আস্তিক করে একটি রাষ্ট্র তৈরির ভাবনা ছিল সেন্ট ভ্লাদিমিরের। একদা নিজে নাস্তিক থাকা সেন্ট ভ্লাদিমির বাইজেনস্টাইন রাজপরিবারের কন‌্যাকে বিয়ে করে খ্রিস্ট ধর্ম গ্রহণ করেন। পরে তার হাত ধরেই রুশ অর্থডক্স চার্চ ব‌্যবস্থা ব‌্যপ্তি লাভ করে। পরে আরও এক ভ্লাদিমিরের হাত ধরেই রাশিয়ায় অর্থোডক্স চার্চ ব‌্যবস্থার পতন হয়, সেটা ১৯১৭ সাল। আর এই ভ্লাদিমির হলেন বলশেভিক বিপ্লবের নায়ক লেনিন। আরও এক ভ্লাদিমির, যার শেষ নাম পুতিন, তার হাত ধরেই ফের কি ধর্মীয় বদল আসছে রাশিয়ায়? এমনটাই মত একাংশের।

পুতিনের পরিবারের পূর্বতন সদস‌্যরা সকলেই জোসেফ স্তালিনের অন্ধ অনুগামী ছিলেন। পুতিনের বাবা কট্টর নাস্তিক হলেও মা ছিলেন অনুগত খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী। বাবাকে লুকিয়ে মা পুতিনকে ব‌্যাপটাইজডও করেন বলে জানা যায়। এমনকী তিনি ক্রশও পরেন বলে কিছু ছবিতে ধরা পড়েছিল। কয়েকবছর আগে সাইবেরিয়ায় মাছ ধরার সময় পুতিনের কিছু ঊর্ধাঙ্গ অনাবৃত ছবি প্রকাশিত হয় যেখানে তার গলায় ক্রশ দেখা গিয়েছে। ছবিগুলি ভাইরাল হয়েছিল।

ধর্মীয় ইতিহাসবিদ ডায়না বাটলার ইউক্রেনে রুশ অনুপ্রবেশকে উল্লেখ করেন, ‘পুরনো গল্পের নতুন মোড়ক’ বলে। অর্থাৎ একসময় সেন্ট ভ্লাদিমির যেমন এই অঞ্চলে এসে নাস্তিক থেকে ধর্মানুরাগী হয়ে পড়েন তেমনই রুশ প্রেসিডেন্টও করতে চলেছেন বলে ধর্মবিশ্বাসীদের অভিমত। কিয়েভে ফের পবিত্র খ্রিস্টধর্ম স্থাপিত হতে চলেছে বলে দাবি আস্তিকদের।

এদিকে, ইউক্রেনে যুদ্ধের আবহে প্রোটোকল ভেঙে রাশিয়ার দূতাবাসে পৌঁছলেন পোপ ফ্রান্সিস। রাশিয়ার আগ্রাসন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মস্কোর রাষ্ট্রদূতের হাতে তুলে দিলেন বার্তা। রুশ দূতাবাসে আধ ঘণ্টারও বেশি সময় কাটান পোপ। ভ্যাটিক্যানের মুখপাত্র মাত্তিও ব্রুনি জানিয়েছেন, যুদ্ধ নিয়ে তার উদ্বেগ প্রকাশ করতেই এই পদক্ষেপ করেছেন পোপ। রুশ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে তার কী কথা হয়েছে, সে বিষয়ে ব্রুনি মুখ খুলতে চাননি।

আর্জেন্তিনীয় সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, এই সংকটে মধ্যস্থতার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন ৮৫ বছর বয়স্ক ধর্মগুরু। তবে রুশ সংবাদ সংস্থা তাস-এর রোম সংবাদদাতা জানাচ্ছেন, এই খবর অস্বীকার করেছেন রুশ রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার আদেইয়েভ। তার কথায়, ইউক্রেনে সাধারণ মানুষের দুর্দশা নিয়েই মূলত তাদের মধ্যে কথা হয়েছে।

 



 

Show all comments
  • Md saiful ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৭:০৬ পিএম says : 0
    বাইডেন ক্ষমতায় আসার এক বছরের মাথায় উসকে দিয়ে যুদ্ধ বাধিয়ে দিলো। ইউক্রেন বোকামির পরিচয় দিয়ে নিজের প্রতিবেশী রাশিয়ার সাথে সুসম্পর্ক না রেখে আমেরিকার সাথে সুসম্পর্ক রেখেছিল। এজন্য ফিদেল ক্যাস্ট্রো বলেছিলেন, ”আমেরিকা যার বন্ধু- তার আর শত্রুর দরকার হয় না!”
    Total Reply(0) Reply
  • Azharul Islam Khan ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৭:০৬ পিএম says : 0
    পাগলের প্রলাপ
    Total Reply(0) Reply
  • Md Saidul Alam Sadi ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৭:০৬ পিএম says : 0
    Go Go Rassia back To Ukraine and back To NATO
    Total Reply(0) Reply
  • Mominul Hoque ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:৫২ পিএম says : 0
    যুদ্ধবাজ শান্তি বিনষ্টকারীদের উসকানিতে মানবতা ভুলুন্ঠিত। ইউক্রেন বোকামির পরিচয় দিয়ে নিজের প্রতিবেশী রাশিয়ার সাথে সু-সম্পর্ক না রেখে সু-দূরবর্তী স্বর্থপরদের শুভাকাঙ্খী ভেবেছে। এজন্য ফিদেল ক্যাস্ট্রো বলেছিলেন, ”আমেরিকা যার বন্ধু- তার আর শত্রুর দরকার হয় না!” পরবর্তী কখনো যদি পশ্চিমাদের সাথে রাশিয়ার যুদ্ধ বাঁধে তাহলেও তারা এই ইউক্রেইনকেই তাদের যুদ্ধ ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করবে। তাই তারা তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ইক্রেইনকে মুলা দেখাচ্ছে। আমরা যুদ্ধ চাই না, আমরা শান্তি চাই। চাই সবার সাথে বন্ধুত্ব!
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ