Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নির্মিত হচ্ছে ফসল রক্ষা বাঁধ

নেত্রকোনার হাওরাঞ্চল

এ. কে. এম. আব্দুল্লাহ, নেত্রকোনা থেকে | প্রকাশের সময় : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:২৩ এএম

আগাম বন্যা বা পাহাড়ি ঢলের হাত থেকে নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলের ফসল রক্ষার লক্ষ্যে পিআইসির মাধ্যমে ডুবন্ত বাঁধের নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। এখন পর্যন্ত ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ প্রায় ৮০ ভাগ শেষ হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের আশাবাদ, পাহাড়ি ঢল বা আগাম বন্যার পানি আসার আগেই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এ সকল বাঁধের নির্মাণ কাজ শেষ হবে।

নেত্রকোনা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছর আকস্মিক পাহাড়ি ঢল বা আগাম বন্যায় হাওরাঞ্চলের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। হাওরাঞ্চলের ফসল রক্ষায় ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে জেলার ১০ উপজেলার মধ্যে ৯ উপজেলার ৯টি হাওরে ২৩ কোটি ৬ লাখ টাকা ব্যায়ে ১শ’ ৭৫টি পিআইসির মাধ্যমে ১শ’ ৮৩ কিলোমিটার ডুবন্ত বাঁধ বা বেড়িবাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহন করেছে। ১৫ নভেম্বরের মধ্যে পিআইসি গঠনের মাধ্যমে বাঁধের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি মধ্যে বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা। ইতোমধ্যে বাঁধের নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। এর মধ্যে খালিয়াজুরি উপজেলাতেই ৬২টি ডুবন্ত বাঁধ বা বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে।

নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় এ বছর ১ লাখ ৮৪ হাজার ৮শ’ ২৮ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি জমিতে বোর ধান কৃষকরা আবাদ করেছে। হাওরাঞ্চলেই ৪০ হাজার ৯শ’ ৬০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে।

খালিয়াজুরি উপজেলার ইছাপুর গ্রামের কৃষক সঞ্জয় চৌধুরী বলেন, হাওরাঞ্চলের কৃষকদের সারা বছরের একমাত্র ফসল হচ্ছে বোরো ধান। প্রতি বছর আগাম বন্যায় হাওরের ফসল তলিয়ে যাওয়ায় আমাদের পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে হয়।

বোয়ালী গ্রামের আবুল কালাম জানান, আমরা প্রতি বছর মহাজনের কাছ থেকে চড়া সুদে দাদন নিয়ে চাষাবাদ করে থাকি। আগাম বন্যায় ফসল তলিয়ে গেলে জমি-জমা বিক্রি করে মহাজনের সুদ পরিশোধ করতে হয়।
জগন্নাথপুর গ্রামের কৃষক নির্মল কান্তি সরকার বলেন, হাওর এলাকাতেই সবচেয়ে বেশি বোরো আবাদ হয়ে থাকে। ফসল ঘরে উঠলে আমাদের কোন চিন্তা ভাবনা থাকে না। পরিবার পরিজন নিয়ে সুন্দরভাবে দিনযাপন করতে পারি।

এ ব্যাপারে হাওরাঞ্চলের কৃষকরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের কাছে নির্ধারিত সময়ের মধেই সঠিকভাবে ফসল রক্ষা বাঁধের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার জোর দাবি জানান।

নেত্রকোনা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এবং জেলা পিআইসি কমিটির সদস্য সচিব এম এল সৈকত বলেন, হাওরাঞ্চলের কৃষকদের একমাত্র বোরো ফসল রক্ষায় সরকার প্রতি বছর বাঁধ নির্মাণে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দিয়ে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় খালিয়াজুরি, মদন, মোহনগঞ্জ ও কলমাকান্দা উপজেলার হাওর এলাকায় বিভিন্ন ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। প্রায় প্রতিদিন হাওরে গিয়ে আমরা সরজমিনে বাঁধের নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করছি। কোথাও কোন অনিয়ম বা ত্রুটি পরিলক্ষিত হলে সঙ্গে সঙ্গে পিআইসিকে দ্রুত সেসব ত্রুটি সাড়িয়ে ফেলার নির্দেশ দিচ্ছি। আমি আশা করছি, আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সকল বাঁধের নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নেত্রকোনার হাওরাঞ্চল

২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ