Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

বিদ্যুৎ কেন্দ্র যেভাবে হয়ে গেল অভিনব সংস্কৃতি কেন্দ্র

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৪:৩৯ পিএম | আপডেট : ৫:১৫ পিএম, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

ছিল বিদ্যুৎ কেন্দ্র, হয়ে উঠলো সংস্কৃতি কেন্দ্র৷ মস্কোর কেন্দ্রস্থলে জিইএস-২ সংস্কৃতি কেন্দ্রের কর্মকাণ্ড দেখলে সত্যিই চমক লাগে৷ এ রূপান্তর প্রক্রিয়া সত্যি চমকপ্রদ৷

জিইএস-২-এর বিশাল ভবনটি ক্রেমলিন ও মস্কোর ঐতিহাসিক কেন্দ্রস্থল থেকে বেশি দূরে নয়৷ ১৯০৭ সালে তেলচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র হিসেবে স্থাপনাটি যাত্রা শুরু করেছিল৷ এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে সেখান থেকে মস্কোর ট্রামগুলিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো৷ ২০১৭ সালে স্থাপনাটির পুনর্গঠন শুরু হয়৷রাশিয়ার এক ধনকুবের সেই উদ্যোগের ব্যয়ভার বহন করেছিলেন৷ টাকার অঙ্ক গোপন রাখা হলেও বেশ কয়েক কোটি ইউরো ব্যয় করা হয়েছিল বলে অনুমান করা হয়৷

শুধু স্থাপত্যই অসাধারণ নয়, এই সংস্কৃতি কেন্দ্রের কর্মসূচিও প্রায় সব রকম দর্শক আকর্ষণ করে৷ সাবেক এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রাঙ্গণে প্রদর্শনীর জায়গা ছাড়াও কনসার্ট হল রয়েছে, যেটিকে সিনেমা হিসেবেও কাজে লাগানো হয়৷ তরুণ শিল্পীদের জন্য ওয়ার্কশপ এবং একটি লাইব্রেরিও রয়েছে৷

অভিনব এই স্থাপত্যের মধ্যে শিল্পের প্রায় সব শাখার সহাবস্থান এবং শহরের মানুষের সঙ্গে সংযোগ কেন্দ্রটিকে আকর্ষণীয় করে তুলছে৷ একশ বছরেরও বেশি সময় ধরে জিইএস-২ চালু আছে৷ মস্কোর সংস্কৃতির ধারক ও বাহক হিসেবে পরিচিত সেটি৷ ভেতরের অংশ উন্মুক্ত ও উজ্জ্বল৷ নাটক, সংগীত, পারফর্ম্যান্স, চিত্রশিল্প ও ভিডিও আর্টের বিশাল প্রাঙ্গন এটি৷ ইটালির তারকা স্থপতি রেনসো পিয়ানোর তৈরি এই স্থাপনা রাশিয়ার রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত৷ সব মানুষ ও শিল্পশাখার জন্যই এর দ্বার খোলা৷

আর্ট ডায়রেক্টর হিসেবে ফ্রানচেস্কো মানাকোর্ডার জন্য ভবনটি ভালোভাবে কাজে লাগানোর দায়িত্ব চ্যালেঞ্জে ভরা৷ তিনি বলেন, ‘এই ভবনের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো স্পেসের বহুমুখী ব্যবহার৷ যেখানেই আমরা কনটেন্ট তৈরি করি, সেই সব অংশকে গ্যালারি, থিয়েটার, কনসার্ট অথবা সিনেমা হলে পরিণত করা যায়৷ নতুন ভবনটিকে আমাদের ভালো করে বুঝতে হচ্ছে৷ নতুন কফি মেশিন কিনলে যেমন সেটির ব্যবহার শিখে নিতে হয়৷ ব্যাপারটা বেশ জটিল৷ ৩৫,০০০ বর্গ মিটার যেন ট্রান্স-অ্যাটলান্টিক মাত্রার সঙ্গে তুলনা করা যায়।’

৭০ মিটার উঁচু চারটি চিমনি স্থাপনাটির আদি রূপের কথা মনে করিয়ে দেয়৷ আজ দূষিত ধোঁয়ার বদলে চিমনিগুলিকে বাতাস চলাচলের জন্য ব্যবহার করা হয়৷ সেটি ভবনটির নতুন খোলামেলা পরিবেশের প্রতীক বলে সংস্কৃতি কেন্দ্রের অন্যতম স্থপতি আনা প্রোকুদিনা মনে করেন৷ প্রকল্পের অন্যতম স্থপতি আনা প্রোকুদিনা বলেন, ‘‘আমরা এই স্পেস এমনভাবে পরিকল্পনা করেছি, যাতে বিভিন্ন অংশের মধ্যে কোনো স্পষ্ট বিভাজন না থাকে৷ সব অংশ যেন একে অপরের সঙ্গে মিশে যেতে পারে৷ নীচের তলা পুরোপুরি খোলা, দুই দিক থেকেই শহর দেখা যায়৷ আমাদের কাছে সেটা অত্যন্ত জরুরি ছিল৷ কারণ সংস্কৃতি কেন্দ্রকে সব সময়ে শহরের সঙ্গে সংযোগ বজায় রাখতে হয়৷''

একেবারে প্রথম দিকের একটি প্রকল্প দর্শকদের নাগালেই রয়েছে৷ আইসল্যান্ডের এক শিল্পী কয়েক মাস ধরে ‘সান্টা বারবারা' নামের অ্যামেরিকার সোপ অপেরার রুশ সংস্করণ মঞ্চায়ন করেছেন৷ সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাবার পর অন্যতম প্রথম মার্কিন ধারাবাহিক হিসেবে রুশ টেলিভিশনে দেখানো হয়েছিল বলে সেটির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে৷

জিইএস-২ ভবনে কোনো প্রবেশমূল্য নেই৷ ‘সবার জন্য সংস্কৃতি' হলো মূলমন্ত্র৷ এই মৌলিক গণতান্ত্রিক ভাবনা মস্কো শহরের মাঝে ঐতিহাসিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিকে নতুন শক্তিতে ভরপুর করে তুলছে৷ সূত্র: ডয়চে ভেলে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ