পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চল্লিশ লাখ টাকা ঘুষ লেনদেন মামলায় পুলিশের বরখাস্ত ডিআইজি মিজানুর রহমানকে ৩ বছর এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বরখাস্ত হওয়া পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে ৮ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া ৮০ লাখ অর্থদণ্ডও দেয়া হয় তাকে। রায়ে মিজানকে ঘুষ প্রদানের দায়ে দণ্ডিত করা হয়। এনামুল বাছিরকে দণ্ডিত করা হয় ঘুষ গ্রহণের দায়ে।
গতকাল বুধবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এ রায় দেন। রায় ঘোষণাকালে মিজান এবং এনামুল বাছিরকে কারাগার থেকে এনে এজলাসে উপস্থিত করা হয়। দুর্নীতি দমন কমিশন এ মামলা দায়ের করে। রায় ঘোষণার পর ঘুষ প্রদানের অভিযোগে ৩ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত মিজানুর রহমান বলেন, এ রকম অনেক বাছির দুদকে রয়েছে। তাদের খুঁজে বের করুন।
আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণাকালে কাঠগড়ায় বসে রায় শোনেন মিজান ও এনামুল বাছির। এ সময় এনামুল বাছিরকে অনেকটা চিন্তিত দেখা যায়। কিন্তু মিজান ছিলেন ফুরফুরে মেজাজে স্বাভাবিক। বিচার কার্যে দুদকের পক্ষে অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল শুনানি করেন। আসামিপক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এহসানুল হক সমাজী।
রায়ের পর মোশাররফ হোসেন কাজল সাংবাদিকদের জানান, আদালত মিজানকে ঘুষ প্রদানের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। এনামুল বাছিরকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে ঘুষ গ্রহণের দায়ে। এ কারণে মিজানকে দণ্ডবিধির ১৬১ ধারায় এবং বাছিরকে দণ্ডবিধির ১৬৫ (এ) ধারায় ৩ বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। এছাড়া মানি লন্ডারিং আইনের ৪(২) ধারায় বাছিরকে আরও ৫ বছর কারাদণ্ড ও ৮০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
বাছিরের দু’টি দণ্ডই একসঙ্গে গণনা করা হবে-মর্মে জানান এই আইনজীবী। তবে ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় দু’জনই দোষী সাব্যস্ত হলেও একই ধরণের অভিযোগে দণ্ডিত হওয়ায় এই ধারায় কাউকেই সাজা দেয়া হয়নি। ঘোষিত এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানান এ আইনজীবী।
এর আগে ৪০ লাখ টাকার ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগে ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্লাহ বাদী হয়ে মামলা করেন। ২০২০ সালের ১৯ জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন শেখ মো. ফানাফিল্লাহ। ওই বছর ৯ ফেব্রুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ। পরে আদালত অভিযোগ গঠনের তারিখ দিয়ে মামলা ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বদলির আদেশ দেন। ২০২০ সালের ১৮ মার্চ আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।
মামলা রায় প্রদানকালে বিচারক শেখ নাজমুল আলম পর্যবেক্ষণে বলেন, মিজানুর রহমান ও খন্দকার এনামুল বাছির ছিলেন সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তাদের মতো অবস্থানে থেকে এভাবে ঘুষ লেনদেনের ঘটনায় জড়িত হওয়ার ব্যাপারটি পুরো জাতিকে হতবাক করেছে। তারা সব সরকারি কর্মকর্তার সম্মান নষ্ট করেছেন।
উল্লেখ্য, ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার থাকাকালে বিয়ে গোপন করতে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্ত্রীকে গ্রেফতার করানোর অভিযোগ ওঠে ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে। এছাড়া এক সংবাদ পাঠিকাকে প্রাণনাশের হুমকি ও উত্যক্ত করার অভিযোগে মিজানুরের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। নারী নির্যাতনের অভিযোগে ২০১৯ সালের জানুয়ারির শুরুর দিকে তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত করা হয়। ওই বছরের ২৪ জুন সম্পদের তথ্য গোপন ও অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মিজানুরের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। এর অনুসন্ধান কর্মকর্তা ছিলেন দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির।
তদন্ত চলাকালে ডিআইজি মিজান অভিযোগ করেন, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থেকে রেহাই দিতে দুদকের পরিচালক এনামুল বাছির তার কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন। এ অভিযোগ ওঠার পর বাছিরকে সরিয়ে দুদকের আরেক পরিচালক মো. মঞ্জুর মোরশেদকে অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়। ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে শেখ মো. ফানাফিল্যাকে প্রধান করে তিন সদস্যের টিমকে অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেয়া হয়।
পরবর্তীতে শেখ ফানাফিল্লাকেই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়। ২০২০ সালের ১৯ জানুয়ারি শেখ ফানাফিল্যা চার্জশিট দেন। দাখিল করেন। একই বছর ১৬ এপ্রির আদালত দুই আসামির অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। গত বছরের ১৯ আগস্ট মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। চলতি বছর ২৪ জানুয়ারি একই আদালতে যুক্তি উপস্থাপন করে দুদক। যুক্তি উপস্থাপন শেষে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রত্যাশা করেন দুদকের আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল। মামলা থেকে খালাস চান আসামিপক্ষের অ্যাডভোকেট এহসানুল হক সমাজী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।