গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
ভাষার জন্য আন্দোলন ছিল বিশ্বের ইতিহাসে এক নজির বিহীন ঘটনা। যে আন্দোলনের ফলে আজ ৩০ কোটি মানুষ এ ভাষায় তাদের মনের ভাব প্রকাশ করতে পারছে। ভাষা শহীদদের মনের আকুতি ছিল, এ ভাষাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেয়া হবে, সর্বত্র এর প্রচলন করা হবে, ক্রমান্বয়ে এর উন্নয়ন সাধন করা হবে। শহীদদের রক্তের বিনিময়ে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেয়া হয়েছে বটে কিন্তু সর্বত্রে এ ভাষা চর্চা ও এর সমৃদ্ধ করণে আজও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। স্বাধীনতা উত্তর এই দীর্ঘ সময়ে রাষ্ট্র তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেনি। এটা ভাষা শহীদদের রক্তের সাথে স্পষ্ট বেঈমানী ছাড়া আর কিছুই নয়।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে আজ সোমবার রাজধানীর গুলশানের একটি অডিটোরিয়ামে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (আইএবি) ঢাকা মহানগর উত্তর কর্তৃক আয়োজিত ‘সর্বত্র বাংলা ভাষা চর্চা ও সমৃদ্ধ করণে রাষ্ট্রের করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাংলা বলতে গিয়ে ইংরেজি কিংবা হিন্দি বলার একটা বিচিত্র প্রবণতা দেখা যায়। অনেক ছেলে মেয়ের মাঝে এখন এটা সংক্রামক ব্যাধির মত ছড়িয়ে পড়েছে। এভাবে কথা না বললে যেন তাদের আভিজাত্য নষ্ট হয়ে যায়। অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে হয়, এখনও আমাদের আদালতে দাঁড়িয়ে বিচারপতিকে সম্বোধন করা হয় ‘মাই লর্ড’ বলে। দেশের অপেক্ষাকৃত ধনী ব্যক্তিরা ছেলেমেয়ে ও নাতি নাতনিদের ইংরেজি মাধ্যম স্কুল ছাড়া অন্য কোথাও পড়াতে চান না। অথচ এই বাঙ্গালী জাতিই ১৯৫২ সালে ভাষার জন্য যুদ্ধ করেছিল। ভিনদেশি ভাষা আজ ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। মনে রাখতে হবে, ইসলাম মাতৃভাষার প্রতি যত্মবান হওয়ার প্রতি অত্যাধিক গুরুত্ব দিয়েছে। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘আমি আরবের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিশুদ্ধভাষী।’ মাতৃভাষার বিশুদ্ধতার জন্য তাকে শিশুকালে শহর ছেড়ে গ্রামে রেখে আসা হয়েছিল। বাংলা ভাষার প্রতি এদেশের মানুষের উদাসীনতা মাতৃভাষাকে অবজ্ঞা এবং ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগকে অবমূল্যায়ন করার শামিল। তিনি বলেন, অন্য ভাষা শেখা দোষের কিছু না। কিন্তু মাতৃভাষাকে ভুললে চলবে না।
সভাপতির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, ১৯৫৫ সালের ৩ ডিসেম্বর বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ‘জাতীয় আশা আকাঙ্খার সাথে সঙ্গতি রেখে বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির উন্নয়ন, লালন ও প্রসার’ করার জন্য। স্বাধীনতা উত্তর দীর্ঘ এ সময়টাতেও বাংলা একাডেমি তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করলে দেশের অভ্যন্তরে ও বিশ্ব সাহিত্যের আসরে বাংলা ভাষার এত দীনতা থাকেনা। তারা তাদের কাজটুকু করতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এর সবটুকু দায় সরকারকেই নিতে হবে।
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রেসিডিয়ামের সদস্য জাতীয় শিক্ষক ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, গুলশান কমার্স কলেজের প্রিন্সিপাল এম এ কালাম, ঢাকা মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি মাওলানা আরিফুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার মুরাদ হোসেন, মুফতী ফরিদুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার গিয়াস উদ্দিন পরশ, অ্যাডভোকেট শওকত আলী। সভা শেষে মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার লড়াইয়ে শাহাদাৎবরণ কারীদের জন্য বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।