পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিজ্ঞান বিষয়ক পড়াশোনাকে ‘সহজ বাংলায়’ শিক্ষার্থীদের কাছে তুলে ধরতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি উদ্যোগ গ্রহণের আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, বিজ্ঞান গবেষণা এবং গবেষণালব্ধ জ্ঞান যেন মানুষের কাজে ব্যবহার হয়। বিজ্ঞানের আবিষ্কার ও বৈজ্ঞানিক শব্দগুলো দুর্বোধ্য না করে বহুল পরিচিত প্রচলিত শব্দগুলো ব্যবহার করতে হবে। গতকাল সোমবার মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২২ উপলক্ষে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট আয়োজিত অনুষ্ঠানে (ভার্চ্যুয়াল) তিনি এই আহবান জানান।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।
বিজ্ঞানের প্রসারে বিজ্ঞান শিক্ষাকে ‘সহজ বাংলায়’ প্রকাশের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিজ্ঞানের যুগে নতুন নতুন যে আবিষ্কার হয় সেগুলো কীভাবে আমাদের দেশের মানুষের কাছে সহজভাবে আমাদের ভাষায় ব্যবহার করার জন্য আরও সুযোগ সৃষ্টি করা যায় সে বিষয়টা দেখতে হবে।
বিজ্ঞানের পরিভাষা করার ক্ষেত্রে রক্ষণশীল না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সব জায়গায় আমাদের প্রতিশব্দ করতে হবে, পরিভাষা করতে হবে আমিও এটা বিশ্বাস করি না। কারণ বিজ্ঞানের যুগে বিজ্ঞান যেভাবে বিস্তার লাভ করছে সেখানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ভাষাই কিন্তু আছে। ইংরেজি, ফ্রেঞ্চ বা অন্য ভাষাও রয়েছে, যা এর ভেতর যুক্ত হয়ে গেছে। আর আমাদের বাংলা ভাষায় কিন্তু আট হাজার ভাষার শব্দ মিলে মিশে গেছে। কাজেই এ ব্যাপারে আমাদের খুব রক্ষণশীল না হয়ে প্রচলিত যে শব্দগুলো, প্রচলিত বিজ্ঞানে যে টার্মসগুলো সেগুলো দিয়েই কিন্তু বাংলা ভাষায় সহজভাবে বিজ্ঞান শিক্ষার ব্যবস্থাটা করা যেতে পারে। প্রচলিত যে সমস্ত বৈজ্ঞানিক শব্দগুলো সেগুলোর পরিভাষা করে আরও দুর্বোধ্য করে না ফেলাই ভালো। সেগুলো আমাদের বাংলা শব্দের সঙ্গে বাংলা ভাষার সঙ্গে মিশে যাবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজ্ঞান শিক্ষা, বিজ্ঞান গবেষণা, গবেষণালব্ধ যে সমস্ত জ্ঞান সেটা মানুষের কাজে যেন ব্যবহার হয়। এটা সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের ছেলে মেয়েরা অত্যন্ত মেধাবী উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি আমাদের ছেলে- মেয়েরা অত্যন্ত বিজ্ঞান মনস্ক। অনেক মেধাবী। এ মেধা বিকাশের সুযোগ করে দিলে তারা অসাধ্য সাধন করতে পারে।
গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, প্রতিটি ক্ষেত্রে গবেষণা একান্ত দরকার। আমাদের স্বাস্থ্য বিষয়ে, শিক্ষা বিষয়ে, বিজ্ঞানের অন্যান্য দিক, এমনকি শিল্প বিষয়ে। সব বিষয়ে কিন্তু গবেষণা একান্তভাবে দরকার।
ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরির ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের কম্পিউটার ও ইন্টারনেটে বাংলা কনটেন্ট তৈরি করা বা বাংলা ভাষাটা ব্যবহার করা। শিক্ষকদের কনটেন্ট তৈরি করার জন্য আমরা প্রশিক্ষণও দিয়েছি। তারা নিজেরাই যেন কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন।
বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসারে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম এখন করেছি, আমরা কম্পিউটার ল্যাব তৈরি করে দিচ্ছি। আমাদের ছেলে-মেয়েরা যাতে এ শিক্ষা পায় তার ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। তিনি বলেন, কম্পিউটার শিক্ষার ওপর আমরা গুরুত্ব দেই এবং আমাদের দেশের মানুষকে আমরা উদ্বুদ্ধ করি। যে এটা শিখতে হবে। আমাদের বিজ্ঞানের সঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে। আমরা পিছিয়ে যেতে পারি না। প্রযুক্তি শিক্ষা আমাদের নিতে হবে। প্রযুক্তি শিক্ষা ছাড়া আমরা এগুতে পারি না।
সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট করেছি। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিলুপ্তপ্রায় ভাষা সংরক্ষণ ও মর্যাদা রক্ষার উদ্যোগ নিয়েছি। তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করেছি। সবাই এখন মোবাইলে এসএমএসসহ নানা সেবায় বাংলা লিখতে পারে। নৃগোষ্ঠীদের ভাষা ও বর্ণমালাকে বিলুপ্তি থেকে রক্ষার জন্য ২০১৭ সাল থেকে তাদের ভাষায় পাঠ্যপুস্তক প্রবর্তন করেছি। এ বছর তাদের প্রায় ৩৩ হাজার বই দিয়েছি। ২০২১ সালে আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পদক প্রবর্তন করেছি। প্রতি দু’বছর পর পর এ পদক প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ভাষা গবেষকদের ফোলোলিশ ও বৃত্তি দিচ্ছি।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বেলায়েত হোসেন তালুকদার, বাংলাদেশে ইউনেস্কোর প্রতিনিধি ও হেড অব অফিস বিয়েট্রেস কালডুন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবোটিক্স অ্যান্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।