পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
১ মাস ১ দিন বন্ধ থাকার পর আগামীকাল থেকে খুলছে স্কুল (মাধ্যমিক)- মাদরাসা, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়। এদিন থেকে ফের শুরু হবে শ্রেণি কক্ষে পাঠদান। ফলে নতুন করে ঘরবন্দি জীবনের অবসান হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। ক্লাসে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন তারা। ফের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো মুখর হয়ে উঠবে। তবে যেসব শিক্ষার্থী দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন কেবল তারাই শ্রেণি কক্ষে উপস্থিত হয়ে ক্লাস করতে পারবেন। এক ডোজ টিকা নেয়া অথবা টিকা নেয়নি এমন শিক্ষার্থী যারা তাদেরকে বাসায় থেকে অনলাইনে বা টেলিভিশনে দেখে ক্লাস করতে হবে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমতে থাকায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাতে জাতীয় কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির বৈঠকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার বিষয়ে মত দেয়ার পর পরের দিন ১৭ ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ঘোষণা দেন। তবে এদিন মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হলেও প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো খুলবে আগামী ২ মার্চ। গতকাল রোববার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে এ তথ্য জানানো হয়। মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোহাম্মদ কামাল হোসেনের সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, দেশে করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ৩ ফেব্রুয়ারির নির্দেশনা মোতাবেক ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ১ মার্চ পর্যন্ত সব ধরনের সরকারি/বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্ডারগার্টেনে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান বন্ধ থাকবে। আগামী ২ মার্চ থেকে দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ও শ্রেণিকক্ষে পাঠদান কার্যক্রম চালুর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা গেল।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ঘোষণা দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ১ কোটি ২৮ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩৪ লাখ ৪০ হাজার ৪৪৮ জন ইতোমধ্যে কোভিড টিকার দুই ডোজ পেয়েছে। ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রায় সকলেই প্রথম ডোজ পেয়েছে। সেই সংখ্যা ১ কোটি ২৬ লাখ ৫৭ হাজার ২২২ জন। ২১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রায় সবার দুই ডোজ টিকা নেওয়া হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন দীপু মনি। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জানুয়ারিতে যে অবস্থায় শ্রেণিকক্ষে পাঠদান বন্ধ হয়েছে, সেই জায়গা থেকেই পাঠদান শুরু হবে। আমাদের ক্লাসের সংখ্যা যে রকম ছিল, আমরা এখন শুরু করব সেই জায়গায়। তারপরে আমরা চেষ্টা করব সেই সংখ্যাকে পরিস্থিতি সাপেক্ষে বাড়িয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার।
ফুল ফেজে কবে থেকে ক্লাস চালু হবে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যখন দুই ডোজ টিকা সবার হয়ে যাবে, তখন চেষ্টা করবো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যেতে। আমাদের হয়তো আরও অনেক দিন কোভিডের সঙ্গে বাস করতে হবে। সেক্ষেত্রে আমরা দুই ডোজ টিকা নেওয়া হয়ে গেলে মোটামুটি একটা স্বস্তির জায়গায় থাকতে পারবো। আশা করছি, খুব তাড়াতাড়ি সেই জায়গায় চলে যেতে পারবো।
করোনা মহামারীর কারণে দেড় বছর বন্ধ থাকার পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে সব স্কুল-কলেজ খুলে দিয়েছিল সরকার। পরে ধাপে ধাপে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও খুলেছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের দাপটে এ বছরের শুরু থেকে সংক্রমণ ফের বাড়তে শুরু করলে গত ২১ জানুয়ারি ফের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা আসে। এরপর ছুটি আবারও বাড়িয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়।
৬২ প্রতিষ্ঠানে নতুন সিলেবাস: কাল থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দিনে ৬২টি প্রতিষ্ঠানে নতুন কারিকুলামে পাঠদান শুরু হচ্ছে। শিক্ষাবিদরা জানান, শিক্ষা অর্জনে শিশু-কিশোরদের কোন আনন্দ নেই। শিক্ষাকে তাদের ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। ক্লাস-কোচিং-প্রাইভেট, একের পর এক পরীক্ষায় যেন তাদের নাভিশ্বাস উঠে। মুখস্থ করো, পাস করো, সনদ নাও এটিই এখন শিক্ষা ব্যবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখন কারাগার আর কোচিং সেন্টারগুলো কনডেম সেলে পরিণত হয়েছে শিক্ষার্থীদের জন্য। এর থেকে বের হয়ে আসার জন্য মুখস্থ নয়, আনন্দপূর্ণ শিক্ষা ও পাঠ্যক্রম প্রয়োজন। নতুন কারিকুলামে শিক্ষাকে আনন্দপূর্ণ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এনসিটিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়, শিক্ষার্থীদের মুখস্থ নির্ভর পড়াশুনা থেকে বের করে বুঝে পড়ার ধারা চালু করার জন্য জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা-২০২১ প্রণয়ন করা হয়েছে। ২০২৩ সালে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করার আগে ফেব্রুয়ারিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেই ৬২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাধ্যমিক স্তরে পাইলটিং করা হবে। এটা সফল হতে পারলে ২০২৩ সাল থেকে প্রাথমিকভাবে ষষ্ট, সপ্তম শ্রেণি থেকে বাস্তবায়ন করব। ২০২৪ সালে এসে অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে এটি বাস্তবায়িত হবে। সে হিসেবে ২০২৪ সাল থেকে মানবিক, বাণিজ্য ও বিজ্ঞান বিভাগ থাকছে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।