Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রভাবশালীদের চাপে শরীফকে চাকরিচ্যুত করা হয়নি

সংবাদ সম্মেলনে দুদক সচিবের দাবি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০০ এএম

কারো চাপে নয়, বরং কমিশনের নিয়ম ভাঙার কারণে কর্মকর্তা মো. শরীফ উদ্দিনকে অপসারণ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন দুদক সচিব মাহবুব হোসেন। এ বিষয়ে গণমাধ্যমও একতরফা খবর প্রচার করছে। গতকাল দুদকে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই কথা বলেন।
সচিব সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, দুর্নীতি দমন কমিশন কোনো প্রভাব আমলে নেয় না এবং প্রভাবিত হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয় না। কমিশনের অনুমোদন ছাড়া আপনি কাজ করছেন। কমিশনের কোনো নিয়ম মানবেন না। আমাদের চাকরি নিয়ম মানবেন না, কমিশন কেন আপনাকে রাখবে?
সচিব বলেন, শরীফ উদ্দিনকে অপসারণের আদেশ জারির পর থেকেই বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় বিষয়টি প্রচারিত হচ্ছে। মূলত একতরফা তথ্যের ভিত্তিতেই এই সংবাদ প্রচারিত হচ্ছে, যা প্রকৃত ঘটনার বিপরীত। অপসারণকৃত উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন দায়িত্ব পালনকালে, যেকোনো অভিযোগ অনুসন্ধান ও তদন্ত করে প্রতিবেদন দেবেন, এটাই স্বাভাবিক। গুরুত্বপূর্ণ বা কম গুরুত্বপূর্ণ যাই হোক না কেন, দুদকের অনুসন্ধান ও তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত সব কর্মচারীই নির্ভয়ে এবং নির্মোহভাবে দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু শরীফ উদ্দিনের মতো কোনো অজুহাত তারা উত্থাপন করেন না।
তিনি বলেন, তদন্ত অনুসন্ধান কাজ যারা করে থাকেন, একটা সেট রুল রয়েছে। বিজ্ঞ আদালতেরও নির্দেশনা আছে, একটা প্রসিডিউর রয়েছে, আমাদেরও বিধানে প্রসিডিউর রয়েছে। কমিশনের অনুমতি ছাড়াই ৩৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট শরিফ ফ্রিজ করেছেন। যদি কারো বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করে, আমরা তাকে ডাকবো।
সচিব বলেন, যদি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করতে হয়, কমিশনের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বিজ্ঞ স্পেশাল জর্জ আদালতের আদেশ নিতে হবে। তারপর করতে পারব। উনি এক সাথে ২৫টি লিখিতভাবে বন্ধ করে দিলেন, আটটি মৌখিকভাবে বন্ধ করে দিলেন। এই ক্ষমতা তাকে কে দিল? আপনি যদি সার্ভিস করেন, আপনাকে সার্ভিস রুলস মানতে হবে। আপনি নিজের মনগড়া কাজ করতে পারবেন না।
সচিব আরও বলেন, কর্মচারীদের অসদাচরণ ও অন্যান্য অপরাধের জন্য শৃঙ্খলা এবং আচরণবিধি রয়েছে। দুদক (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালার ৫৪(২) বিধিতে কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই অপসারণের বিধান রয়েছে। প্রতিষ্ঠানের প্রকৃতি অনুযায়ী দুদক ছাড়াও দেশের অন্য বহু দফতরে এরকম আইন ও বিধি বিদ্যমান। সেসব দফতর/প্রতিষ্ঠান শৃঙ্খলার স্বার্থে প্রয়োজনে তা প্রয়োগ করে।
তিনি আরো বলেন, আলোচ্য ৫৪(২) বিধি অত্যন্ত সীমিত ও অপরিহার্য ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়। কমিশন এও মনে করে যে, প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে বিভাগীয় ব্যবস্থার মাধ্যমে শান্তি প্রয়োগ করা উচিত। কিন্তু কমিশনের শৃঙ্খলা ও সুষ্ঠু কার্যক্রম পরিচালনার স্বার্থে শরীফ উদ্দিনকে ৫৪ (২) বিধিমতে অপসারণ করা হয়েছে। কমিশনের সভায় বিস্তারিত আলোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
মাহবুব হোসেন বলেন, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের কিছু মামলায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দুর্নীতি উদ্ঘাটনের কারণে তাদের প্রভাবে তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে এটা মোটেও সত্য নয়। বাস্তবতা বিবেচনায় কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে কর্মরত জেলা পর্যায়ের ব্যক্তিদের আর কতটুকুই বা প্রভাব থাকতে পারে!
তিনি বলেন, কমিশনের প্রায় সব অনুসন্ধান ও তদন্তকারী কর্মচারী চট্টগ্রাম বা কক্সবাজারের সংশ্লিষ্ট মামলায় উল্লিখিত অভিযুক্ত বা আসামিদের অপেক্ষা অনেক গুরুত্বপূর্ণ উঁচু পদ-পদবির ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন। আদালতে বিচারের পর তাদের সাজাও হয়েছে। কিন্তু তারা কেউ এ ধরনের অভিযোগ উত্থাপন করেননি। তাদের কারণে কমিশনকে এভাবে বিব্রত হতে হয় না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দুদক

২৫ জানুয়ারি, ২০২৩
৪ জানুয়ারি, ২০২৩
২৮ নভেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ