Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জীবন বাজি রেখে ৩০০ সিংহকে রক্ষা!

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৬:৩০ পিএম

গভীর অভয়ারণ্যের ‘শেরনি’ তিনি। প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই বন্যপ্রাণীদের বাঁচিয়ে চলেছেন। তিনি রসিলা ভাদের। ২০০৭ সালে বন দফতরের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন রসিলা। এরপরেই কাজ শুরু করেন। বন্যপ্রাণী উদ্ধারের কাজে যোগ দেওয়া প্রথম মহিলা কর্মী তিনি। এর আগে গাইডের কাজ করতেন।

আইএফএস অফিসার পারভিন কাসওয়ানের দাবি অনুযায়ী, ৩৬ বছর বয়সী রসিলা ভাদের এখনও পর্যন্ত হাজারেরও বেশি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ করেছেন তিনি। তার কথায়, ‘৩০০টি সিংহ, ৫০০টি লেপার্ড, কুমির এবং পাইথন উদ্ধার করেছেন রসিলা ভাদের। কুয়োয় পড়ে যাওয়া বন্যপ্রাণীদের উদ্ধার করেন তিনি। তাদের নিয়ন্ত্রণ করেন নিজ দক্ষতায়। জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে যখন তিনি হাঁটেন, তখন লায়ন কিংয়ের তুলনায় বেশি মনোবল দেখা যায় তার মধ্যে।’

রসিলার এই সাহসিকতার কাহিনী প্রকাশ্যে এনেছেন পারভিন। শেয়ার করেছেন সাহসিনীর নানা ছবিও। গুজরাটের বন দফতরের প্রথম মহিলা দলের অংশ ছিলেন রসিলা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ওই টিম গঠন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপর থেকেই বন্যপ্রাণীদের উদ্ধার করার পাশাপাশি তাদের যত্ন করার কাজ করেন রসিলা। গিরের বন্যপ্রানীদের পাচার করা আটকানোর কাজও দক্ষতার সঙ্গেই করে চলেছেন তিনি। সেই কারণেই তার কাজটি আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।

জানা গিয়েছে, ২০০৮ সালে রসিলা প্রথমবারের জন্য জঙ্গলে গিয়েছিলেন। জীবজন্তুদের আরও কাছাকাছি যেতে চেয়েছিলেন তিনি। যত্ন করতে চেয়েছিলেন। সেই কারণেই উদ্ধারকাজে সামিল হন। এখনও পর্যন্ত বহু জীবজন্তুকে মৃত্যুমুখ থেকে ফিরিয়ে এনেছেন তিনি।

বন্যপ্রানীদের উদ্ধারের কাজ যথেষ্ট শক্ত। তাছাড়া ওই কাজের নির্দিষ্ট কোনও সময় নেই। রসিলা তবু দক্ষতার সঙ্গেই ওই কাজ করছেন। পশুদের উদ্ধারের পরেই কাজ শেষ হয়ে যায় না। তাদের পোষ মানিয়ে ওষুধ লাগানো, খাবার খাওয়ানো, ইনজেকশন দেওয়ার মতো কাজ করতে হয়। যা দায়িত্ব নিয়েই করেন রসিলা। যথাসময়ে তাদের ওষুধ কিংবা খাবার খাওয়ানোর কাজ করেন তিনি।

উল্লেখ্য, উনিশ শতকের গোড়ার দিকে সিংহ শিকারের চল ছিল। ব্রিটিশরা এশিয়াটিক লায়ন শিকারে বেরতেন মাঝেমধ্যেই। যার জেরে ওই শতকের শেষদিকে ভারতে ১২টি সিংহ অবশিষ্ট ছিল। যার সবকটিই ছিল গির অভয়ারণ্যে। বিষয়টি জুনাগড়ের নবাবের নজরে আনেন ব্রিটিশ ভাইসরয়রা। এরপরেই তিনি নিজের ব্যক্তিগত হান্টিং গ্রাউন্ডকে স্যাংচুয়ারি বানিয়ে ফেলেন। সেই থেকে গির অভয়ারণ্যে সিংহদের লালনের কাজ চলে আসছে। গিরের জীববৈচিত্র্য দুর্দান্ত। সেখানে কুমির থেকে চিতাবাঘ সবই রয়েছে। তবে জঙ্গলেও নিরাপদ নয় বন্যপ্রাণীরা। কারণ, মাঝেমধ্যেই সেখানে হানা দেয় চোরাশিকারীরা। তাদের ফাঁদ থেকে জীবজন্তুদের বাঁচানোর কাজী করে চলেছেন রসিলারা। সূত্র: টিওআই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ