Inqilab Logo

শনিবার, ০১ জুন ২০২৪, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ওষুধ আনতে ফার্মেসীতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার প্রবাসীর স্ত্রী, অতঃপর খুন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৮:০০ পিএম | আপডেট : ১১:৫৯ পিএম, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে এক প্রবাসীর স্ত্রী শাহনাজ পারভীন জ্যোৎস্নাকে (৩৫) হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে সিআইডি গ্রেফতার করেছে রাজধানীর ভাটারা থেকে।বৃহস্পতিবার জগন্নাথপুর পৌর পয়েন্টের ব্যারিস্টার মির্জা আব্দুল মতিন মার্কেটের তালাবদ্ধ অভি মেডিকেল হল থেকে শাহনাজ পারভীন জ্যোৎস্নার খন্ডিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহতের ভাই হেলাল উদ্দিন বাদী হয়ে ১৭ ফেব্রুয়ারি জগন্নাথপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেফতাররা হলেন জিতেশ চন্দ্র গোপ (৩০), অনজিৎ চন্দ্র গোপ (৩৮) ও অসীত চন্দ্র গোপ (৩৬)। শনিবার দুপুরে এ বিষয়ে সিআইডির সদরদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়।সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর জানান, সউদি প্রবাসীর স্ত্রী শাহনাজ পারভীন জোৎস্না কিছুদিন ধরে স্ত্রীরোগে ভুগছিলেন। গোপন সমস্যার কথা স্থানীয় ফার্মেসি অভি মেডিকেল হলের মালিক জিতেশ চন্দ্র গোপকে জানালে তিনি তাকে ফার্মেসিতে যেতে বলেন।

এরপর ফার্মেসিতে গেলে পালাক্রমে ধর্ষণের শিকার হন শাহনাজ পারভীন। ধর্ষণের কথা সবাইকে জানিয়ে দেওয়ার কথা বললে তখন জিতেশসহ তিনজন তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে ফল কাটার ছুরি দিয়ে মরদেহ ছয় টুকরা করা হয়।মুক্তা ধর বলেন, ওষুধ কেনার সুবাদে অভি মেডিকেল হলের মালিক জিতেশের সঙ্গে শাহনাজ পারভীনের সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। ১৬ ফেব্রুয়ারি তার মায়ের প্রেশার মাপার জন্য তাদের বাড়িতে যান জিতেশ। তখন নিজের গোপন সমস্যার কথা জিতেশকে জানান তিনি।

সেদিন বিকেলে শাহনাজ পারভীন ফার্মেসিতে গেলে তাকে কাস্টমারের দোহাই দিয়ে অপেক্ষা করতে বলেন জিতেশ। রাত হয়ে এলে বাসায় যেতে চান শাহনাজ। কিন্তু জিতেশ তাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দিলে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েন। এরপর জিতেশ ও তার দুই সহযোগী অনজিৎ চন্দ্র গোপ ও অসীত গোপ শাহনাজ পারভীনকে ধর্ষণের পরিকল্পনা করেন। রাত গভীর হলে আশপাশের দোকান বন্ধ হয়ে যায়। তখন জিতেশ ও তার সহযোগীরা এনার্জি ড্রিংকস পান করে জোৎস্নাকে জোরপূর্বক সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের বিষয়টি শাহনাজ তার পরিবারকে জানিয়ে দেওয়ার কথা বলেন। এতে জিতেশ ও তার সহযোগীরা তার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে এবং মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।

সিআইডির বিশেষ এ পুলিশ সুপার বলেন, হত্যার পর ফল কাটার ছুরি দিয়ে শাহনাজের লাশ ছয় টুকরা করেন আসামিরা। এরপর দোকানে থাকা ওষুধের কার্টন দিয়ে খণ্ডিত অংশগুলো ঢেকে রেখে তারা ফার্মেসি তালা দিয়ে পালিয়ে যান।লাশের খণ্ডিত অংশ পাশের একটি মাছের খামারে ফেলে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন জিতেশ ও তার সহযোগীরা। কিন্তু ভোর হয়ে যাওয়ায় এবং লোকজন চলে আসায় তারা কাজটি সারতে পারেননি।

এ ঘটনার পর সিআইডির এলআইসি শাখার একাধিক দল আসামিদের গ্রেফতারের জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালায়। শুক্রবার রাজধানীর ভাটারা থানার নুরের চালা এলাকা থেকে জিতেশকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে জগন্নাথপুর থানার পৌর এলাকায় অভিযান চালিয়ে অনজিৎ ও অসীত গোপকে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয় সিআইডি।

প্রবাস জীবন বিভাগে সংবাদ পাঠানোর ঠিকানা
[email protected]



 

Show all comments
  • Saleh Ahmed ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১:০৬ এএম says : 0
    আমার কাছে মনে হল এই কৌশলটা সবাইকে শেখানো হচ্ছে। কিন্তু এর শাস্তিটা সবাইকে দেখানো হচ্ছে না। এই অপরাধের বিচার কবে শুরু হবে? বয়স26 হলো। বিচার দেখবো নাকি আরো অপরাধ দেখব?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ