বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ির কবলে শবে বরাত-৩
সুনানে ইবনে মাজায় বর্ণিত হয়েছে : হযরত আলী ইবনে আবু তালেব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
মুমিনের জীবনের সবচেয়ে বড় আরাধনা আল্লাহতায়ালার নৈকট্য অর্জন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের মহব্বত ও ভালোবাসার নেয়ামত। যারা সূরা ইখলাছ বেশি বেশি পাঠ করে তাদের প্রতি আল্লাহতায়ালা রহমতের দৃষ্টি দেন এবং তারা আল্লাহতায়ালার প্রিয়পাত্র হয়ে যান। এর চেয়ে বড় সৌভাগ্য আর কী হতে পারে! এর থেকে বড় অর্জন আর কী থাকতে পারে! আয়েশা (রা.) বলেন : নবী কারিম (সা.) জনৈক সাহাবীকে এক বাহিনীর আমীর নিযুক্ত করে যুদ্ধে প্রেরণ করেন। তিনি তাদের ইমামতি করতেন। যখনই কেরাত পড়া শেষ করতেন, সূরা ‘ক্বুল হুয়াল্লাহু আহাদ’ পড়তেন। ফিরে আসার পর তারা নবী (সা.) এর নিকট বিষয়টি আলোচনা করলেন।
তিনি বললেন : তাকে জিজ্ঞেস করো, কেন সে এমন করে? সাহাবায়ে কেরাম তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি জবাব দিয়েছেন, এই পূর্ণ সূরাটাই রহমানের ছিফাত ও গুণাবলির বিবরণ। তাই তা পড়তে আমি ভালোবাসি। নবী কারিম (সা.) তার জবাব শুনে সাহাবীদের বললেন : তাকে জানিয়ে দাও, আল্লাহও তাকে ভালোবাসেন। (সহিহ বোখারি : ৭৩৭৫)।
জান্নাতে যার জন্য অট্টালিকা নির্মিত হবে : ইট-পাথরের একটা ঘর নির্মাণের জন্য কত কষ্ট করতে হয়! কী পরিমাণ শ্রম ও চিন্তা করতে হয়! অথচ আমরা আরো কত সহজে আখেরাতে বিশাল বিশাল মহল ও প্রাসাদ তৈরি করতে পারি। যে মহলের একটা ইট রুপার, আরেকটা ইট স্বর্ণের। যার আস্তর অতি সুগন্ধময় মেশকের এবং জমিন সুরভিত হলুদ জাফরানের। আর কারুকার্য, সাজসরঞ্জাম এবং ভোগ-উপভোগের বিলাসপূর্ণ নেয়ামতরাজি কেমন, কী মানের ও কী পরিমাণে হবে তা তো একমাত্র আল্লাহতায়ালাই জানেন। আসুন কীভাবে জান্নাতে অধিকহারে সেই বালাখানা তৈরি করা যায় এর আমল জেনে নিই।
মুআয ইবনে আনাস জুহানী (রা.) বলেন, রাসূলে কারিম (সা.) বলেছেন : যে ব্যক্তি সূরা ‘ক্বুল হুয়াল্লাহু আহাদ’ দশবার পড়বে আল্লাহতায়ালা তার জন্য জান্নাতে একটি প্রাসাদ নির্মাণ করবেন। এ কথা শুনে ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) বললেন, তাহলে তো আমরা অনেক প্রাসাদের অধিকারী হয়ে যাব। (অর্থাৎ অধিক হারে এই সূরা পাঠ করব। ফলে আল্লাহ আমাদের অনেক প্রাসাদ দান করবেন।) রাসূলে কারিম (সা.) বললেন, আল্লাহতায়ালার দান আরো প্রশস্ত, আরো উৎকৃষ্ঠ। (মুসনাদে আহমাদ : ১৫৬১০)।
যার জানাজায় ৭০ হাজার ফেরেশতা শরীক হয়েছেন : হাদীস শরীফে এসেছে, মুআবিয়া ইবনে মুআবিয়া আলমুযানী আললাইছী (রা.) ইন্তেকাল করলে ৭০ হাজার ফেরেশতাসহ জিবরীল আলাইহিস সালাম নবীজির কাছে আগমন করেন। নবী কারিম (সা.) জিবরাইল আলাইহিস সালাম ও এইসব ফেরেশতাদের নিয়ে তার জানাজায় শরীক হন।
নামাজ শেষ হলে রাসূলে কারিম (সা.) জিজ্ঞেস করলেন : হে জিবরীল! কোন্ আমলের মাধ্যমে মুআবিয়া ইবনে মুআবিয়া মুযানী এই উচ্চ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হয়েছে? জিবরীল আলাইহিস সালাম জবাবে বলেছেন : এই মর্যাদা লাভের কারণ হল, সে দাঁড়িয়ে, বসে, হেঁটেহেঁটে, সওয়ারীতে তথা সর্বাবস্থায় সূরা ইখলাছ তিলাওয়াত করত। (মুজামে কাবীর ৮/১১৬ : ৭৫৩৭)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।