গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের অবৈধভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া সহ দুর্নীতির বিভিন্ন ঘটনা তদন্ত করে আলোচনায় আসা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপসহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণের প্রতিবাদে তোলপাড় চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এই অপসারণের প্রতিবাদে নজিরবিহীন মানববন্ধন করেন সহকর্মীরাও। বুধবার ঢাকায় দুদক কার্যালয়ের সামনে তারা মানববন্ধন করেন।
এই প্রথম দুদক কর্মকর্তারা কোন ঘটনায় প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করলেন। শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণের ঘটনা নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এদিকে দুর্নীতি বিরোধী বেসরকারি সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ বা টিআইবি এক বিবৃতিতে চাকরিচ্যুত কর্মকর্তার অভিযোগের তদন্ত চেয়েছে।
চাকরিচ্যুত হওয়া দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন দুদক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনেছেন। তিনি বলেছেন, বড় বড় কয়েকটি দুর্নীতির মামলার তদন্ত করে তিনি অনেক আমলা ও প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছিলেন। সেজন্য তিনি প্রভাবশালী মহলের রোষানলের শিকার হয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদকারীরা দুদকের কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে অপসারণের ঘটনায় ক্ষোভ ও তীব্র নিন্দা জানান।
চাকরি থেকে অপসারণের প্রতিবাদে ফেসবুকে আরিফুল ইসলাম রনি নামে একজন লিখেছেন, ‘‘বাংলাদেশের দুদকের কাজ হচ্ছে দূর্নীতিবাজদের সহায়তা করা। আর যারা এর বিরোধিতা করবে তাদের রুদ্ধ করে দেয়া। দুদকের নামের সাথে কাজের মিল রাখতে যারাই চেষ্টা করেছে তাদের হয় চাকরিচ্যুত না হয় প্রমোশনের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে।’’
তাওহীদ মোল্লা নামে একজন লিখেছেন, ‘‘আজ দেশের বিভিন্ন বিভাগে সততা নিয়ে চাকরী করা খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে দেখছি। সৎ থাকতে গিয়েও দুদক কর্মকর্তা/কর্মচারীদের রীতিমত যুদ্ধ করতে হচ্ছে। দেশের প্রতিটা সেক্টরে এমন হচ্ছে যা আমরা বর্তমান উপলদ্ধি করছি। সৎ থাকা খুবই কঠিন হচ্ছে সৎ কর্মকর্তা ও কর্মারীদের। বর্তমান অসৎ লোকের কাছে আমাদের রাষ্ট্রীয় ও সমাজ ব্যবস্থা বন্দী। এ থেকে বেরিয়ে আসতে হলে দরকার একটা নিরোপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকার, যে সরকার সব দূর্নীতি ঝেড়ে মুছে পরিষ্কার করে দিয়ে একটি সুন্দর বাসযোগ্য দেশ আমাদের উপহার দিবে।’’
ক্ষোভ জানিয়ে শাহাদাত চৌধুরী লিখেছেন, ‘‘নিশ্চয় কোন রাঘব বোয়াল এই দুদক কর্মকর্তার জালে আটক হওয়ার সম্ভবনা তৈয়ারী হয়েছিল।তাই তড়িঘড়ি করে চট্রগ্রাম থেকে বরিশাল,বরিশাল থেকে সরাসরি নিয়ম কানুন না মেনে শেষ অপারে চাকুরীচ্যুত করা,পপিকে রক্ষা করতে নিস্পাপকে কোরবানি দিল।ধন্যবদ সাংবিধানিক দায়িত্বরত প্রতিষ্ঠান দুদক।’’
রাসেল আহমেদের মন্তব্য, ‘‘কখনোই কোন সৎ লোক কে দেশে আর কোনো সর্বোচ্চ পর্যায়ে দেখতে চায়না ক্ষমতাসীনরা।। যে করেই হোক তারা তাদের কালো হাত ব্যবহার করে সৎ লোকদের সরিয়ে দেবে।। নয়তো তাদের অসৎ উদ্দেশ্য এবং কালো টাকার পাহাড় জনগণের সামনে উন্মোচিত হয়ে যাবে।। দুর্নীতি দমন কমিশনে দুর্নীতি যে আরও প্রকট আকার ধারণ করছে সেটাই প্রমাণ।’’
আব্দুল্লাহ আল মামুন লিখেছেন, ‘‘সততার পুরস্কার হিসেবে চাকরি হারিয়ে এখন গুম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন এই কর্মকর্তা!একের পর এক সততার পুরস্কারের নজীর স্থাপন হচ্ছে!আসলে এসব নিউজ দেখে নিজেকে খুবই অসহায় মনে হয় এবং মানসিক অসুস্থতাবোধ করি।’’
উল্লেখ্য, দুদক বলছে, ‘অব্যাহতভাবে চাকরিবিধি লঙ্ঘন করায়’ কমিশনের ‘ভাবমূর্তি রক্ষার স্বার্থে’ শরীফ উদ্দিনকে নোটিস ছাড়াই চাকরিচ্যুত করতে কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়েছে। বুধবার দুদক কার্যালয় থেকে শরীফকে অপসারণের প্রজ্ঞাপন জারি হয়। এর ১৬ দিন আগে ‘হত্যা ও চাকরি খাওয়ার হুমকি’ পাওয়ার কথা জানিয়ে চট্টগ্রামের খুলশী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন শরীফ।
এই আদেশ বাতিল করে কমিশনের কর্মকর্তাদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার অনুরোধ জানিয়ে বৃহস্পতিবার দুদক সচিব মো.মাহবুব হোসেনকে স্মারকলিপি দেন শরীফের সহকর্মীরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।