বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে বিভিন্ন পরামর্শ-মতামত দিয়ে সরব থাকা বেসরকারি সংস্থা সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজনকে একহাত নিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ইসি গঠন নিয়ে তারা দাদাগিরি করছে। শুক্রবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে ‘সমসাময়িক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট’ নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী সুজনের অবস্থান নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান।
নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করা সুজন সম্প্রতি দাবি জানায়, সার্চ কমিটির কাছে প্রস্তাবিত নির্বাচন কমিশনার হিসেবে যাদের নাম জমা পড়েছে সেগুলো প্রকাশের। একইসঙ্গে তারা প্রস্তাবকের নামও প্রকাশের দাবি জানিয়েছিল। সার্চ কমিটি ৩২২ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করে। নিয়ম অনুযায়ী, সেখান থেকে ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করে প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠাবে সার্চ কমিটি। সুজন দাবি করেছে, সেই ১০ জনের নামও আগেই প্রকাশ করতে হবে। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, সুজন এরা কারা- এটি একটি এনজিও। এই এনজিওর সারাদেশে কোনো শাখাও নেই, প্রশাখাও নেই। এটা কয়েকজন ব্যক্তিবিশেষের একটা এনজিও। বিভিন্ন সংস্থা থেকে তারা তহবিল সংগ্রহ করে চলে, এমনকি নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকেও তারা একসময় তহবিল নিয়েছে। তারা কখনও নির্বাচন করে না, করবেও না। তারা যেভাবে পরামর্শ দিচ্ছে, তাদের এত দাদাগিরি কেন? আর গণমাধ্যমও কেন এটি ফলাও করে প্রকাশ করে- সেটিও আমার প্রশ্ন। তিনি বলেন, যেভাবে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে এবং অংশগ্রহণমূলকভাবে এবার নির্বাচন কমিশন গঠন করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, সেটি বহু বছরের, কয়েক’শ বছরের গণতন্ত্রের দেশে, এমনকি ভারতে ৭৫ বছরের পুরনো গণতন্ত্র-সেখানেও এভাবে হয় না। এখানে সবার সঙ্গে বসা হয়েছে। সাংবাদিকেদের বিভিন্ন ফোরাম সুজনে, যারা টকশো করেন, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, রাজনৈতিক দল- সবার সঙ্গে বসা হয়েছে। বিএনপি ঘরানার বুদ্ধিজীবীরাও গিয়েছিলেন। সবাই নাম দিয়েছেন এবং সেগুলো প্রকাশ করা হয়েছে। ১০ জনের নাম প্রকাশের বিষয় নিয়ে তিনি বলেন, সার্চ কমিটি ১০ জন সিলেক্ট করবেন, আইনবলে এটি তাদের ক্ষমতা। সেটি প্রকাশ করবে কী করবে না সেটি একান্তই সার্চ কমিটির বিষয়। সেটি বলার সুজন কে? সুজন কি নির্বাচন করে? সুজন কি নির্বাচনের ক্ষেত্রে স্টেকহোল্ডার?’ নির্বাচনকালীন সব দল নিয়ে সরকার গঠনের দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারই হবে নির্বাচনকালীন সরকার। গত নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে যারা সরকারের দায়িত্ব পালন করছে, সেই সরকারই নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে নির্বাচনের সময়ে রুটিন দায়িত্ব পালন করবে। নির্বাচন কখনোই নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে হয় না। নির্বাচন হয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে। নির্বাচনকালীন সরকারের কোনো মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রীরও একজন কনস্টেবল পর্যন্ত বদলি করার ক্ষমতা থাকে না। তখন শুধুমাত্র রুটিন কাজ করতে হয়। দেশের ষাটোর্দ্ধ সকল নাগরিককে পেনশন দেওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন সবার জন্য পেনশন চালু করবেন। সেই লক্ষ্যে দেশের ষাটোর্দ্ধ সকল নাগরিক যাতে পেনশনের আওতায় আসেন, সেজন্য প্রধানমন্ত্রী আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছেন। ষাটোর্দ্ধ সবাই পেনশনের আওতায় আসবেন, এমনকি যারা বিদেশে আছেন তারাও পেনশনের আওতায় আসবেন। ১০০ ‘ভূইফোঁড় সংবাদপত্র চিহ্নিত করে বন্ধ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশে এখন সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে টেলিভিশন চ্যানেলের সংখ্যা ৪০টি। দৈনিক পত্রিকার সংখ্যা সাড়ে বারশ’র বেশি। তবে আমরা ভূইফোঁড় পত্রিকাগুলোকে চিহ্নিত করে ডিক্লারেশন বাতিল করছি। যেসব পত্রিকা শুধু বিজ্ঞাপন পেলে বের হয়, যেগুলোর মালিক যিনি তিনিই সম্পাদক, তিনিই প্রকাশক, তিনিই বিল কালেক্টর, বাজারে পাওয়া যায় না- এসব পত্রিকা চিহ্নিত করে আমরা ডিক্লারেশন বাতিল করেছি। ইতোমধ্যে চিহ্নিত করা ১০০ পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম এবং নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।