গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
বাংলাদেশ জাসদ সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া অভিযোগ করেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন আওয়ামী লীগ ভণ্ডুল করে ফেলেছে। রাজধানীর তোপখানা রোডে শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে শহীদ কাজী আরেফ আহমেদসহ জাসদের ৫ নেতা হত্যার ২৩তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণ সভায় তিনি এ অভিযোগ করেন।
শরীফ নুরুল আম্বিয়া বুধবার বলেন, কাজী আরেফ আহমেদ কর্মঠ লোক ছিলেন, যা বিশ্বাস করতেন তাই উনি করে ছাড়তেন। কলেজ জীবনে উনি বাংলার স্বাধীনতা অর্জনের জন্য নিউক্লিয়াসের সঙ্গে জড়িত হন এবং তিন সদস্য বিশিষ্ট নিউক্লিয়াসের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। মানচিত্র খচিত বাংলাদেশের পতাকা তৈরি করা, ছাত্রলীগকে স্বাধীনতার পক্ষে দৃঢ়তার সঙ্গে গড়ে তোলার জন্য তার অবদান অপরিসীম। মুক্তিযুদ্ধে তিনি মুজিব বাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান ছিলেন। তিনি মনেপ্রাণে অসাম্প্রদায়িক ছিলেন।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর সরকারের বিভ্রান্তিকর ভূমিকা, বঙ্গবন্ধু হত্যা ষড়যন্ত্র এবং তার পরে সামরিক শাসকদের অধীনে পর্যায়ক্রমে চিহ্নিত স্বাধীনতা বিরোধীদের রাজনীতিতে পুনর্বাসন কাজী আরেফের মন বিক্ষুব্ধ করে তুলেছিল। উনি ক্ষমতালোভী আওয়ামী লীগ ও বিএনপির রাজাকার-বান্ধব রাজনীতির বাইরে থেকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে সামাজিক আন্দোলনের সূচনা করেন। এই আন্দোলন জোরদার করতে রাজনৈতিক দলসমূহকে সম্পৃক্ত করেন। বাংলাদেশ জাসদ সভাপতি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও ৭১ এর ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কৌশলগত ঐক্য গড়ে তুলে গণআদালতে কুখ্যাত গোলাম আজমের বিচারের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ওই সময় খুব কম মানুষ বিশ্বাস করতেন এই বিচার সম্ভব হবে। তার এই উদ্যোগে প্রয়াত আব্দুর রাজ্জাক, কর্নেল নুরুজ্জামানসহ আরও বিশিষ্টজন বিশেষ সহায়তা করেন, যে আন্দোলনে শহীদ জননী জাহানারা ইমাম নেতৃত্ব দেন। এই আন্দোলন যুদ্ধাপরাধী বিচারের পক্ষে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলেছিল। এ জন্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সফল হয়েছিল।
তিনি বলেন, কাজী আরেফ রাজাকার ও মুক্তিযোদ্ধাদের ঐক্যে বিশ্বাস করতেন না, যা বিএনপি বিশ্বাস করত এবং যা আওয়ামী লীগ পাশ কাটিয়ে চলার চেষ্টা করেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের লক্ষে তাই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হলেও আদর্শগত ভাবে দুর্বল, ক্ষমতা ও বিত্ত বৈভবের প্রতি সীমাহীন লালসা আওয়ামী লীগকে লক্ষ্যচ্যুত করে ফেলেছে। আজকের আওয়ামী লীগ ও ক্ষমতাসীন সরকার দুর্নীতি, লুন্ঠনতন্ত্র ও অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়েছে, ভোট চুরি ও কর্তৃত্ব পরায়ন শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে কাজী আরেফের স্বপ্ন নস্যাৎ করে দিয়েছে। শরীফ নুরুল আম্বিয়া বলেন, আওয়ামী লীগের বিকল্প হিসেবে সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের শক্তির উত্থান আজ অপরিহার্য। তার জন্য সকল দেশ প্রেমিক প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক শক্তি সমূহকে মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আর সেই ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক শক্তিই পারে শহীদ কাজী আরেফ আহমেদ, লোকমান হোসেন, ইয়াকুব আলী, ইসরায়েল হোসেন ও শমশের মণ্ডলদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করতে।
দলটির সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্মরণ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য, ডাকসুর সাবেক জিএস ডা. মুশতাক হোসেন, তারুণ্যের কবি মোহন রায়হান, বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক জোটের সাধারণ সম্পাদক বাদল খান, ৯০ এর গন-অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফী আহমেদ, বাংলাদেশ জাসদ স্থায়ী কমিটির সদস্য করিম সিকদার, মনজুর আহমেদ মনজু, নাসিরুল হক নোয়াব, আনোয়ারুল ইসলাম বাবু, বাংলাদেশ জাসদ কেন্দ্রী সাংগঠনিক সম্পাদক ভানু রমজন চক্রবর্তী, বাংলাদেশ জাসদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবদুস সালাম খোকন, মহানগর পূর্বের সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহম্মদ, জাতীয় যুবজোটে ঢাকা মহানগর সভাপতি ফারুক হোসেন চঞ্চল, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বিসিএলের সভাপতি গৌতম শীল। সভা সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ জাসদের সাংগঠনিক সম্পাদক হোছাইন আহমেদ তফছির।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।