বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, বর্তমান সঙ্কটের সমাধানে সরকারকে পদত্যাগ করে অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। নতুন এই রাজনৈতিক ব্যবস্থাই হবে সঙ্কট উত্তোরণের একমাত্র উপায়। আর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনে তত্ত¡াবধায়ক সরকারের মডেল বিবেচনায় নেয়া যেতে পারে।
রাজধানীর হাতিরপুলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গতকাল ‘রাজনৈতিক সংকট উত্তরণের রূপরেখা ও করণীয় : সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা ও নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনের বৃহত্তর ঐক্য’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
জোনায়েদ সাকি উল্লেখ করেন, অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের কাজ হবে তিনটি। এগুলো হলো, রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন, একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি এবং ইভিএম ব্যবস্থা বাতিল করে স্বচ্ছ ব্যালট পেপারে ভোট গ্রহণের ব্যবস্থা করা। রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর, অর্থ্যাৎ জবাবদিহিপূর্ণ ও ভারসাম্যপূর্ণ গণতান্ত্রিক ক্ষমতা কাঠামো নির্মাণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক সংস্কারের জন্য জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করা, যাতে পরবর্তী গ্রহণযোগ্য সংসদে এই সংস্কার সম্পন্ন করা যায়।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী বলেন, আগামী ৩টি জাতীয় নির্বাচন এই রকম অন্তর্র্বতী সরকারের অধীনে অনুষ্ঠানে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি, যাতে করে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আস্থা থাকে এবং কার্যকর প্রতিষ্ঠান তৈরি হওয়ার প্রয়োজনীয় সময় মেলে। এক্ষেত্রে অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের কাঠামো প্রশ্নে ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমের তত্ত¡াবধায়ক সরকারের মডেল বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে।
সাকি বলেন, এই সরকার এমন নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী যে, এই সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন তৈরিতে যে আইনই বানানো হোক তা থোর বড়ি খাড়া, খাড়া বড়ি থোর হতে বাধ্য। যে সংসদ নিজেই জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়, তা আইন করে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেবে এটা নিতান্তই কষ্টকল্পনা। সরকার আগামী নির্বাচনও তার ২০১৪, ২০১৮ নির্বাচনের ছকেই করতে চায়। কাজেই এই সরকারের পদত্যাগের মাধ্যমে রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে গঠিত একটি অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের অধীনেই কেবল গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে সক্ষম নির্বাচন কমিশন গঠিত হতে পারে।
তিনি বলেন, বলাই বাহুল্য যে বর্তমান সরকার এইসব করণীয় বাস্তবায়নে ন্যূনতম আগ্রহী নয় যদিও বিরোধী দলে থাকার সময় তারাও নানা সংস্কার কর্মসূচি নিয়ে আন্দোলনে থেকেছে। ফলে স্পষ্টতই আন্দোলনের মাধ্যমেই সরকারকে বাধ্য করার ঐতিহাসিক পথেই জনগণকে যেতে হবে। আমরা মনে করি ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে বর্তমান সরকার দেশের সকল নাগরিককে এক কাতারে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। আর সে কারণেই ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং তার জন্য প্রয়োজনীয় কার্যকর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার লক্ষ্যে রাজপথে বৃহত্তর সংগ্রাম, এক ব্যাপক গণউত্থান অপরিহার্য। তার জন্য প্রয়োজন এক বৃহত্তর ঐক্য। আমরা মনে করি সাধারণ লক্ষ্যে যার যার অবস্থাান থেকে, যৌথভাবে এবং যুগপৎভাবে রাজপথের সংগ্রামেই এই বৃহত্তর ঐক্যের নতুন সমীকরণ তৈরি হতে পারে। আমরা মনে করি এই পথেই জনগণের বৃহত্তর সংগ্রামের মাধ্যমে আমরা এক নতুন বাংলাদেশ, জনগণের বাংলাদেশের সূচনা ঘটাতে পারি। সংকট যেমন ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিতে পারে তেমনি তা তৈরি করে নতুন সম্ভাবনা। আর বর্তমান সঙ্কট নতুন যে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের সম্ভাবনা আমাদের সামনে হাজির করছে তাকে এগিয়ে নিয়ে যাবার আহবান আমরা আপনাদের মাধ্যমে সকল দেশবাসীর প্রতি রাখছি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উত্থাপন করেন দলের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন পার্টির প্রধান সমন্বয়কসহ রাজনৈকি পরিষদের সদস্য ফিরোজ আহমেদ তাসলিমা আখতার। উপস্থিাত ছিলেন মনির উদ্দীন পাপ্পু, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভ‚ঁইয়া, ফাল্গুনী সরকার, দীপক রায়, আলিফ দেওয়ান, মিজানুর রহমানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। সঞ্চালনা করেন সম্পাদকমন্ডলীল সদস্য জুলহাসনাইন বাবু।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।