প্রাক্তন প্রেমিকের নির্যাতনের শিকার অভিনেত্রী
মালায়ালাম সিনেমার অভিনেত্রী আনিকা বিক্রমন। প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাই তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ
ডিলান হাসান : চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাসের সহিত বিবাহ-সাদী সংক্রান্ত বিষয়াদি লইয়া চিত্রনায়ক শাকিব বেশ বিপাকে ও বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হইয়াছেন বলিয়া বোধ হইতেছে। অপু বিশ্বাস যেভাবেই দাবী করিয়া থাকুক না কেন, উহার সহিত শাকিবের কবে, কোথায়, কিভাবে বিবাহ হইয়াছে, উহার বিস্তারিত বিবরণ ইতোমধ্যে পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হইয়াছে। দীর্ঘদিনের জুটির একজন যদি দাবী করিয়া বসে উহার পার্টনারের সহিত বিবাহ হইয়াছে, তাহা হইলে উহা অবিশ্বাস করা কঠিন হইয়া পড়ে। অবস্থা এখন এই অবস্থায় উপনীত হইয়াছে, স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টি শাকিবের জন্য বেশ চিন্তার কারণ হইয়া উঠিয়াছে। অপুর সহিত তাহার বিবাহ লইয়া যতই না না করুন না কেন, উহা এখন আর কাহারো নিকট বিশ্বাসযোগ্য হইতেছে না। বিশ্বাস না হইবার কারণ হইল, উহাদের মধ্যে প্রেম-বিবাহ লইয়া বহু বছর ধরিয়াই কানাঘুষা চলিয়া আসিতেছে। ইহা লইয়া শাকিব বা অপু কেউই জোরালো কোনো বাদ-প্রতিবাদ করেন নাই। বিষয়টি অনেকটা অলিখিতই রহিয়া যায়। অপু যখন স্বেচ্ছায় অন্তর্ধান করিয়া ঘোষণা করিলেন তাহার সহিত শাকিবের বিবাহ হইয়াছে এবং তাহাকে স্ত্রীর মর্যাদা দেওয়া হইতেছে না বলিয়া অভিযোগ তুলিয়াছেন, তখন বিষয়টি অনেকের কাছেই অলিখিত হইতে লিখিত বলিয়া মনে হইতেছে। বিষয়টি অনেকটা যেন ধর্মের কল বাতাসে নড়িয়া উঠিবার মতোই ঠেকিতেছে। উহাদের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র দাবি করিয়াছে, যৌথ প্রযোজনার সিনেমায় শাকিবের বিপরীতে অপুকে না নেওয়ায় এবং ২০০৮ সালে বিবাহ করিবার পরও স্ত্রী হিসেবে সামাজিক স্বীকৃতি না দেওয়ায় অপু শাকিবের উপর রাগ করিয় ভারত চলিয়া যান। মাস কয়েক ধরিয় অপু ও তার আত্মীয় পরিচয়দানকারী ব্যক্তিরা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ফোন করিয় বিবাহের খবরটি জানাইলে শাকিব নাকি অপুর সহিত দেখা করিতে কলকাতায় ছুটিয়া যান। সেখানে অপু তাহাকে নাকি দুইটি শর্ত দিয়া বলিয়াছেন নবাগত নায়িকা বুবলির সহিত অভিনয় করিতে পারিবে না এবং অপুকে স্ত্রী বলিয়া সবার সামনে স্বীকার করিতে হইবে। অপুর শর্ত মানিয়া শাকিব নাকি ‘প্রিয়া রে’ ও ‘আমার প্রতিজ্ঞা’ সিনেমা দুইটি থেকে বুবলির বাদ পড়ার পেছনে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করেন। তবে নিজের ক্যারিয়ারের দোহাই দিয়া বাকি শর্ত তুলিয়া নিতে শাকিব এখনো অপুকে বোঝানোর চেষ্টা করিয়া চলিয়াছেন। অপুর সহিত বিবাহ হয় নাই এমন কথার স্বপক্ষে যুক্তি দেখাইয়া শাকিব বলিয়া চলিয়াছেন, এইসব কথার কোনোই সত্যতা নাই। এমনকি কথাগুলো অপু বলিয়াছেন উহার প্রমাণও কেহই দিতে পারে নাই। অপুর ভয়েস রেকর্ড বা অন্য কোনো প্রমাণ দেখাইতে পারিলেই কেবল বিবাহ করিয়াছি কি করি নাই উহা লইয়া মন্তব্য করিব। শকিব অনুযোগ এবং অনেকটা অভিমান করিয়াই বলিয়াছেন, জনপ্রিয় একটি জুটিকে নষ্ট করিতে এইসব গুজব ছড়ানো হইতেছে। তাহারা আমার ও অপুর ভালো চায় না। বুঝিতে অসুবিধা হইতেছে না, শাকিব বিষয়টি লইয়া বেশ বেকায়দায় পড়িয়াছেন। শ্যাম রাখি না কূল রাখি-এমন এক বিষম পরিস্থিতি তাহাকে অতিক্রম করিতে হইতেছে। তবে কোনো দিন যদি অপু শাকিবের সকল অনুরোধ উপেক্ষা করিয়া এবং অবির্ভূত হইয়া সর্বসম্মুখে বলিয়া বসেন, শাকিবের সহিত আমার বিবাহ হইয়াছে এবং উহা স্ত্রীর মর্যাদা দেয় নাই বলিয়া অভিমানে অন্তর্ধানে চলিয়া গিয়াছিলাম, তখন যে বেশ উপভোগ্য একটি বিষয়ের অবতারণা হইবে, উহাতে সন্দেহ নাই। শাকিব উহার কী জবাব দিবেন, উহাও দেখিবার বিষয় হইয়া দাঁড়াইবে। প্রশ্ন হইতেছে, উহাদের মধ্যে বিবাহ যদি হইয়া থাকে, তাহা হইলে স্বীকার করিতে অসুবিধা কোথায়? এমন তো নয় যে, শাকিবের ক্যারিয়ার প্রারম্ভে রহিয়াছে এবং তরতর করিয়া আগাইয়া যাইতেছে। সকলেই জানেন, শাকিবের ক্যারিয়ার পাকিয়া এখন ঝরিয়া পড়িবার উপক্রম হইয়াছে। এক্ষণে বিবাহের সংবাদ প্রকাশিত হইলে বা স্বীকার করিলেই কী আর না করিলেই কী! বরঞ্চ উহাদের বিবাহের সংবাদ সকলেই সানন্দে মানিয়া লইবে। পর্দার জনপ্রিয় জুটি বাস্তবের জুটি হিসেবে দেখিয়া আনন্দে আত্মহারা হইবে। বিবাহের পরও উহারা বিশেষ করিয়া শাকিবের অভিনয় করিতে খুব বেশি অসুবিধা হইবে বলিয়া মনে হয় না। যাহাই হউক, যতক্ষণ না পর্যন্ত অপু আবির্ভূত হইয়া বলিবেন বিবাহ হইয়াছে কি হয় নাই, ততক্ষণ পর্যন্ত এই তর্ক-বিতর্কের অবসান হইবে না। এক্ষণে নতুন করিয়া সংবাদ প্রকাশিত হইয়াছে, অপু নাকি ভারতের শিলিগুড়িতে অবস্থান করিতেছেন। সন্তানের মাতাও নাকি হতে যাচ্ছেন। অবাক হইবার বিষয় হইতেছে যে, তিনি নাকি এ লইয়া দ্বিতীয়বারের মতো সন্তানের মাতা হইতেছেন। কী বিস্ময়কর ব্যাপার! অপু ও শাকিবের ঘনিষ্টজনদের কথায় এই তথ্য উঠিয়া আসিয়াছে যে, ২০০৮ সালে উহাদের বিবাহ হইবার পর ২০১২ সালে তাহাদের এক কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। সন্তানটি নাকি বগুড়ায় অপুর মায়ের কাছে বড় হচ্ছে। কেউ জিজ্ঞাসা করিলে বলা হইয়া থাকে উহা অপুর বোনের মেয়ে। ইহার সপক্ষে যুক্তি হিসাবে অপু-শাকিবের ঘনিষ্ঠজনরা বলেন, ২০১২ সালে সন্তান জন্মদানের সময় অপু প্রায় দেড় বছর বিরতি দিয়েছিলেন। তখন তিনি বলিয়াছিলেন, নিজেকে নতুন রূপে হাজির করিবার জন্য এই বিরতি লইয়াছেন। তাহাদের ঘনিষ্ঠজনদের এই যুক্তি একেবারে উড়াইয়া দেওয়া যায় না। প্রশ্ন হইতাছে, বিবাহ-সাদী, সন্তান জন্মদান অস্বীকার করিবার কী আছে? এক সময় না এক সময়, বিবাহ করা এবং সন্তানের পিতা-মাতা হইতে হইবে। বিবাহ না করিলে বা চিরকুমার থাকিলে, ভিন্ন কথা। যদি অপু ও শাকিব বিবাহ এবং সন্তানের পিতা-মাতা হইয়া থাকেন তবে উহা লইয়া লুকোচুরি খেলিবার কোনো কারণ থাকিতে পারে না। কারণ সত্য কখনো গোপন থাকে না। উহা আগুনের মতো। যতই চাপা দেওয়া হউক না কেন, জ্বলিয়া-পুড়িয়া বাহির হইবেই। তখন তাহা ঠেকানো কঠিন কাজ হইয়া পড়ে। আর অসত্য হইলে তাহা গুঞ্জরিত হইয়া এক সময় হাওয়ায় মিলাইয়া যাইবে। বোধ করি, এই সত্য এবং অসত্যর মাঝখানে পড়িয়া শাকিব এখন খাবি খাইতেছেন। এক ধরনের ফাঁদ এবং শনির দশায় নিপতিত হইয়াছেন। ইহা কাম্য হইতে পারে না। আমরা এইটুকুই আশা করিতে পারি, সত্য-অসত্য যাহাই হউক শাকিব ও অপু বিষয়টি লইয়া সরাসরি কথা বলিয়া সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটাইবেন। শনির দশা কাটাইয়া একটি সুন্দর পরিণতির মাধ্যমে উহাদের মধ্যে শান্তি বিরাজ করিবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।