গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সাংবাদিক নেতারা। তারই অংশ হিসেবে সাংবাদিক আজহার মাহমুদকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসময় তারা সাংবাদিক আজহার মাহমুদকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার জোর দাবি জানান। আজ বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এ দাবি করেন।
সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, কালো আইনের কারণে সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীকে দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। একইভাবে সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদকে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। বিএফইউজে'র সভাপতি এম আবদুল্লাহ'র সভাপতিত্বে ও ডিইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম দিদারের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- বিএফইউজের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, বর্তমান মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাকের হোসাইন ও জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, বিএফইউজের সহ-সভাপতি মোদাব্বের হোসেন, ডিইউজের সহ-সভাপতি শাহীন হাসনাত ও রাশেদুল হক, বিএফইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক খুরশীদ আলম, ডিইউজে'র জনকল্যাণ সম্পাদক দেওয়ান মাসুদা সুলতানা, দফতর সম্পাদক ডি এম আমিরুল ইসলাম অমর, নির্বাহী সদস্য জেসমিন জুঁই, সাব এডিটর কাউন্সিলের প্রচার সম্পাদক লাবিন রহমান প্রমুখ।
নেতারা বলেন, সরকার নিজের সকল অপরাধ ডাকতেই এখন সাংবাদিক কে তাদের প্রতিপক্ষ মনে করছে তাই কালো আইন করে সাংবাদিক উপর জুলুম নিযার্তন করছে। এছাড়া সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন- ডিআরইউ'র সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, নির্বাহী সদস্য রফিক মোহাম্মদ প্রমুখ। বিএফইউজে'র সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ বলেন, আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, ডিজিটাল আইনে সাংবাদিক গ্রেপ্তার করা হবে না। তারপরও একের পর এক সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। দেশে মুক্ত সাংবাদিকতার বড় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। তাই আমরা আজ এই সমাবেশ থেকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের জোর দাবি জানাচ্ছি। তা নাহলে এ আইনের ফল আপনাদেরও ভোগ করতে হবে। তিনি আরো বলেন, এই সরকার আর ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। জনগণ জেগে উঠেছে। আন্তর্জাতিক মহলও এই সরকারের অপকর্মের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে। এসময় তিনি অবিলম্বে আজহার মাহমুদকে মুক্তি দেয়ার জোর দাবি জানান।
বিএফইউজে'র সভাপতি এম আবদুল্লাহ বলেন, সরকার একের পর এক সাহসী সাংবাদিকদের গ্রেফতার করে কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করছে। এরই অংশ হিসেবে আজহার মাহমুদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং এক সপ্তাহের মধ্যে মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি রহুল আমিন গাজী প্রায় দেড় বছরযাবৎ কারাগারে বন্দী। তিনি অনেক অসুস্থ্য। তিনি চিকিৎসাও পাচ্ছেন না। আমরা অবিলম্বে তারও মুক্তি দাবি করছি।
বিএফইউজে'র মহাসচিব নুরুল আমিন বলেন, সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করতেই সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার করছে। আজহার মাহমুদ তারই শিকার। অবিলম্বে আজহার মাহমুদকে মুক্তি দিন তানাহলে সাংবাদিক সমাজ কঠোর জবাব দিবে।
বিএফইউজের মহাসচিব এম এ আজিজ বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এখন পর্যন্ত দেশে নয়শত মামলা হয়েছে। এরমধ্যে আটশত মামলা সাংবাদিকদের নামে। সরকার দলীয় মন্ত্রী থেকে শুরু করে তার দলের কর্মীদের করা এসব মামলায় অনেক সাংবাদিক কারাগারে আছেন।
ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী বলেন, রুহুল আমিন গাজীকে যে আইনে গ্রেপ্তার রাখা হয়েছে, ওই আইনে একই মামলায় অনেক আসামি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। অথচ অন্যায়ভাবে রুহুল আমিন গাজীকে কারাবন্দী করে রাখা হয়েছে। তার অপরাধ ছিল তিনি সাংবাদিকদের ন্যায্য দাবির পক্ষে অবস্থান নিয়ে কথা বলতেন। এবার আজহার মাহমুদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
ডিইউজে'র সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, সরকার সৎ ও সাহসী সাংবাদিকদের ভয় পায়। এজন্যই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দিয়ে কণ্ঠরোধ করে ক্ষমতায় টিকে আছে। কিন্তু এভাবে সরকারের শেষ রক্ষা হবে না। কাজেই অবিলম্বে রুহুল আমিন গাজী ও আজহার মাহমুদসহ সকল কারাবন্দী সাংবাদিকদের মুক্তি দিন।
ডিআরইউ'র সাবেক সভাপতি মুরসালিন নোমানী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করার সময় সাংবাদিকরা এর প্রতিবাদ করলে আইনমন্ত্রী তখন বলেছিলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় কোন প্রকার বাধা সৃষ্টি করবে না। তবে সাংবাদিক আজহারকে গ্রেফতারের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে এটা সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করা আইন।
গ্রেপ্তার আজহার মাহমুদের বড় ভাই তার মুক্তি দাবি করে বলেন, আজহার নির্ভীক, সাহসিকতা ও অসত্য প্রকাশ্যের সাংবাদিকতা করে বলেই সে আইনের ভয় পায়নি, আদালতে আত্মসমর্পণ করেছে। প্রসঙ্গত, আজহার মাহমুদ ডিআরইউ'র সিনিয়র সদস্য ও ক্র্যাব'র সাবেক সাধারণ সম্পাদক। দিনাজপুর হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠায়। বর্তমানে তিনি দিনাজপুর কারাগারে বন্দী আছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।